Main Menu

সিলেটের রেজিস্ট্রারী মাঠে মির্জা ফখরুল: সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বাধীনতার যুদ্ধ এদেশের আপামর জনাতা করেছ, একজন ব্যক্তি বা একক কোন দল নয় বলেও উল্লেখ করেন। সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম উচ্চারণ করা হয়নি, তাজউদ্দিন আহমদের কথা উচ্চারণ করা হয়নি, এমন কি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানীকে আড়ালে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেটের রেজিস্ট্রারী মাঠে সিলেট মুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও গণসংগীত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির উদ্যোগে গঠিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটি, সিলেট বিভাগের উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

এতে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে দিচ্ছে না। উন্নয়ন ও মেগা প্রকল্পের কথা বললেও, দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে, অর্থনীতি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর জাতীয়ভাবে যে সুবর্ণজয়ন্তী উদযান করা হয়েছে সেখানে শেখ মুজিব ছাড়া আর কারো নাম নেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর সিলেট শত্রুমুক্ত করতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। কিন্তু জোর করে ক্ষমতায় থাকা এ সরকার প্রকৃত ইতিহাস মুছে দিয়ে একটি ভ্রান্ত গল্প নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে চায়।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছরেও আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য বাসযোগ্য একটি ভূমি রেখে যেতে ব্যর্থ হয়েছি। আমাদের স্বপ্ন ছিলো একটি গণতান্ত্রিক দেশ গড়ার। কিন্তু সেই স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছে বর্তমান সরকার। এ দেশে দারিদ্র্য মানুষের সংখ্যা বেড়ে গেছে। গুটিকয়েক মানুষ সরকারের ছত্রছায়ায় কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। দেশে আজ গণতন্ত্রের কবর রচনা করা হয়েছে। যার প্রমাণস্বরূপ- জনগণের ভোটে বার বার নির্বাচিত একজন প্রধানমন্ত্রীকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ফাঁসিয়ে কারাবাস করিয়ে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন মুমূর্ষু অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশেও যেতে দেওয়া হচ্ছে না।

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটি, সিলেট বিভাগের আহবায়ক ও সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন সিলেট বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির সদস্যসচিব ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন এর সঞ্চালনায় সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীন ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। নির্বাচন দিতে হলে অবশ্যই এর আগে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। প্রয়োজনে একাত্তর সালে যেভাবে দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাক হানাদারবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন দেশবাসী, ঠিক সেইভাই যুদ্ধ করে বর্তমান অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি- সেই দিন আর বেশি দূরে নয়।

১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর সিলেট শহরসহ দেশের বৃহত্তর এই উত্তর-পূর্বাঞ্চল পাকিস্তানি শত্রুমুক্ত হয়। এ উপলক্ষ্যে এই সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন সিলেট বিভাগীয় সমন্বয় কমিটি।

জাতীয়, দলীয়, দেশাত্মবোধক ও গণসংগীত পরিবেশনের পর বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয় অতিথিদের আলোচনা।

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এবং সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম।

এদিকে, অতিথিদের বক্তব্য শুরুর আগে সমাবেশে দুপক্ষের মধ্যে চেয়ার ছুড়াছুড়ি এবং পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শনিবার বেলা ৩টার দিকে বিভিন্ন নেতার পক্ষে স্লোগানকে কেন্দ্র করে তাদের সমর্থকদের মধ্যে এ উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

এসময় সমাবেশস্থলের সামন থেকে এক পক্ষ অন্যপক্ষকে চেয়ার নিয়ে ধাওয়া করলে উত্তেজনা তালতলা ভিআইপি রোড পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এসময় সুরমা মার্কেট ও তালতলা এলাকার ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে দোকানপাট লাগিয়ে দেন। পরে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের আধাঘণ্টার প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে অতিথিরা বক্তব্য শুরু করেন।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস বিকৃত করছে। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে স্বাধীনতার যুদ্ধের শুরু হয়েছে; এটা সরকার মানতে চায় না। গনতন্ত্র হত্যা, বাকস্বাধীনতা হরণ করছে আওয়ামী লীগ।

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন দলটি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, বীর বিক্রম।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *