Main Menu

ভ্যাকসিনের প্রথম লট আসছে ২৫-২৬ জানুয়ারি : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, দেশে ভ্যাকসিনের প্রথম লট আসছে আগামী ২৫-২৬ জানুয়ারি। এই ভ্যাকসিন ডোজ রাখতে সরকারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশে অন্তত ১৪-১৫ কোটি ভ্যাকসিন ডোজ রাখার ব্যবস্থা সরকারের হাতে রয়েছে। কাজেই দেশে ৪-৫কোটি ভ্যাকসিন চলে এলে সেগুলি সঠিকভাবে প্রয়োগে কোন সমস্যা হবে না।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সভা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি জানান, আমরা ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য ৪২ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। যার মধ্যে টেকনোলজিস্ট, নার্স, মিডওয়াইফ, ভলান্টিয়ার আছে। সব মিলিয়ে ৪২ হাজার জনকে ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে, যারা ভ্যাকসিন দেবে।

ভ্যাকসিন যাতে সুন্দরভাবে দেয়া যায় সেজন্য একটি অ্যাপস তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ অ্যাপস তৈরি করছে আইসিটি মন্ত্রণালয় এবং আমরা সহযোগিতা করছি। অ্যাপসের মাধ্যমে প্রত্যেক ব্যক্তি, যিনি ভ্যাকসিন নিতে পারবেন, তিনি নিজেকে রেজিস্টার করবেন এবং সেখানে কিছু তথ্য দেয়ার বিষয় আছে। তথ্য দিলে রেজিস্টার্ড হয়ে যাবে। পরে তাকে একটি সময় ও জায়গা বলে দেয়া হবে। সেখানে সময়মতো উপস্থিত হলে ভ্যাকসিন নিতে পারবেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কাদের ভ্যাকসিন দেব সে বিষয়টি আগেও বলেছি। ভ্যাকসিনে যারা ফ্রন্টলাইনার আছেন;, যেমন- ডাক্তার, নার্স, টেকনোলজিস্ট, সাংবাদিক, সেনাবাহিনী, পুলিশ, ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার যারা আছেন অর্থাৎ যারা প্রথম সারিতে আছেন তারা আগে পাবেন। পাশাপাশি যারা বয়স্ক আছেন, ৫৫ থেকে ঊর্ধ্ব যারা আছেন তাদের পর্যায়ক্রমে ভ্যাকসিনটি দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছি।

আগামী ২৫-২৬ তারিখের মধ্যে সিরামের মাধ্যমে ভ্যাকসিনের প্রথম লট আসার কথা। সেই লটটাকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা এবং ট্রান্সপোর্ট এবং স্টোরেজের ব্যবস্থা করা, এসব আমরা করেছি। আমরা স্টোরেজের খোঁজ খবর নিয়েছি, প্রতিটি জেলায় স্টোরেজের ব্যবস্থা রয়েছে, বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

প্রতিটি জেলায় ৭ লাখ ডোজের অধিক ভ্যাকসিন রাখা যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতি উপজেলায় ২ লাখের বেশি ডোজ আমরা ভ্যাকসিন রাখতে পারব। ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জাতীয় কমিটি আছে। কমিটির প্রধান হলেন আমাদের মুখ্য সচিব, তার নেতৃত্বে ভ্যাকসিন কমিটি কাজ করে।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও কমিটি করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেই কমিটিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

প্রাইভেট সেক্টরও ভ্যাকসিন আনতে পারবে জানিয়ে তিনি বলেন, সে বিষয়ে একটি নীতিমালা তৈরি হচ্ছে। সে নীতিমালাতে সব কিছু থাকবে যে, তারা কিভাবে দেবে, কিভাবে হিসাব রাখবে, কি দামে দেবে।

১৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় ভ্যাকসিন সংক্রান্ত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিনের সংকট হবে না, আরো সোর্সিং করা হচ্ছে।

ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। যথেষ্ট পরিমাণ ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করে রেখেছি। তিন চারটা কোম্পানির সাথে আমাদের কন্ট্রাক্ট হয়েছে।

ওইদিন সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, করোনার ভ্যাকসিন শুধু ভারত থেকেই আনতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আমরা যেখানে কমে পাব, সেখান থেকেই ভ্যাকসিন আনব।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত ভ্যাকসিন তৈরি করলে তাদের উৎপাদন খরচ কম হবে। তারা তো আর লাভ ছাড়া বিক্রি করবে না। তাদের যে খরচ হবে, সে দামেই আমরা পাব, এটা আশা করা ঠিক হবে না।’

বিভাগীয় পর্যায়ে ভ্যাকসিন পরিকল্পনা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডিস্ট্রিবিউশন প্ল্যানে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে টিকা দেয়া হবে ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪৫ জনকে। চট্টগ্রাম বিভাগে দেয়া হবে ২৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৩ জনকে, রাজশাহী বিভাগে ১৯ লাখ ২৪ হাজার ৯২২ জনকে, রংপুর বিভাগে ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৯ জনকে, খুলনা বিভাগে দেয়া হবে ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৬৪৬ জনকে, সিলেট বিভাগে দেয়া হবে ১০ লাখ ৩২ হাজার জনকে এবং বরিশাল বিভাগে আট লাখ ৬৬ হাজার ৯৯৪ জনকে টিকা দেয়া হবে। তিন রাউন্ডে এ জনগোষ্ঠী টিকা পাবেন।

টিকার জন্য নিবন্ধন শুরু ২৬ জানুয়ারি, থাকবে বেক্সিমকোর ওয়্যারহাউজে

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, টিকার জন্য নিবন্ধন শুরু হবে ২৬ জানুয়ারি। টিকা আসার পর দুদিন তা বেক্সিমকোর ওয়্যারহাউজে থাকবে। টঙ্গিতে বেক্সিমকোর দুটি ওয়্যারহাউজ রয়েছে। সেখান থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তালিকা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জেলায় টিকা পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

প্রথমে যে ৫০ লাখ টিকা আসবে তার পুরোটাই দিয়ে দেয়া হবে। আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় চালান আসলে সেই ৫০ লাখ ডোজও পুরো দিয়ে দেয়া হবে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *