হাসপাতালের বিরুদ্ধে নবজাতকের মৃত্যু ও শিশু বদলের অভিযোগ

হবিগঞ্জে ‘দি জাপান বাংলাদেশ ডায়গনস্টিক সেন্টার ও প্রাইভেট হাসপাতালের’ খুঁটির জোর কোথায়? একের পর নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠছে, রোগীদের সঙ্গে দূর ব্যবহারসহ বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও দাপটের সাথে ব্যবসা করেই চলেছে। অনেক সময় একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অর্থদণ্ডে দণ্ডিতও হয়েছে। কিন্তু কিছুদিন পর-পরেই আবার সেই নির্মম ঘটনা ও মানসিক নির্যাতনে করা হয় গ্রামে থেকে আসা সহজ-সরল রোগীদের।
শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) মধ্যরাতে আবারো এক নবজাতকের মৃত্যু ও শিশু বদলের অভিযোগ উঠছে, শুধু তাই নয় সিজারের পর নবজাতক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা নবজাতক শিশুকে নিয়ে হবিগঞ্জ জেলা আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিতে চাইলে রোগীদের সঙ্গে দূর ব্যবহার করা হয় এবং গেইটের তালা খুলে দেয়নি ‘দি জাপান হাসপাতাল’ কর্তৃপক্ষ।
এমন কি কাউকে কোন কিছু না বলার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে যখন সকালে গেইটের তালা খুলে দেওয়া হলো ততক্ষণে নবজাতক শিশু মারা যায়।
সরেজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলার চুনারুঘাট উপজেলার পূর্ব-পাকুরিয়া গ্রামের মো. ওয়াসিম মিয়া পেশায় গাড়ি চালক।
মো. ওয়াসিম মিয়া তার গর্ভবতী স্ত্রী সুমি আক্তারকে সিজার করানোর জন্য হবিগঞ্জ শহরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকায় দি জাপান ডায়গনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে আসেন। রাত ২টায় তার সিজার করানো হয়। উম্মে এর কিছুক্ষণ পরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক ছেলে সন্তান এনে দেয় তাদের কাছে।
তিনি জানান, এটি তার প্রথম সন্তান ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাত ২টায় প্রথমে একটি ছেলে সন্তান এনে দেন। তাকে মোড়ানো কাপড় দেখে বুঝতে পারি এটি আমাদের নয়। পরবর্তীতে তারা নবজাতক ছেলে সন্তান নিয়ে একটি মেয়ে সন্তান এনে দেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা ডাক্তারকে ডাকতে বলি। কিন্তু তারা তা শোনেননি। এ সময় মৃত নবজাতকের বাবা মো. ওয়াসিম মিয়া কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তিনি আরো বলেন, এরপর স্ত্রীর সাথে কথা বলে জানতে পারি আমাদের মেয়ে হয়েছে। সদর হাসপাতালে নিতে চাইলেও তারা গেট খুলে দেননি। ভোরে গেট খুললেও শিশুটি ততক্ষণে মারা যায়। এ ঘটনার বিচার দাবি করেন তিনি।
এই ঘটনা এড়াতে পরে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের তৈরি রেকডের তথ্য অনুযায়ী খালেক নামের এক দালাল রোগীর আত্মীয় সেজে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়। এর কিছুক্ষণ পরই দালাল খালেকের মোবাইলে ফোন ২/৩ বার করলে সে তার মোবাইল বন্ধ করে দেয়।
হবিগঞ্জের দি জাপান বাংলাদেশ ডায়গনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, বাচ্চা মারা যাওয়ার পেছনে আমাদের কোন ভুল ছিল না। শিশুর ওজন কম ছিল এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণে মারা গেছে। এছাড়া দুটি সিজার একসাথে হলেও বাচ্চা পরিবর্তন করা হয়নি এবং হাসপাতালের গেইটও তাদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছিল। যা আমাদের সিসি ক্যামেরা দেখলেই বুঝতে পারবেন।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জ্বল এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, এ ব্যাপারে কোন ধরনের অভিযোগ এখনো পাইনি। তবে ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এমন হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Related News

মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর : আইন উপদেষ্টা
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুতRead More

ওসির বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ, দক্ষিণ সুরমায় জুলাই যোদ্ধার পরিবারকে হত্যার হুমকি আওয়ামী লীগ নেতার
দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাওঁ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জবরুল ইসলাম জগলুর বিরুদ্ধে জুলাই যোদ্ধা পরিবারকেRead More