Main Menu

করোনা পরিস্থিতিতে ভ্যাট বৃদ্ধি না করার আহবান সিলেটের হোটেল-রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের

চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সিলেটের হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে ভ্যাট বৃদ্ধিতে চাপ প্রয়োগ না করার আহবান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রোববার বিকালে সিলেট চেম্বার অব কমার্স মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহবান জানান সিলেট জেলা রেস্তোরা মালিক সমিতি, ক্যাটারার্স গ্রুপ অব সিলেট এবং সিলেট হোটেল এন্ড গেস্ট হাউজ ওনার্স গ্রুপের নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে পৃথিবীর সকল কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও। ধ্বস নেমেছে সব রকম ব্যবসা-বাণিজ্যে। এর মধ্যে পর্যটন খাত সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত। আর এই পর্যটন খাতের অন্যতম অংশ হল হোটেল-রেস্টুরেন্ট। দেশে করোনার প্রকোপ বাড়লে এবং সরকার লকডাউন ঘোষণা করলে মার্চ মাসের শেষ দিকে সিলেট তথা দেশের সকল হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হোটেল ও রেস্টুরেন্টের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বাড়িতে চলে যান। আমরা তাদের সকল বেতন/ভাতা বন্ধকালীন সময়েও সাধ্যমত পরিশোধ করেছি। পাশাপাশি আমাদের পক্ষ থেকে এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানবিক সহযোগিতাও করেছি।
প্রায় ৫ মাসের বেশী সময় বন্ধ থাকার পর আমরা কিছু হোটেল-রেস্টুরেন্ট সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও স্বল্প আসন নিয়ে চালু করি। কিন্তু চালু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত ব্যবসা করোনা পরিস্থিতির আগের অবস্থায় ফিরে আসেনি। যার অন্যতম কারণ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকা, প্রবাসীদের আসা বন্ধ থাকা, পর্যটক কমে যাওয়া এবং পরিবার নিয়ে মানুষের বাইরে বের না হওয়া। এ অবস্থায় হোটেল-রেস্টুরেন্ট চালু করে লাভ করাতো দূরের কথা প্রতিষ্ঠানের খরচ বহন করাই সম্ভব হচ্ছেনা। বাকি জমে আছে বন্ধ থাকা ৫ মাসের হোটেল-রেস্টুরেন্টের ভবন ভাড়া, কর্মীদের বেতনসহ বিভিন্ন বিল। এগুলোও এখন আমাদের পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পাশাপাশি যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এখনও নিয়োগ দিতে পারিনি,তাদের নিয়োগ দেয়ার জন্যও তারা চাপ দিচ্ছে। এই সকল চাপ নিতে না পেরে একের পর এক হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমরা এখন টিকে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।
তারা বলেন, হোটেল-রেস্টুরেন্ট নিয়ে আমরা যখন টিকে থাকার সংগ্রাম করছি, এই পরিস্থিতিতে সিলেট কাস্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট থেকে আমাদের বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টসমূহে বাড়তি ভ্যাট প্রদানের জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন। আমাদের অন্তর্ভূক্ত অনেক হোটেল-রেস্টুরেন্ট মালিককে এককভাবে ডেকে নিয়ে বর্তমানের চেয়ে তিন-চারগুন ভ্যাট বাড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন। কোনো কোনো হোটেল-রেস্টুরেন্টে ভ্যাট কর্মকর্তারা অভিযানও পরিচালনা করছেন। যা এই সময়ে আমাদের টিকে থাকার সংগ্রামকে বাধাগ্রস্ত করছে। যা কোনো ভাবেই কাম্য নয়। আমরা সরকারের আইন কানুন মেনে ব্যবসা পরিচালনা করছি এবং যথাযথ ভ্যাট,ট্যাক্স প্রদান করে সরকারের রাজস্ব আহরনে সহযোগিতা করছি। এ ব্যপারে আমরা সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সকে লিখিতভাবে অবগত করি। কিছুদিন পূর্বে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাননীয় চেয়ারম্যান মহোদয় সিলেট সফরে এলে আমরা তাকেও এ বিষয়ে অবহিত করি। তারপরও ভ্যাট বিভাগ চাপ দিয়ে যাচ্ছেন।
সিলেট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনারের আমন্ত্রণে রবিবার “রাজস্ব ভাবনা ও অংশীজন সংলাপ” শীর্ষক সভায় আমরা যোগদান করি। কমিশনার মহোদয় প্রথমে বর্ধিতহারে ভ্যাট প্রদানের জন্য আহবান জানান এবং নির্দিষ্ট ২২টি রেস্টুরেন্টকে বর্ধিতহারে ভ্যাটের পরিমান উল্লেখ করতে বলেন। কমিশনার মহোদয়ের আলাপের প্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীবৃন্দ বর্তমান করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরে এই মহামারির সময়ে বর্ধিত হারে ভ্যাট প্রদান করা সম্ভব নয় বলে কমিশনার মহোদয়কে অনুরোধ জানান। এক্ষেত্রে সিলেট হোটেল এন্ড গেস্ট হাউজ ওনার্স গ্রুপের সভাপতি ব্যবসায়ীদের অভিবাবক সংগঠন হিসেবে সিলেট চেম্বার অব কমার্স, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স ও উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স এবং সিলেট জেলা রেস্তোরা মালিক সমিতি, ক্যাটারার্স গ্রুপ অব সিলেট এবং সিলেট হোটেল এন্ড গেস্ট হাউজ ওনার্স গ্রুপ এর সাথে আলাপ-আলোচনা করে ভ্যাটের সমস্যা সমাধানের আহবান জানান। সিলেট চেম্বারের সহ সভাপতি জনাব তাহমিন আহমদ আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সকল ব্যবসায়ীদের কোন ধরণের চাপ না দেয়ার আহবান জানান এবং তিনি জানুয়ারী ২০২১ সাল থেকে অথবা স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসার পূর্ব পর্যন্ত সরকারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সম্মিলিতভাবে কাজ করার প্রস্তাব দেন। এক্ষেত্রে কমিশনার মহোদয় কোন কিছুতে কর্ণপাত না দিয়ে বর্ধিত হারে ভ্যাট প্রদানের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন- করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য সরকার বিভিন্ন প্রনোদনা ঘোষণা করেছে। যদিও সিলেটের পর্যটন খাতের কোন ব্যবসায়ী জানা মতে এখনও কোন প্রনোদনা সুবিধা পান নাই। এমতাবস্থায় ভ্যাট কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। যেহেতু প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে ভ্যাটে রির্টান দাখিল করতে হয়। সুতরাং ভ্যাটে রির্টান দাখিলে কাস্টমস্, এক্সাইজ ও ভ্যাট কতৃপক্ষ কর্তৃক কোন হয়রানীর সম্মুখীন হলে আমরা বৃহৎ আকারে কর্মসূচী দিতে বাধ্য হব।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *