Main Menu

সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন: বিশ্বনাথে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ

বিশ্বনাথে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। বন্দুকসহ আটক আসামিকে ছেড়ে দেওয়া, অভিযোগকারীদের মামলা গ্রহণ না করা ও আসামিদের নিয়ে তদন্ত কাজ এবং আসামিদের সঙ্গে নিয়মিত ওঠাবসার অভিযোগ করেছেন বিশ্বনাথ উপজেলার ছত্তিশ গ্রামের আরশ আলীর পুত্র মখলিছুর রহমান। সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে মখলিছুর রহমান বলেন, ‘আমার প্রতিবেশি ছত্তিশ গ্রামের মৃত হাজী মনোহর আলীর পুত্র মিজানুর রহমান বর্তমান সরকারের আমলে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা সেজে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন। সন্ত্রাসী হামলা-মামলা ভাংচুর লুটপাট তার কাছে নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। শাসকদলীয় নেতা পরিচয়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর উপর প্রভাব খাটিয়ে তিনি যা ইচ্ছে তা’ই করে চলেছেন। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তার কোনো অপকর্মের প্রতিবাদ করলে নেমে আসে হামলা-মামলাসহ নির্যাতন-নিপীড়ন, এমনকি মৃত্যু ঘটারও আশংকা থাকে। মিজানুর রহমান ও হাবিবুর রহমানের কাছে এলাকার মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছেন।’
লিখিত বক্তব্যে মখলিছুর রহমার আরও অভিযোগ করেন, ‘মিজানুর রহমান ও হাবিবুর রহমানের সঙ্গে তার পরিবারের জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল । এর জেরে মিজান ও হাবীব প্রায়শঃই তার পরিবারকে হত্যাসহ তাদের জানমালের ক্ষতি সাধনের চেষ্টায় লিপ্ত থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় মিজানুর রহমান ও হাবিবুর রহমান এবং তাদের দলভুক্ত লোকজন গত ৫ ও ১০ আগস্ট দুদফা হামলা চালিয়ে তার স্বজনদের গুরুতর আহত করেন এবং তাদের ঘর-দরজার ভাংচুর করেন। বিষ ঢেলে তার পুকুরের মাছও মেরে ফেলেন।’ মখলিছুর রহমান বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট নামাজ শেষে তিনি ও তার দোকান কর্মচারী ভাগিনা বদরুল আলম রানা বাড়িতে ফিরলে মিজানুর রহমান, হাবিবুর রহমান ও হাবিবুর রহমানের পুত্র তানবীর দলবল নিয়ে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালান। হামলায় তারা দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্রও ব্যবহার করেন। ধারালো অস্ত্র দা দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে বদরুল আলম রানাকে গুরুতর আহত করেন। এ সময় হাবিবুর রহমানের পুত্র তানবীর বন্দুক দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে ৩ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তানবীরকে বন্দুকসহ হাতেনাতে আটক করে এবং গুলির খোসা উদ্ধার করে। গুরুতর আহত বদরুল আলম রানাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দিতে গেলে অজ্ঞাতকারণে পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি। উপরন্তু বন্দুকসহ আটক তানবীরকে রাতে থানা থেকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।’
তিনি বলেন, ‘থানা পুলিশ মামলা না নেওয়ায় মিজান, হাবিব ও তানবীর আরোও বেপরোয় হয়ে ওঠেন। আহত বদরুল আলম রানা বাড়ি ফিরলে ১০ আগস্ট তারা আবারো হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। ফলে দ্বিতীয় দফায় বদরুল আলম রানাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি বলেন, ‘মিজানদের দফায় দফায় হামলা এবং থানায় মামলা না নেওয়ায় মখলিছ গত ১৬ আগস্ট সিলেটের আমল গ্রহণকারী বিশ্বনাথ আদালতে মামলা করেন। মামলার আসামীরা হচ্ছেন, সিলেটের বিশ্বনাথ থানার সত্তিশ গ্রামের মৃত হাজি মনোহর আলীর পুত্র মিজানুর রহমান, হাবিবুর রহমান ও মতিউর রহমান এবং হাবিবুর রহমানের পুত্র তানবীর ও মিজানুর রহমানের পুত্র আরিফুর রহমান।’
আদালতের আদেশে ২৪ আগস্ট মামলাটি রেকর্ডে নিতে বাধ্য হন বিশ্বনাথ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান। পরে থানার এসআই গাজী মোয়াজ্জেম হোসেনকে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়। মখলিছুর রহমানের অভিযোগ, অজ্ঞাত কারণে মামলার আসামিদের গ্রেফতার করছেন না বিশ^নাথ থানার ওসি তার পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই গাজী মোয়োজ্জেম হোসেন ২৬ আগস্ট মামলার এজহারনামীয় আসামী তানবীরকে সঙ্গে নিয়েই মামলার তদন্ত কাজ করতে যান। তাকে তানবীরের সঙ্গে সবসময় ওঠাবসা করতে দেখা যায়।
আসামিদের গ্রেফতার না করায় মামলার বাদী হয়ে মখলিছুর রহমান প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বাড়িঘরে যেতে না পেরে ভবঘুরে মানবেতর দিনযাপন করছেন। আর এ সুযোগে মামলার এজাহারভুক্ত আসামী সন্ত্রাসী মিজান ও তানবীরা তার পুকুরে বিষ ঢেলে লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলেছে। তার বৃদ্ধা মা-সহ পরিারের মহিলা ও শিশুদের অপহরণ গুমসহ নানা হুমকি-ধামকি দিয়ে চলেছে। এ ঘটনায় সিলেট জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা ঘটনায় তানবীরের বন্দুক জব্দ ও লাইসেন্স বাতিল করলেও অজ্ঞাত কারণে হামলাকারী তানবীরকে গ্রেফতার করছে না বিশ^নাথ থানা পুলিশ। ফলে সন্ত্রাসী হামলার মামলা দিয়ে উল্টো তিনি ও তার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাসী হামলার মামলার আসামি বিশ^নাথ থানার সত্তিশ গ্রামের মিজান ও তানবীরকে অবিলম্বে গ্রেফতার এবং আক্রান্ত পরিবারের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জাননো হয়। পাশপাশি কর্তব্যে অবহেলার জন্য থানা পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সরকার ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। উপস্থিত ছিলেন বদরুল আলম রানা, মাশুক মিয়া, লিলু মিয়া, ডা. কাউছার আহমদ, আতিকুর রহমান, ফারুক আহমদ ও ছাইফুল ইসলাম।

 






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *