Main Menu

আবুল মাল আবদুল মুহিত বাঙালির নবজাগরণের অন্যতম উত্তরপুরুষ ছিলেন

সিলেটের অমর কৃতিসন্তান, ভাষাসৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সফল কূটনীতিক ও অর্থনীতিবিদ, চিন্তক, লেখক ও আলোকিত সিলেটের স্বপ্নদ্রষ্টা সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম আবুল মাল মাল আব্দুল মুহিতের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে নগরীর সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘সম্মিলিত নাগরিক উদ্যোগের’ ব্যানারে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদ্যপ্রয়াত সদস্য মুহিতের স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে স্মৃতিচারণ করে বক্তৃতা করেন সরকারের মন্ত্রী, এমপি, প্রয়াতের পরিবারের সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, পেশাজীবী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও প্রয়াত মুহিতের অনুজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

এসময় তিনি বলেন, ‘আবুল মাল আবদুল মুহিত বাঙালির নবজাগরণের অন্যতম উত্তরপুরুষ ছিলেন। তিনি যে আদর্শ ও দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন, তাতে অনুপ্রাণিত হয়ে অনুসরণ করলে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে। আপাদমস্তক একজন গুণী মানুষ ছিলেন তিনি। সততা, একাগ্রতা, কর্তব্য ও কর্মনিষ্ঠা দিয়ে তিনি মানুষের মঙ্গল চিন্তা করেছেন। এমন ক্ষণজন্মা পুরুষের আদর্শ চিরঞ্জীব হয়ে থাকবে।’

সাবেক অর্থমন্ত্রীর জীবনের নানা কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন আরও বলেন, তিনি একজন স্পিরিটেড ম্যান ছিলেন, জিনিয়াস। তার স্পিরিটের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার স্বপ্ন মানুষের মঙ্গল করা। মুহিত ভাইও মানুষের মঙ্গলের কথাই সবসময় ভাবতেন।

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে মুহিতের সক্রিয় হওয়া ও মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ (সদর-নগর) আসনে নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর মুহিত ভাইয়ের স্পিরিট আরও বেড়ে যায়। বর্তমানের দেশের উন্নয়নের যে বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তার অনেকখানি পরিকল্পনা হয়েছে। এতে মুহিত ভাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আমিও সম্পৃক্ত ছিলাম।

প্রয়াত মুহিতের সহকর্মী হিসেবে কাজ করার কথা স্মরণ করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমাদের দেশে অনেকের মধ্যে আঞ্চলিকতা রয়েছে। জন্মমাটি সিলেটের প্রতি আনুগত্য ও ভালোলাগা থাকলেও তিনি সবসময় দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের কথা ভাবতেন। শিশুর মতো সারল্য তার অন্যতম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ছিল। তার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে সমৃদ্ধ হয়েছি। এজন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞ।

সম্মিলিত নাগরিক উদ্যোগের আহ্বায়ক ব্যারিস্টার আরশ আলীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আহমেদ নূরের সঞ্চালনায় স্মরণ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল ফতেহ ফাত্তাহ। প্রয়াত মুহিতের স্ত্রী সৈয়দা সাবিয়া মুহিত, ছেলে সাহেদ মুহিতসহ পরিবারের অনেক সদস্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে স্মৃতিচারণ করেন মুহিতের বোন জাতীয় অধ্যাপক ডা. শায়লা খাতুন ও শিপা হাফিজ। জনাকীর্ণ হলে প্রথমে প্রয়াতের স্মরণে নীরবতার পর তার প্রিয় রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন রানা কুমার সিনহা।

স্মরণ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন সুনামগঞ্জ-৫ আসনের মুহিবুর রহমান মানিক এমপি ও হবিগঞ্জ-১ আসনের গাজী মো. শাহনওয়াজ মিলাদ।

স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রয়াত মুহিতের স্মৃতি রক্ষার্থে সিলেটে নানা উদ্যোগ ও আয়োজনের দাবি করেন বক্তারা।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাবেক অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে সেমিনার বা যেকোনো উদ্যোগের জন্য প্রয়াতের পরিবারের সহযোগিতা কামনা করেন। সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. মুর্শেদ আহমদ চৌধুরী ও বেসরকারি নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস, একুশে পদকপ্রাপ্ত ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বক্তৃতা করেন।

সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় স্মৃতি রক্ষায় উদ্যোগের আশ্বাস দিয়ে বলেন, অর্থমন্ত্রীর থাকতে যেকোনো কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, জেলা প্রেসক্লাব সভাপতি আল আজাদ, সিলেট মহানগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, জেলা জাসদ সভাপতি লোকমান আহমদ, সিপিবির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেদানন্দ ভট্টাচার্য, জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান, সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, বিভিন্ন সংগঠন-সংস্থার নেতাদের মধ্যে সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম, সিলেট চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা খায়রুল হোসেন,সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য শামসুল আলম সেলিম, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সাধারণ সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ৩০ এপ্রিল ঢাকায় মারা যান দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশিবার বাজেট প্রণয়ন করা সাবেক অর্থমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাবেক সাংসদ আবুল মাল আব্দুল মুহিত।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *