Main Menu

৬০ মিনিটের প্রামাণ্যচিত্রের পুরস্কার ১ লাখ টাকা

অনলাইন ডেস্ক: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে অষ্টমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ‘লিবারেশন ডকফেস্ট বাংলাদেশ’। ২ থেকে ৬ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। আগামী বছর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এ উৎসবের মূল থিম নির্ধারিত হয়েছে ‘মুক্তির নায়ক বঙ্গবন্ধু’। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও জাতীয় চলচ্চিত্র আর্কাইভে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবের জন্য ছবি আহ্বান করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিতব্য উৎসবের বিস্তারিত জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন উৎসব পরিচালক চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক আহমেদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক ও জিয়াউদ্দিন তারিক আলী এবং পরিচালনা করেন জাদুঘরের ব্যবস্থাপক (কর্মসূচি) রফিকুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, দেশে দেশে মানুষের মুক্তি ও মানবাধিকার রক্ষার নানা প্রচেষ্টা আর সংগ্রাম সেলুলয়েডে তুলে ধরতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পক্ষ থেকে ২০০৫ সালে মুক্তি ও মানবাধিকার প্রামাণ্যচিত্র উৎসব শুরু হয়েছিল। উৎসবের মূল উদ্দেশ্য ছিল মানুষের মুক্তিসংগ্রাম ও মানবাধিকার রক্ষার যে লড়াই সংগ্রাম পৃথিবীর নানা দেশে চলছে, তার বাস্তব চিত্র বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে প্রামাণ্যচিত্রের মধ্য দিয়ে তুলে ধরা এবং বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তির অব্যাহত প্রয়াস চলচ্চিত্রে প্রতিফলন জোরদার করা। আজকের পৃথিবীতে নানা স্থানে সন্ত্রাস ও মানবাধিকার হরণের ঘটনা যেমন বেড়ে চলেছে, তেমনি মানুষের লড়াই, মুক্তিসংগ্রাম ইত্যাদি সেলুলয়েডের পর্দায় তুলে ধরার চেষ্টাও কম নয়। বিশেষত, প্রামাণ্যচিত্রের ব্যাপক ভূমিকার কথা এ প্রসঙ্গে না বললেই নয়। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত এই উৎসবটি কয়েক বছরের বিরতির পর ২০১৯ সাল থেকে আবার শুরু হয়েছে।

এই উৎসবে মোট পাঁচটি বিভাগ। এর মধ্যে ‘ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম সেকশনে’ সারা বিশ্বের মুক্তি ও মানবাধিকারবিষয়ক সাম্প্রতিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। এই বিভাগে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ পরবর্তী সময়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রসমূহ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের যোগ্য বিবেচিত হবে। জমাদানকৃত প্রামাণ্যচিত্র সর্বোচ্চ ৬০ মিনিট দৈর্ঘ্যের হতে হবে। এই বিভাগে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রামাণ্যচিত্রসমূহ থেকে একটি ছবিকে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দেওয়া হবে, যার মূল্যমান ১০০০ মার্কিন ডলার।

২ থেকে ৬ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
২ থেকে ৬ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের প্রতিযোগিতামূলক বিভাগটি হচ্ছে ‘১৯৭১ অ্যান্ড বিয়ন্ড বিভাগ’। এখানে বাংলাদেশের নির্মাতাদের সাম্প্রতিক সময়ে নির্মিত মুক্তি ও মানবাধিকারবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। এ বিভাগে প্রদর্শিতব্য চলচ্চিত্রসমূহের সর্বোচ্চ ব্যাপ্তিকালও ৬০ মিনিট। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রামাণ্যচিত্রসমূহ থেকে একটি ছবিকে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দেওয়া হবে, যার মূল্যমান ১ লাখ টাকা। এই বিভাগে কেবল ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭-পরবর্তী সময়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রসমূহ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে যোগ্য বিবেচিত হবে।

পরিচালনা করেন জাদুঘরের ব্যবস্থাপক (কর্মসূচি) রফিকুল ইসলাম। ছবি: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সৌজন্যে।
পরিচালনা করেন জাদুঘরের ব্যবস্থাপক (কর্মসূচি) রফিকুল ইসলাম। ছবি: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সৌজন্যে।
‘ওয়ান মিনিট ফিল্ম সেকশন’ বিভাগে ১ মিনিট দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রসমূহ অংশগ্রহণের যোগ্য বিবেচিত হবে। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই বিভাগে অংশগ্রহণ করতে পারবে। অংশগ্রহণকারীদের বয়সসীমা ১২-২২ বছর। এই প্রতিযোগিতা বিভাগে মূলত বঙ্গবন্ধুকে অবলম্বন করে বিষয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রসমূহ জমা দেওয়া যাবে। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে এবারের বিষয় নির্ধারিত হয়েছে আমি বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি/জেনেছি/৭ মার্চ একাত্তরের ভাষণ শুনেছি। চলচ্চিত্র জমাদানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানপ্রধানের প্রত্যয়নপত্র প্রয়োজন হবে। এই বিভাগে জমাদানকৃত ছবিগুলো থেকে উৎসব চলাকালে একটি শিশু-কিশোর জুরি গঠনের মাধ্যমে পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

‘এক্সপোজিশন অব ইয়ং ফিল্ম ট্যালেন্ট’ বিভাগটি মূলত তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য। চলচ্চিত্র নির্মাণবিষয়ক একটি চার দিনব্যাপী কর্মশালা, যা উৎসব চলাকালে অনুষ্ঠিত হবে এই বিভাগের আওতায়। সর্বোচ্চ ৩৫ বছর বয়সী তরুণ এবং উঠতি নির্মাতারা তাঁদের ভবিষ্যৎ ছবির পরিকল্পনা একটি প্রজেক্ট আকারে কর্মশালায় অংশগ্রহণের জন্য জমা দেবেন। প্রতিজন নির্মাতাকে তাঁদের নতুন নির্মিতব্য ছবির গল্প সার সংক্ষেপ, নির্মাতার জীবনবৃত্তান্ত, সংক্ষিপ্ত মোট বাজেট এবং ছবিসংক্রান্ত আলোকচিত্র বা ভিজ্যুয়াল ম্যাটিরিয়াল (যদি থাকে) জমা দিতে হবে। এ বিভাগে ১৫ জনকে প্রজেক্টসহ এবং ১০ জনকে পর্যবেক্ষক হিসেবে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে। নির্বাচিত প্রজেক্টসমূহকে ২০০০ টাকা এবং অবজারভারকে ১০০০ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। সেরা প্রজেক্টটিকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পক্ষ থেকে নির্মাণ সহায়তা দেওয়া হবে। উৎসবের শেষ দিন সেরা প্রজেক্ট বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। সেরা প্রজেক্ট বিজয়ী তাঁর ছবি নির্মাণের জন্য ৫ লাখ টাকা অনুদান সহায়তা পাবেন।

স্পেশাল ফোকাস বিভাগে বিশেষ থিম হিসেবে রোহিঙ্গা সংকট ঘিরে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে। এপ্রিলের ২ থেকে ৬ তারিখ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও জাতীয় চলচ্চিত্র আর্কাইভে উৎসবের ছবিগুলো দেখা যাবে। বিস্তারিত liberationdocfestbd.org।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *