Main Menu

‘জ্বালানি নিরাপত্তায় দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নিতে হবে’

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর ডিমান্ড সাইড লোড ব্যবস্থাপনা ও জ্বালানির দক্ষ ব্যবহারের ওপরে গুরুত্ব দিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে গ্যাসের সিস্টেম লস ১০ শতাংশ থেকে ২ শতাংশে নামিয়ে এনে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ মিলিয়ন গ্যাস সাশ্রয় করা সম্ভব। যা স্পট বাজার থেকে এলএনজি কেনার বিকল্প হবে, শিল্পে আরও বেশি গ্যাস সরবরাহ করা যাবে।

বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটে বাংলাদেশের করণীয় বিষয়ে বাংলাদেশ এনার্জি সোসাইটির (বিইএস) আয়োজনে ‘প্রেজেন্ট এনার্জি ক্রাইসিস ওয়ে ফরওয়ার্ড ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞরা ওপরের মতামত তুলে ধরেন।

ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বীর বিক্রম। অন্যদের মধ্যে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম, জ্বালানি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (অপারেশন) এস এম জাকির হোসেন, এনার্জিপ্যাকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ুন রশিদ, বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান করিম, সামিট গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ ফয়সাল করিম খান এবং ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি কনসালট্যান্ট প্রকৌশলী খন্দকার আব্দুস সালেক (সুফি)।

পিডিবির সাবেক চেয়ারম্যান এএসএম আলমগীর কবিরের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিইএস’র সভাপতি ও সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী প্রায় সব খাতেই ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে, যা এই অস্থিতিশীল ও সংকটময় অবস্থা সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। তাই কীভাবে বর্তমান সংকট কাটিয়ে ওঠা যায় এবং ভবিষ্যতে এরূপ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়— আমরা সে চেষ্টাই করছি।’

নিজস্ব গ্যাসসম্পদ অনুসন্ধান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গত ১০ বছর সময়কালে ৫০টি কূপ খনন করার পরও বড় কোনও সাফল্য পাওয়া যায়নি। তারপরও স্থলভাগে চেষ্টা অব্যাহত আছে। সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্যও প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু সাফল্য কতটা পাওয়া যাবে এবং পরিবর্তিত বিশ্ব প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিকে আকর্ষণ করা যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় আছে। ফলে অর্থনীতির চাকা চালু রাখতে এলএনজি আমদানি অবকাঠামো স্থাপনের কাজ চলমান আছে। ফসিল জ্বালানির ওপর চাপ কমাতে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলছে। আগামী বছর তার প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসবে। আবার সোলার, উইন্ড নিয়েও আমরা পিছিয়ে নেই। কিন্তু স্টোরেজ ছাড়া ২৪/৭ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে পাওয়ার কোনও সুযোগ নেই।’

ম.তামিম বলেন, ‘বাংলাদেশ আমদানিকৃত এবং নিজস্ব উভয় জ্বালানিই ব্যবহার করে। তবে চলমান সংকট মোকাবিলায় আমাদের আরও গুরুত্বের সঙ্গে নিজস্ব জ্বালানির উৎপাদন বৃদ্ধিতে মনোযোগী হতে হবে। বিশেষ করে নবায়নযোগ্য শক্তি ও জ্বালানির দক্ষ ব্যবহারের দিকে আমাদের বাড়তি নজর দিতে হবে।’

আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বাংলাদেশ জ্বালানি আমদানি-নির্ভর দেশ হলেও নিজস্ব জ্বালানি উৎপাদনে আমরা সক্ষম এবং বিগত বছরগুলোয় আমরা তা দেখেছি। বর্তমানে বিশ্ববাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় সবকিছুর দামই ঊর্ধ্বমুখী, যার প্রভাব জ্বালানিতেও পড়েছে। জ্বালানির সিস্টেম-লস কমিয়ে সেই পরিমাণ বিদ্যুৎ অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহার করা গেলে পরিস্থিতি সামলানো সম্ভব।’

ইমরান করিম বলেন, ‘শুল্ক-ভ্যাট প্রত্যাহার করা হলে ফার্নেস বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ আমদানি করা কয়লার চেয়ে কম পড়বে। জ্বালানির উচ্চ মূল্যের চাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিজস্ব জ্বালানির জোগান বাড়ানোর কোনও বিকল্প নেই।’

খন্দকার আবদুস সালেক বলেন, ‘গ্যাসের সিস্টেম লস বর্তমান পর্যায় থেকে ২ শতাংশ নামিয়ে আনলে ২৫০-৩০০ এমএমসিএফডি গ্যাস সাশ্রয় করা সম্ভব। যা দিয়ে শিল্পে বাড়তি গ্যাসের যোগান দেওয়ার মাধ্যমে উৎপাদন গতিশীল করা সম্ভব।’






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *