যুক্তরাষ্ট্রে বহুল আলোচিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: জর্জিয়ায় এগিয়ে, নিশ্চিত জয়ের পথে বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্রে বহুল আলোচিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। চলছে ভোট গণনা। অপেক্ষায় রয়েছেন দুই প্রার্থীসহ গোটা বিশ্ব। দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৪৫টি রাজ্যের ফলাফলের বিষয়ে জানা গেছে। এতে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য একজন প্রার্থীকে ৫৩৮ ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে ২৭০টি পেতে হবে। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, বাইডেন ইতিমধ্যে ২৬৪টি পেয়ে এগিয়ে আছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে।
জো বাইডেন পররাষ্ট্র বিষয়ে একজন ঝাঁনু রাজনীতিক ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তিনি দীর্ঘ দিন পররাষ্ট্র বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কমিটিতে কাজ করেছেন।
সিনেটের এই কমিটির সভাপতি হিসেবে ২০১২ সালের অক্টোবরে আমেরিকার রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের ইরাক যুদ্ধে যাবার বিষয়টিকে অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল তার ওপর।
এর ১১ বছর আগে উপসাগরীয় যুদ্ধের প্রাক্কালে প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডাব্লিউ বুশকে সাদ্দাম হোসেনের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অনুমোদনের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন বাইডেন।
ওই সময়ে বাইডেনের হুশিয়ারি স্বত্ত্বেও উপসাগরীয় যুদ্ধের পক্ষে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং ওই যুদ্ধে অল্প সংখ্যক আমেরিকান মারা যায়।
এরপর থেকে বাইডেনকে পররাষ্ট্র ও জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতির ক্ষেত্রে দুর্বলচিত্ত বলে তুলে ধরা শুরু হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, ওই ভোট নিয়ে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হওয়ার পরবর্তী কয়েক বছর বাইডেন আন্তর্জাতিক বিষয়ে কট্টর অবস্থান দেখাতে শুরু করেন। এর মধ্যে বলকান গৃহযুদ্ধে আমেরিকান অবস্থান, ইরাকে বোমা হামলা এবং আফগানিস্তানে দখলদারিত্ব কায়েমের প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করে।
প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ ইরাকের কাছে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র আছে এই অভিযোগে যখন ইরাকে নতুন করে যুদ্ধ শুরুর প্রস্তাব করেন, তখন বাইডেন তাতে জোরালো সমর্থন দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আমি মনে করি না এটা যুদ্ধ করার জন্য একটা হুজুগ, আমার বিশ্বাস এটা শান্তি ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে অভিযান।
বাইডেনের ইরাক যুদ্ধে সমর্থন নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাতা মার্ক ওয়েসব্রট বলেছেন, যেসব ডেমোক্র্যাট এই যুদ্ধ সমর্থন করেছিলেন, তাদের মনে হয়েছিল এই যুদ্ধ সমর্থন না করার ঝুঁকিটা হল, যুদ্ধটা যদি সফল হয়ে যায়, তাহলে তার থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার ক্ষেত্রে তারা পেছিয়ে পড়বেন।
তবে তার ওই সমর্থনের কারণে অনেক ডেমোক্র্যাট সমর্থকের সমালোচনার মুখে তিনি পড়েন।
বাইডেনের আত্মকথায় ২০০৭ সালে ইরাক যুদ্ধ নিয়ে অধ্যায়ের শিরোনাম দেন-‘আমার ভুল’। তিনি লেখেন- ‘তাদের আন্তরিকতা ও দক্ষতা আমি বুঝতে ভুল করেছিলাম।’
ইরাক যুদ্ধের পর তিনি বামপন্থার দিকে ঝোঁকেন। তিনি ইরাকে আমেরিকান সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধির বিরোধিতা করেন এবং সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনী জোরদার করার এবং ওসামা বিন লাদেনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর বিপক্ষে পরামর্শ দেন।
আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হওয়ার লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দেওয়ার পর তিনি ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে সৌদি আরবের প্রতি আমেরিকার সমর্থন বন্ধ করার পক্ষে মত তুলে ধরেন।
ইরানের সঙ্গে পরমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখা, জলবায়ু নিয়ে প্যারিস চুক্তি সমর্থন, চীনে মার্কিন স্বার্থ বজায় রাখা এবং ইউক্রেনের গণতান্ত্রিক সংস্কার উৎসাহিত করাসহ নানা বিষয়ে তিনি গত কয়েক বছর কংগ্রেসের ওপর চাপ দিয়েছেন।
তবে চীন ও ইউক্রেন নিয়ে বাইডেনের অবস্থানকে বিভিন্ন প্রচারণায় কড়া ভাষায় আঘাত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, বাইডেন চীনের বেশি ঘনিষ্ঠ এবং ইউক্রেন নিয়ে তার আগ্রহ মূলত ইউক্রেনে তার ছেলে হান্টারের ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষার খাতিরে।
Related News
মাস্ককে সরকারি দক্ষতা বিভাগের প্রধান পদে নিয়োগ দিলেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার গঠনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণRead More
পাকিস্তানে বরযাত্রীর গাড়ি নদীতে পড়ে নববধুসহ ১৪ জন নিহত
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের গিলগিট-বালতিস্তানের দিয়াম জেলায় বরযাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে গেলে নববধুসহ ১৪Read More