Main Menu

তুমব্রু সীমান্তে আবারও মিয়ানমারের গোলাগুলি

১০ দিন বন্ধ থাকার আবারও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অংশে গোলাগুলি শুরু হয়েছে। সোমবার (০৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে তুমব্রু সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন বলে জানিয়েছেন এপারের বাসিন্দারা। এতে তাদের মাঝে আবারও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত পাঁচটি গোলার শব্দ শুনেছেন বলে জানিয়েছেন তারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ। তিনি বলেন, ‘গত ১০ দিন গোলাগুলি বন্ধ ছিল। সোমবার সন্ধ্যা থেকে আবারও তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অংশে গোলাগুলি শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত পাঁচটি গোলার শব্দ শুনেছেন বলে সীমান্তের বাসিন্দারা আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। একইসঙ্গে সীমান্তের বাসিন্দাদের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বলেছি।’

এছাড়া টেকনাফের খারাংখালী সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অংশে গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন বলে জানিয়েছেন এপারের বাসিন্দারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এক কর্মকতা বলেন, ‘বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে গত কয়েকদিন গোলাগুলি বন্ধ ছিল। সোমবার সন্ধ্যা থেকে আবারও গোলাগুলি শুরু হয়েছে। এতদিন গোলাগুলি বন্ধ থাকায় সীমান্তের লোকজন স্বস্তিতে ছিলেন। আবারও গোলাগুলি শুরু হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন তারা। এ অবস্থায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। সীমান্তের সব জায়গায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’

সীমান্তে বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দা ও রোহিঙ্গারা জানান, গত ১০ দিন তুমব্রু সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। সোমবার সন্ধ্যা থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এতে তাদের মাঝে ভয়ভীতি কাজ করছে। সবচেয়ে আতঙ্কে রয়েছেন শূন্যরেখার রোহিঙ্গারা।

এ বিষয়ে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, ‘সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হঠাৎ গোলার শব্দে ঘর বেরিয়ে আসি। পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে অন্তত পাঁচটি গোলার শব্দ শুনেছি। আবারও গোলাগুলি শুরু হওয়ায় আমরা আতঙ্কে আছি। এর আগে রবিবার তুমব্রু সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও এক রোহিঙ্গা। আমাদের ভয় কাটছে না।’

তুমব্রুর ভাজাবনিয়ার বাসিন্দা সৈয়দুর রহমান হিরা বলেন, ‘আবারও গোলাগুলি শুরু হয়েছে। গত ১০ দিন গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। ফলে নির্ভয়ে রাত কেটেছে। কিন্তু ফের গোলাগুলি শুরু হওয়ায় আমরা আতঙ্কিত।’

তুমব্রু সীমান্তের বাসিন্দা সিএনজিচালক মাহমুদুল হক বলেন, ‘সীমান্তের ওপারে আবারও গোলাগুলি শুরু হয়েছে। আজকে বালুখালী থেকে যাত্রী নিয়ে তুমব্রু যাওয়ার পথে হঠাৎ ভারী গোলার শব্দ শুনে ভয় পান যাত্রীরা।’

এর আগে মিয়ানমারে চলমান গোলাগুলিতে তুমব্রু সীমান্তবর্তী হেডম্যান পাড়া, বাঁইশফাড়ি, ঢেকুবনিয়া, গর্জনিয়া, বাজার পাড়ার ১০ হাজারের বেশি স্থানীয় বাসিন্দার পাশাপাশি শূন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গারা আতঙ্কে ছিলেন। গত ১০ দিন সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত আগস্ট মাস থেকে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি পাহাড়ে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী আরাকান আর্মির সংঘাত চলছে। এ ঘটনায় প্রায়ই গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। এর মধ্যে গত ২৮ আগস্ট এবং ৩ সেপ্টেম্বর দুই দফায় চারটি মর্টারশেল তুমব্রু উত্তরপাড়া ও বাইশফাঁড়ি এলাকায় এসে পড়েছিল। এ ঘটনায় ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মো-কে তলব করে প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। এরপরও মাঝেমধ্যে গোলাগুলি বন্ধ হয়নি।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *