Main Menu

গত ২৪ ঘন্টায় সংক্রমিত ২ হাজার ৯১১, ৩৭ জনের মৃত্যু

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। বর্তমানে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ৫২ হাজার ৪৪৫ জন রোগী রয়েছেন।
গত ২৪ ঘন্টায় সর্বাধিক ১২ হাজার ৭০৪টি নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৯১১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটি একদিনে শনাক্ত রোগীর সর্বোচ্চ রেকর্ড। এর আগে গত ২৯ মে সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছিল ২ হাজার ৫২৩ জন।
দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৩৭ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশে করোনায় মারা গেছেন মোট ৭০৯ জন।
আজ গতকালের চেয়ে ১৫ জন বেশি মারা গেছেন। আগের দিন মারা যান রেকর্ড সংখ্যক ২২ জন।

আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ১২০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ৫২৩ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৫৩০ জন বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল আক্রান্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৩৮১ জন। নমুনা পরীক্ষায় আজ আক্রান্তের হার ২২ দশমিক ৯১ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২০ দশমিক ৮১ শতাংশ। রোববার ছিল ২১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
শনাক্ত বিবেচনায় আজ সুস্থতার হার ২১ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আগের দিন সুস্থতার হার ছিল ২১ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। রোববার সুস্থতার হার ছিল ২০ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
নাসিমা সুলতানা জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে সর্বাধিক ১৪ হাজার ৯৫০টি। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ১০৪টি। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৮৪৬টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশে ৫২টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৭০৪টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল ১১ হাজার ৪৩৯টি। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ২৬৫টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৭৩টি।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘন্টায় মারা যাওয়া লোকদের মধ্যে ৩৩ জন পুরুষ এবং ৪ জন নারী। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ জন, রংপুর বিভাগে ২ জন, বরিশাল বিভাগে ৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন এবং সিলেট বিভাগে ৪ জন মারা গেছেন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায় গেছে, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৪০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ২৮ জন এবং বাসায় মারা গেছেন ৯ জন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৩৮৮ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৬ হাজার ২৪০ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৬৯ জন, এখন পর্যন্ত মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। প্রস্তুত করা হচ্ছে আরও ৭০০ শয্যা। ঢাকার ভেতরে রয়েছে ৭ হাজার ২৫০টি। ঢাকা সিটির বাইরে ৬ হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। আইসিইউ রয়েছে ৩৯৯টি, ডায়ালাসিস ইউনিট রয়েছে ১১২টি।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইনসহ মোট কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ২ হাজার ৫০৬ জনকে। এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৯০ হাজার ৩৮৫ জনকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৯৭ জন এবং এখন পর্যন্ত মোট ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫৮ হাজার ৫৪৫ জন।
দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) গত ২৪ ঘণ্টায় সংগৃহিত হয়েছে ১০ হাজার ২০টি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়েছে ২৪ লাখ ৯৯ হাজার ১৮২টি। গত ২৪ ঘন্টায় বিতরণ হয়েছে ২০ হাজার ৪৩০টি। এ পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে ২১ লাখ ৬০ হাজার ৭২৩টি। বর্তমানে ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৪৫৯টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৩০টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৯০ লাখ ৭৩ হাজার ৫১১টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ২৫৩ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ৬ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিআর হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৯৪৭ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৭ লাখ ৩ হাজার ৫৪০ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৯৩৩ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৭২ হাজার ৫১২ জন। ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ৩১২ জন এবং এ পর্যন্ত ৭ হাজার ৭৪৩ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৯১৭ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬০ লাখ ৫৭ হাজার ৮৫৩ জন। ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ৪ হাজার জন এবং এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৭১ হাজার ১৬৬ জন।
আপনার সুস্থতা আপনার হাতে উল্লেখ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সর্বদা মুখে মাস্ক পরে থাকা, সাবান পানি দিয়ে বারবার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বাইরে গেলে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
তিনি ধূমপান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ধূমপান অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।

সৌজন্যে বাসস






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *