Main Menu

আলোর প্রত্যাশায় সিলেটে একুশের আলোকে নাট্য প্রদর্শনীর উদ্বোধন

অন্ধকার দূর করে আলোর প্রত্যাশায় সিলেটে শুরু হয়েছে একুশের আলোকে নাট্য প্রদর্শনী। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টায় সিলেটের কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে আলোক প্রজ্বলনের মধ্যদিয়ে নাট্য প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন কবি শুভেন্দু ইমাম। এর আগে আলোচনাপর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। আর বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী দেবোজিৎ সিনহা, নাট্য পরিষদেও প্রধান পরিচালক ারিন্দম দত্ত চন্দন।

সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এ দেশেকে বার বার অন্ধকার ঘ্রাস করতে চেয়েছে। কিন্তু সকল অন্ধকারের বিরুদ্ধে মশাল হাতে মানুষকে আলো দিতে কাজ করেছেন সংস্কৃতি কর্মীরা। যার প্রমাণ মিলেছে করোনা মহামারির সময়ে। বিশ্বের মত দেশ যখন করোনায় টালমাটাল সংস্কৃতি কর্মীরা তখন মানুষের সেবায় মগ্ন। করোনার ভয় উপেক্ষা করে কাজ করেছেন মানুষের জন্য। তাই সিলেটের সংস্কৃতি কর্মীদের কাছে সিলেটবাসী কৃতজ্ঞ।

এসময় সম্মিলিত নাট্য পরিষদের পক্ষ থেকে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সারদা হল উন্মুক্ত করে সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হলে এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা যে দাবি করেছেন তা যৌক্তিক। আমি চেষ্টা করব দ্রুত সময়ের মধ্যে পুরো সারদাহল উন্মুক্ত করে এবং এর পাশের পীর হাবিবুর রহমান পাঠাগারকে সুন্দর করে সংস্কারের মাধ্যে সুরমা নদীর পাড় ঘিরে একটি সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল গড়ে তুলতে।

মেয়র ক্বীন ব্রিজের পাশে নির্মিত জালালাবাদ পার্কটিকেও আরো ভালো পরিকল্পনার মাধ্যমে উন্মুক্ত করে কি করে সাংস্কৃতিক কাজে লাগানো যায় সে ব্যাপারেও চিন্তা করা হবে।

এদিকে বিগত ৩৬ বছর যাবৎ নিয়মিত এই আয়োজনে প্রতি বছর উদ্বোধনী দিন সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য গুণীজন সম্মাননা প্রদান করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও সংস্কৃতি ও নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য দুই জন গুনি ব্যক্তিকে নাট্য পরিষদ সম্মাননা প্রদান করা করে।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের সাথে সম্পৃক্ত থেকে এবং স্বাধীনুা পরবর্তীতে এখন পর্যন্ত সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য এবার সংগীত শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাসকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। একই সাথে স্বাধীনুা পরবর্তীতে নারী নাট্যকর্মীদের সংকটকালিন সময়ে নাটকে অসামান্য অবদানের জন্য প্রয়াত নাট্যকার বিদ্যুৎ করের বড় বোন মায়া কর’কে সম্মাননা দেওয়া হয়। এসময় সম্মিলিত নাট্য পরিষদের কার্যকরী পরিষদের পক্ষে সম্মাননা পাওয়া দুই গুণীজনের জীবনী পাঠ করেন ইন্দ্রাণী সেন ও ফারজানা সুমি।

‘যাক কেটে যাক নিকষ কালো, মঞ্চে আবার জ্বালাও আলো’ এই শ্লোগানে শুরু হওয়া নাট্য প্রদর্শনীর সার্বিক সহযোগিণা করছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সন্ধ্যায় কবি নজরুল অডিটোরিয়াম মঞ্চে নিলাঞ্জনা দাস জুঁইর নির্দেশনা ও শাহরিয়ার কবিরের রচনায় নৃত্যশৈলী সিলেট প্রদর্শন করে গীতিনাট্য ‘রূপান্তরের গান।’ উদ্বোধনী দিনের পরিবেশনা শেষে নৃত্যশৈলীকে সম্মিলিত নাট্য পরিষদের পক্ষ থেকে উৎসব স্মারক তুলে দেন নাট্যব্যক্তিত্ব উত্তম সিংহ রতন ও সাংবাদিক মুক্তাদির আহমদ মুক্তা।

এদিকে অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল ভর্তি দর্শক উপস্থিত হন। উৎসবকে কেন্দ্র করে মাখোর হয়ে উঠে অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণ।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় একুশের আলোকে নাট্য প্রদর্শনীর নাটক মঞ্চায়ন শুরু হবে ২০ ফেব্রুয়ারি শনিবার সন্ধ্যা ৭ টায়। প্রথম দিন লিটল থিয়েটার সিলেট মঞ্চায়ন করবে ‘ভাইবে রাধারমণ’। ২৭ মার্চ পর্যন্ত প্রতি শুক্র ও শনিবার কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে নাটক মঞ্চায়িত হবে।

উদ্বোধনী পর্বে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয় সম্মিলিত নাট্য পরিষদের দীর্ঘদিনের প্রধান পরিচালক সদ্য প্রয়াত গুনি নাট্যজন বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন লস্কর ময়নাকে। এসময় তাঁর সম্মানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *