সিলেটের চা বাগানগুলোতে ফের কর্মচাঞ্চল্যতা

টানা ১৯ দিনের আন্দোলন শেষে চিরচেনা দৃশ্য ফিরেছে সিলেটের চা বাগানগুলোতে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর আজ রবিবার দুপুর থেকে বাগানগুলোতে কাজ শুরু করেছেন চা শ্রমিকরা। তবে ১৪টি বাগানে আজ সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় এসব বাগানে কাল থেকে কাজ শুরু করবেন শ্রমিকরা। আজকে মালনীছড়া, লাক্কাতুরাসহ ৯ বাগানে কাজ শুরু হয়েছে।
এদিন দীর্ঘ দিন আন্দোলনে থাকার পর গতকাল চেনা পরিসরে ফিরতে পেরে শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তি দেখা গেছে। কর্মক্ষেত্রে ফিরে কাজ করতে পারায় প্রত্যেকের চোখে-মুখে আনন্দের অনুভূতি লক্ষ্য করা গেছে। সকালে সিলেট নগরের মালনিছড়া চা বাগান ও দলদলি চা বাগান ঘুরে দেখা গিয়েছে এমন চিত্র।
চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, ‘চা বাগানে অচলাবস্থার অবসান ঘটেছে। সকাল থেকে বেশ কয়েকটি বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছু বাগানে আজ সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সেগুলোতে কাজে যাচ্ছেন না শ্রমিকরা, সে সকল বাগানের শ্রমিকরা আগামীকাল সোমবার থেকে কাজে যোগ দেবেন। এছাড়া সকাল থেকে কিছু শ্রমিক দলে দলে আনন্দ র্যালি করে কাজে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
বাংলাদেশ শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘মজুরি ১৭০ টাকা প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আমরা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে মেনে নিয়েছি। তবে শ্রম আইনের সংশোধন ও জমিজমা সংক্রান্ত আরও বেশ কিছু দাবিদাওয়া বাস্তবায়ন চাই আমরা।’
প্রসঙ্গত, গত ৮ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন তারা। ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার আশ্বাসে গত সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে শ্রমিকদের একাংশ আন্দোলন প্রত্যাহার করে কাজে ফেরে। আরেক অংশ আন্দোলন অব্যাহত রেখেছিলেন। এদিকে চা শ্রমিকদের টানা ধর্মঘটে সারাদেশের বাগান থেকে চা-পাতা উত্তোলন, কারখানায় প্রক্রিয়াজাত ও উৎপাদন বন্ধ থাকে। এতে স্থবির হয়ে পড়ে দেশের চা শিল্প।
এমন পরিস্থিতিতে শনিবার চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর পাশাপাশি আনুপাতিক হারে তাদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও বাড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়। সবমিলিয়ে দৈনিক মজুরি হবে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।
গতকাল শনিবার বিকালে গণভবনে চা শ্রমিকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চা বাগান মালিকপক্ষের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের রবিবার থেকে কাজে ফেরার আহ্বান জানান।
পরে সন্ধ্যায় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, সব আলোচনার পর যেটি হয়েছে-সেটি হলো শ্রমিকদের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ করে দিয়েছেন ১৭০ টাকা। চা বাগান মালিকপক্ষের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহ আলম। এরপরে কাজে ফেরার আশ্বাস দেন চা-শ্রমিকরা।
Related News
সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ একটি সমাজকে সুন্দর ও পরিশীলিত করতে পারে, ড. তাজ উদ্দিন
লিডিং ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন বলেছেন, সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ একটিRead More
সিলেটে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব: সুষম উন্নয়নের স্বার্থে সঠিক জরিপ ও তথ্য প্রদানের বিকল্প নেই
পোভার্টি ম্যাপিং এর উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের দরিদ্র অঞ্চলগুলোকে চিহ্নিত করে অঞ্চলভিত্তিক সুষম উন্নয়নের পথ সুগমRead More