Main Menu

শাবি উপাচার্যের বিষয় রাষ্ট্রপতির হাতে, শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষার্থীদের দাবি শিক্ষা ও শিক্ষকতার মান, আবাসন সুবিধাসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান কীভাবে করা যায় একই সাথে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ কীভাবে সুন্দর রাখা যায় এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকটি প্রস্তাব করেছেন। আমরা তাদের প্রস্তাব গুরুত্ব সহকারে শুনেছি। আমাদের ভালো আলোচনা হয়েছে।

তাদের দাবির মধ্যে অধিকাংশ দাবিই পূরণ হয়েছে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, যে দাবিগুলো এখনও পূরণ হয়নি আমরা আশাকরি খুব শীঘ্রই ওই দাবিগুলোরও সমাধান দিতে পারবো।

দুপুরের পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১০ জনের প্রতিনিধি দলের সাথে আমরা বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তারা শাবির পুরো ঘটনার বর্ণনা করেছেন। একই সাথে তাদের কি কি দাবি-দাওয়া আছে তা জানিয়েছেন।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, উপাচার্য পদত্যাগের দাবির ব্যাপারে সার্বিক কারণ শিক্ষার্থীরা আমাদেরকে জানিয়েছেন। আমরা মনযোগ সহকারে তাদের দাবিটিও শুনেছি। বিয়য়টি আমার মাননীয় আচার্যকে (রাষ্ট্রপতির) অবহিত করবো। যেহেতু উপাচার্য নিয়োগ এবং অপসারণ বিষয়টি আচার্যের উপর নির্ভর করে। তাই বিষয়টি মাননীয় আচার্যকে অবহিত করা হবে।

উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা আড়াইটায় বৈঠকে বসেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সিলেট সার্কিট হাউজে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসেন শাবির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ১০ জনের একটি প্রতিনিধিদল।

বৈঠকে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, উপাচার্যের পদত্যাগ ও অন্যান্য দাবি নিয়ে তারা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন।

শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ফেরদৌস আহমেদ তুহিন রয়েছেন। এই বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে যান।

প্রসঙ্গত, শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু গত ১৩ জানুয়ারি। সেদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। ১৬ জানুয়ারি বিকালে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে পুলিশ। এরপর পুলিশ ৩০০ জনকে আসামি করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। সেদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন।

বাসভবনের সামনে অবস্থানের কারণে গত ১৭ জানুয়ারি থেকে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন ফরিদ উদ্দিন আহমদ। ১৯ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে একজনের বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অনশন শুরুর পরদিনই বাড়ি চলে যান। ২৩ জানুয়ারি আরও চারজন ও ২৪ জানুয়ারি একজন শিক্ষার্থী অনশনে যোগ দেন। ২৩ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। অবরুদ্ধ উপাচার্যের জন্য প্রক্টর, শিক্ষক সমিতির নেতা ও দুজন কাউন্সিলর খাবার নিয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের বাধায় তারা বাসভবনে ঢুকতে পারেননি। ২৮ ঘণ্টা পর ২৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করেন তারা।
২৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক লেখক জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন হক শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর তাদের হাতে উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচটি দাবি সরকারের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার জন্য তুলে দেন আন্দোলনকারীরা। এরই মধ্যে গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক পদ থেকে অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমদকে সরিয়ে দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে জানানো হয়, অসুস্থতার কারণে তাকে অপসারণ করা হয়েছে। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে প্রক্টরের পদ থেকে বৃহস্পতিবার আলমগীর কবীরকে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের পাঁচ দাবির মধ্যে জহির উদ্দিন আহমদ ও আলমগীর কবীরের অপসারণও ছিল।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *