Main Menu

ব্রাহ্মণ-কন্যা হয়েও রোজা রাখছেন হিন্দু নারী!

ভারতে হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকারের বিরুদ্ধে যখন ধর্মীয় মেরুকরণের অভিযোগ উঠছে, তখন খোদ দিল্লিতেই ধর্মীয় সম্প্রীতির একটি অনন্য নজির সামনে এলো। হিন্দু ব্রাহ্মণ-কন্যা হয়েও রোজা পালন করে চলেছেন এক মহিলা। তার এই রোজা পালনের ঘটনায় এরই মধ্যে সর্বত্র সাড়া পড়ে গেছে।

সকল ধর্মের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে মুসলিম পবিত্র রমজান মাসে উপবাস পালন করছেন জানিয়ে ইতিহাসের স্নাতক ৫২ বছর বয়সী জয়শ্রী শুক্লা বলেছেন, ‘প্রেম, শান্তি এবং ভ্রাতৃত্ব বৃদ্ধি করার জন্য এটিই তার উপায়।’

তিনি আনাদুল এজেন্সিকে বলেছেন,পর্যবেক্ষক ও ফটোগ্রাফার হিসাবে ভারতের বৃহত্তম মসজিদগুলোতে একাধিকবার আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। আমি মসজিদে মুসলমানদের সাথে মিশে গিয়েছিলাম। তাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ আমাকে মোহিত করে। আমি মুসলিম সংস্কৃতির প্রেমে পড়ে যাই।

শুক্লা বলেন, ‘মসজিদে কেউ কখনো আমাকে জিজ্ঞাসা করেনি আমি কোন ধর্মের অন্তর্ভুক্ত। সন্ধ্যায় ইফতারের সময় লোকেরা আমাকে বাড়ি থেকে আনা খাবার সরবরাহ করত। তাদের এসব সংস্কৃতি আমাকে ছুঁয়েছে। আমি সেখানে সংখ্যালঘু ছিলাম, তবুও তারা আমার সাথে এত শ্রদ্ধা ও ভালবাসার আচরণ করেছে।’ ২০১৯ সাল থেকে রোজা রাখছেন বলেও জানিয়েছেন শুক্লা।

২০১২ সালের ভারতীয় সাধারণ নির্বাচনের বিজেপি জয়লাভের পরে তিনি ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় বিদ্বেষ এবং মেরুকরণের কারণে একটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন শুক্লা। বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা জরুরি ছিল। পরিবারের চাপ থাকা সত্ত্বেও তিনি রোজা পালন করছেন।

তার স্বামী, রাজেশ শ্রীবাস্তব একজন প্লেসমেন্ট অফিসার। গত বেশ কয়েক বছর ধরে উত্তর প্রদেশে তার পৈতৃক বাড়িতে ইফতার পার্টি করছেন। শুক্লা বলেছিলেন, ‘কেউ আমাকে সরাসরি জিজ্ঞাসাবাদ করেনি, তবে পরিবারের কিছু লোকজন অস্বস্তি বোধ করেন। যদিও আমি নিজের জায়গায় ধর্মভ্রষ্ট বা ধার্মিক কোনটাই নই। আমি একটি ব্রাহ্মণ পরিবার থেকে এসেছি, সুতরাং অস্বস্তি থাকবে এটাই স্বাভাবিক।’

শুক্লাকে কেউই রোজা রাখতে বা মুসলিম সংস্কৃতিতে আগ্রহী হওয়ার জন্য প্রভাবিত করেনি। এই বছর করোনভাইরাস লকডাউনের কারণে শুক্লা তার মুসলিম ড্রাইভারের সাথে রোজা করছেন এবং পুরো মাস রোজা রাখবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি মনে করেন এটি, সম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সেতু নির্মাণে এবং অন্য সংস্কৃতিকে আরও ভালভাবে বুঝতে সহায়তা করে।

সূত্র কালের কন্ঠ






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *