চিত্রনায়িকা শিমুর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার
চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুর (৪০) খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে কেরানীগঞ্জের হযরতপুর সেতুর পাশে দুটি বস্তায় তার দেহের দুটি অংশ পাওয়া যায়। তখন পরিচয় শনাক্ত না হলেও রাতে স্বজনরা নিশ্চিত করেন লাশটি শিমুর।
স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে শিমু রাজধানীর গ্রিনরোড এলাকার বাসায় থাকতেন। রোববার সকালে তিনি বাসা থেকে বের হন। তার মোবাইল বন্ধ থাকায় ওই রাতে কলাবাগান থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন স্বজনরা। এক দিন পরই তার খণ্ডিত লাশ পাওয়া গেল।
শিমু চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্য ছিলেন। আসন্ন নির্বাচনে ১৮৪ জনের সঙ্গে তার সদস্য পদ স্থগিত করা হয়। এ নিয়ে স্থগিত হওয়া অন্য সদস্যদের সঙ্গে তিনি বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে আন্দোলনে সরব ছিলেন। তার স্বজনরা বলছেন, তাকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশও বলছে, শিমু পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি আবদুস সালাম গণমাধ্যমকে বলেন, সোমবার দুপুরে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হযরতপুর সেতুর পাশ থেকে দুটি বস্তা উদ্ধার করা হয়। সেগুলো খুলে এক নারীর খণ্ডিত দুটি টুকরা পাওয়া যায়। পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় লাশটি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। রাতে স্বজনরা মর্গে গিয়ে নিশ্চিত করেন, লাশটি অভিনেত্রী শিমুর।
ওসি বলেন, শিমুকে অন্য কোথাও ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। এরপর লাশটি টুকরা করে দুটি বস্তায় ভরে গুম করার জন্য সেতুর পাশে ফেলে রাখা হতে পারে।
শিমুর বড় ভাই শহীদুল ইসলাম খোকন জানান, রোববার সকাল ১০টার দিকে তার বোন গ্রিনরোডের বাসা থেকে বের হয়। শুটিংয়ের কাজে নিয়মিত বাসার বাইরে বের হওয়ায় তখন কারও সন্দেহ হয়নি। ১০টা ২৬ মিনিটের দিকে তার মেয়ে ফোন দিয়ে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পায়। তখনও তারা সন্দেহ করেননি। তবে সন্ধ্যা গড়ালেও বাসায় না ফেরায় এবং ফোন বন্ধ থাকায় তাদের সন্দেহ হয়। এর পরই সম্ভাব্য সব জায়গায় সন্ধান করা হয়। না পেয়ে রাতে কলাবাগান থানায় তারা জিডি করেন।
খোকন বলেন, বোনের নিখোঁজের খবর জানিয়ে তিনি এফডিসিতে চলচ্চিত্র সমিতিতেও গিয়েছিলেন। কোনো লাশ উদ্ধারের খবর পেলেই হাসপাতালগুলোতে ছুটে যেতেন। সোমবার রাতে জানতে পারেন, কেরানীগঞ্জ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তখনই তিনি থানায় ছুটে যান। সেখান থেকে মর্গে গিয়ে দেখেন, উদ্ধার করা লাশটি তার বোনের। কারা কী কারণে তাকে খুন করল, তা বুঝতে পারছেন না।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান জানান, শিমুর ভাই সন্ধ্যায় সমিতিতে এসেছিলেন। তখনই তারা তার নিখোঁজের খবর পান। এরপর তিনি পুলিশের একজন কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে সহায়তা চান।
শিমুর স্বামীর নাম শাখাওয়াত আলী নোবেল। ১৭ বছর বয়সী এক মেয়ে ও ৮ বছরের এক ছেলে রয়েছে তাদের। শিমুর গ্রামের বাড়ি বরিশালে।
২০০৪ সালে সিনেমা থেকে বিরতি নেওয়ার পর থেকে নাটকে নিয়মিত অভিনয় করতেন শিমু। সাম্প্রতিক সময়ে ফ্যামিলি ক্রাইসিস নামে একটি ধারাবাহিক নাটকে কাজ করেছেন। চলচ্চিত্র সংশ্নিষ্টরা বলছেন, ১৯৯৮ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘বর্তমান’ সিনেমা দিয়ে রুপালি পর্দায় তার অভিষেক হয়। এরপর ২৩টির মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তার নায়িকা হিসেবে শেষ চলচ্চিত্র ২০০৪ সালের জামাই-শ্বশুর। ৫০টিরও বেশি নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনাও করেছেন তিনি।
Related News
সৎ মেয়ের বিরুদ্ধে অভিনেত্রী রূপালী গাঙ্গুলির মামলা
সৎ মেয়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করলেন ভারতীয় অভিনেত্রী রূপালী গাঙ্গুলি। ক্ষতিপূরণ বাবদ সৎ মেয়ের কাছেRead More
খাদ্যে বিষক্রিয়া, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে অভিনেত্রী
কালীপুজার রাতে প্রসাদ খাওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওপার বাংলার অভিনেত্রী অঙ্গনা রায়। পরিস্থিতি বেগতিকRead More