Main Menu

যৌতুকের দাবি মেটাতে না পারায় গৃহবধূর চুল কেটে নির্যাতনের অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে

সুনামগঞ্জের শাল্লায় একলাখ টাকা যৌতুকের দাবি মেটাতে না পারায় দা দিয়ে স্ত্রীর চুল কেটে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। শাল্লা উপজেলার আটগাও ইউনিয়নের সরমা কাশীপুর গ্রামে গত শনিবার (২ অক্টোবর) এ ঘটনা ঘটেছে।এ ঘটনায় বাদী হয়ে শাল্লা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ।

নির্যাতনের শিকার নারী জানান, ৪/৫ বছর আগে সরমা কাশীপুর গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে আমির হোসেনের সঙ্গে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর তাদের সংসার ভালোই চলছিল। এরমধ্যে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। তারপর থেকে স্বামী বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য নানান অত্যাচার নির্যাতন করে আসছিল। এসব বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, শ্যামারচর বাজার ও তাদের বাড়িতে বেশ কয়েকবার সামাজিক সালিশ বৈঠকও হয়। কিন্ত যৌতুকের দাবিদাওয়া মেটাতে না পারায় সেসব সালিশে কোনো মীমাংসা হয়নি। চলতি বছরের আষাঢ় মাসে স্বামীকে তিনি ৫০ হাজার টাকা বাবার বাড়ি থেকে এনে দেন। তারপরও বিরোধ শেষ না হওয়ায় তিনি তিন মাস যাবৎ বাবার বাড়িতে ছিলেন তিনি। এ সময় তার স্বামী ঢাকায় ছিল।

গৃহবধূ বলেন, সম্প্রতি স্বামী অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসলে গত শনিবার (২ অক্টোবর) আমি দুই বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে যাই। এ সময় স্বামী ও তার স্বজনরা অটোরিকশা কেনার জন্য এক লাখ টাকা দাবি করেন। তখন আমি বলি, ‘আমার বাবা নেই। মা ও ছোট ভাই অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালায়। তাদের একলাখ টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই।’ এ কথা বলার পর স্বামী ও তার স্বজনদের সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আমার হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারপিট করে আমার স্বামী। পরে গলায় ধারালো দা ধরে ভয় দেখান এবং মাথার চুল কেটে দেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে আমার মা আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে যান।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর বলেন, গেল আষাঢ় মাসে মেয়ের জামাইকে ধান বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। এখন সে আরও একলাখ টাকা যৌতুক দাবি করেছে। জামাইয়ের কথামতো টাকা দিতে না পারায় তার মেয়েকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে। আমি এর বিচার চাই।

গৃহবধূর ভাই বলেন, আমি ও আমার মা দিনমজুরি করে সংসার চালাই। অতিকষ্টে আমার ভগ্নিপতিকে এর আগে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। এখন আবার সে এক লাখ টাকা চাইছে।

তবে নির্যাতনকারী আমির হোসেনের ছোট বোন সিতারা বেগম যৌতুকের দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমির হোসেন আমার ছোট ভাই। সে ঢাকায় রিকশা চালাতো। সম্প্রতি সে গ্রামের বাড়িতে ফিরে গিয়েছে। সম্প্রতি খামখেয়ালি বশত স্ত্রীর মাথার চুল কেটে দিয়েছে সে। তবে এই ঘটনা ভিন্ন পথে প্রবাহিত করা হয়েছে। সে কোনো মারধর বা যৌতুকের দাবি করেনি।

শাল্লা থানার এস আই আবুল কাশেম বলেন, এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার নারী বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আসামি গ্রেপ্তারে তৎপর রয়েছে।

চুল কাটা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেয়েটির মাথার চুল কাটা রয়েছে। তবে কি দিয়ে কাটা হয়েছে তা জানতে আরও তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *