Main Menu

করোনাভাইরাস : কেরালায় বিপর্যয় ঘোষণা, ছুটি বাতিল

অনলাইন ডেস্কঃ তিরুবনন্তপুরম, ০৪ ফেব্রুয়ারি- গত পাঁচদিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ভারতের কেরালা রাজ্যে এই ভাইরাসকে ‘বিপর্যয়’ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা জোরদার করার লক্ষ্যে সোমবার বিপর্যয় ঘোষণা করে রাজ্যের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

কেরালার সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, রাজ্যে করোনার বিস্তার ঠেকাতে ৪০ হাজারের বেশি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, সরকারি কর্মচারী ও গ্রাউন্ড স্টাফ নজরদারি, রোগী শনাক্ত ও পরামর্শদানের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহানে এই ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র চীনেই ৪২৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া রোববার প্রথমবারের মতো চীনের বাইরে এই ভাইরাসে আক্রান্ত এক ফিলিপিনোর মৃত্যুর পর মঙ্গলবার হংকংয়ে একজনের প্রাণহানি ঘটেছে। চীনের সীমান্ত পেরিয়ে দুই ডজনের বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসকে গত সপ্তাহে বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ভারতে নতুন এই ভাইরাসে আক্রান্ত তিনজনই সম্প্রতি উহান থেকে দেশে ফিরে এসেছেন। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত তিন ভারতীয়কে কেরালার উত্তরাঞ্চলের কাসারাগড, মধ্যাঞ্চলের থ্রিসুর ও দক্ষিণাঞ্চলের আলাপপুঝা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই রাজ্যে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে ২৮টি আইসোলেশন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে; প্রত্যেকটি জেলায় দুটি করে।

এনডিটিভি বলছে, গত তিনদিনে চীন ফেরত প্রায় ৮০ জনের শরীর পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের শরীরে সরাসরি করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তাদেরকে হাসপাতালের আইসোলেশন কেন্দ্রে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে পুরো রাজ্যজুড়ে ২ হাজার ২৩০ জনের বেশি মানুষকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে; এদের মধ্যে অন্তত ৭৫ জন আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। এছাড়া বাকিদের বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

রাজ্যের মুখ্য স্বাস্থ্যসচিব রাজন খোবরাগেইড বলেছেন, বিশাল পরিসরে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের ৪০ হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এছাড়াও রাজ্য সরকারের পশুপালন, রাজস্ব-সহ অন্যান্য চল্লিশটি বিভাগ রয়েছে; যারা সমন্বয় করে কাজ করবে।

এনডিটিভি দেশটির সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ওই তিন শিক্ষার্থীর সঙ্গে উহান থেকে বিমানের ফ্লাইটে যারা দেশে প্রবেশ করেছেন; বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কাছে তাদের সবার তথ্য চেয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গত শনিবার পর্যন্ত চীন থেকে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ দেশে প্রবেশ করেছেন। দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে তাদের শরীর স্ক্রিনিং করা হয়েছে। সার্স গোত্রীয় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উৎসস্থল হিসেবে পরিচিত চীনের মধ্যাঞ্চলের উহান থেকে গত এক সপ্তাহে ৬ শতাধিক নাগরিককে ফিরিয়ে এনেছে ভারত। তাদের অধিকাংশই কেরালার বাসিন্দা এবং উহানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেকে শৈলাজা বলেন, উহানে অধ্যয়নরত অধিকাংশ শিক্ষার্থী কেরালার বাসিন্দা এবং এ কারণেই আমরা সম্ভাব্য প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সব ধরনের ব্যবস্থা আরও জোরাল করে তুলেছি। মানুষ আমাদের আহ্বানে বেশ ভালো সাড়া দিচ্ছে। কেউ যদি আমাদের আহ্বানে সহযোগিতা না করেন; তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

রাজ্যের কর্মকর্তারা বলেছেন, সোমবার করোনাভাইরাসকে ‘রাজ্যের জন্য বিপর্যয়’ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী শৈলাজা বলেন, সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সাতটি জেলার কালেক্টরদের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে প্রশিক্ষণের জন্য গিয়েছিলেন। এখন তাদের ডেকে পাঠানো হয়েছে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *