Main Menu

পাকিস্তানের সিকান্দার যেভাবে জিম্বাবুয়ের মহানায়ক

সুযোগ পেলেই উর্দুতে কথা বলেন সিকান্দার রাজা। মাতৃভাষায় কথা বলার সুযোগ কখনো হাতছাড়া করেন না তিনি। জন্মসূত্রে পাকিস্তানের হলেও সিকান্দার খেলেন জিম্বাবুয়ের হয়ে। যার ব্যাট সোমবার প্রায় হারিয়ে দিয়েছিল ভারতকে। বিশ্বের অন্যতম ক্রিকেট খেলিয়ে দেশের বিরুদ্ধে শতরান করলেন সিকান্দার। আর সেটা উপভোগ করল তার পরিবার।

২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের হয়ে প্রথম বার খেলেন সিকান্দার। তিনিই প্রথম ক্রিকেটার যিনি জিম্বাবুয়েতে জন্ম না নিয়েও ওই দেশের জার্সি পরেছেন। ওই সময় বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি ক্রিকেটারকে বিভিন্ন দেশের হয়ে খেলতে দেখা গিয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম ইমরান তাহির। যিনি দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলেন। আর ছিলেন সিকান্দার। তার নাগরিকত্ব পাল্টানো খুব সহজ ছিল না।

সিকান্দারের বাবা তাসাদাক হুসেইন রাজা আফ্রিকায় আসেন ২০০২ সালে। ১৬ বছরের সিকান্দার সেই সময় স্কটল্যান্ডে সফটওয়ার নিয়ে কেরিয়ার তৈরি করতে ব্যস্ত। সেখানেই পড়াশোনা করছিলেন তিনি। এক সময় যুদ্ধবিমান ওড়ানোর ইচ্ছা হয়েছিল তার। কিন্তু সেই সব কিছুই স্বপ্ন হয়েই থেকে যায়। সিকান্দার চলে আসেন জিম্বাবুয়ে। ভাগ্য পাল্টে যায় তার।

ভারতের বিরুদ্ধে ৯৫ বলে ১১৫ রানের ইনিংস প্রমাণ করে দিয়েছে সিকান্দার কতটা লড়াকু। তার লড়াই পানিতে গেলেও হাল ছাড়েননি সিকান্দারর। হেরে গেলেও তিনি এটা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে জিম্বাবুয়েতে প্রতিভার কোনো অভাব নেই। এক সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সিকান্দরের ভাই তায়মুর বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই খুব ভালো ক্রিকেট খেলত সিকান্দার। হারারেতে পাকাপাকিভাবে চলে আসার পর বাবা তাকে ক্রিকেট খেলতে উৎসাহ দেয়। সিকান্দরের মধ্যে বাবা ভালো ক্রিকেটার হওয়ার রসদটা দেখতে পেয়েছিল। বিশ্বাস করেছিল ওর উপর।’

স্কটল্যান্ডেও ক্রিকেট খেলতেন সিকান্দর। বরাবর তার ব্যাটে রান এসেছে। এক মরসুমে জিম্বাবুয়ের ঘরোয়া ক্রিকেটেও তিনি সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রাহক হয়ে উঠেছিলেন। টি-টোয়েন্টি এবং ৫০ ওভারের ম্যাচে দাপট দেখিয়েছিলেন তিনি। এই সব কিছুর পরেও সিকান্দারের জিম্বাবুয়ের হয়ে খেলা আটকে যাচ্ছিল আইনি জটিলতায়। ওই সময় তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক অ্যালেস্টার ক্যাম্পবেল। তার কথাতেই ধৈর্য ধরে সুযোগের অপেক্ষা করেন সিকান্দার। শেষ পর্যন্ত সুযোগ পান এবং জিম্বাবুয়ের হয়ে ক্রিকেট খেলে নিজেকে প্রমাণ করেন।

হারারের ছোট শহর বেলভেদ্রেতে থাকেন সিকান্দার। এশিয়া থেকে যাওয়া মানুষদের বাস সেখানে। রাজার জন্য তাই সোমবার গলা ফাটালেন অনেক এশীয়রাও। তায়মুর বলেন, ‘আমাদের অনেক পড়শি মাঠে এসেছিল ভারতের বিরুদ্ধে সিকান্দারের খেলা দেখতে।’ শুধু পড়শিরা নন, সিকান্দারের সাফল্যে খুশি পাকিস্তানের সিয়ালকোটে বসে থাকা তার দাদাও।

সিকান্দার বলেন, ‘দাদা যখন জানতে পারে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি, খুব খুশি হয়েছিল। বলেছিল, আমি সারা বিশ্বে পরিবারের নাম উজ্জ্বল করেছি।’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *