Main Menu

জাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ, আহত ৩০

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংলগ্ন এলাকা গেরুয়া এলাকায় ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে মারামারি ঘটনা ঘটে স্থানীয় এক যুবকের। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়রা মাইকে ঘোষণা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকর্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে গ্রামবাসী। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালান স্থানীয় কয়েকজন তরুণ। হামলার পরই তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন একাধিক শিক্ষার্থী।

বর্তমানে গেরুয়া এলাকায় পুলিশ আসলেও তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়েছেন। হাজার খানের গ্রামবাসী নারী পুরুষ শিশুসহ সকলে লাঠি নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া দিয়েছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছে। এতে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীর সাথে গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন দফায় দফায়। এ ছাড়া ওই এলাকায় বসবাসরত শিক্ষার্থীদের আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ক্রিকেট টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় গেরুয়া বাজারে শিক্ষার্থীদের চারটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় স্থানীয়রা।

প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। আমরা শিক্ষার্থীদের শান্ত রেখেছি। পুলিশের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন স্থানীয়দের শান্ত রাখেন।

এদিকে স্থানীয়রা কয়েক দফা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসীকে বের করা হয়েছে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়, ‘এলাকার মা বোনদের ইজ্জত বাঁচাতে আমাদের এলাকাকে রক্ষা করতে সবাই বেরিয়ে আসেন। যার ঘরে যা আছে নিয়ে আসেন।’

এদিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যদিও দেশের সকল কার্যক্রম চলছে স্বাভাবিক নিয়মে। শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দীর্ঘমেয়াদী সেশনজটে পড়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরাও। তাই অবিলম্বে হল খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম সচল করার দাবিতে আন্দোলনে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে সরকারের নির্দেশ ছাড়া এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নয়।

ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীরা এ সংক্রান্ত একটি ফেসবুক গ্রুপ (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলা চাই) খুলে আন্দোলনের ডাক দিয়ে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। সেখান থেকে ১ মার্চ আবাসিক হল খুলে দেওয়ার আল্টিমেটাম জানানো হবে। দাবি আদায় না হলে প্রয়োজনে সর্বাত্মক অবরোধসহ আরো নানাবিধ কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষাথীদের একটি পক্ষ ১মার্চ থেকে হলে অবস্থান করারও হুশিয়ারি দিয়েছেন। এই গ্রুপে ইতোমধ্যেই তিন হাজারের অধিক শিক্ষার্থী যোগ দিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের অনলাইন ক্লাস ঢিলেঢালাভাবে চললেও তৃতীয় ও স্নাতকোত্তর পর্বের চূড়ান্ত পরীক্ষা ঝুলে রয়েছে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষা অনলাইনে গ্রহণ করে প্রশাসন। যদিও বেশ কিছু বিভাগ চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল দিতে গড়িমসি করছে। এ ছাড়া অন্যান্য বর্ষের বিষয়ে কোনো আগ্রহ দেখায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।

পরীক্ষার দাবিতে তৃতীয় ও স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেওয়াসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও টিউশন থাকায় শিক্ষার্থীদের একটি বিশাল অংশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আশেপাশের এলাকাগুলোতে অবস্থান করছেন। যারা এতোদিন বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তারাও এসব এলাকায় আসতে শুরু করেছেন।

ফলে শিক্ষার্থীদেরকে উচ্চমূল্যের খাবারসহ অতিরিক্ত ব্যয় হিসেবে বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল বহন করতে হচ্ছে। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে চরম আবাসিক সংকট এবং বিভিন্ন কারণে শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের ঝামেলার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৬ থেকে ২২ জুনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা স্ব-শরীরে গ্রহণ করা হবে। এ সিদ্ধান্তেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *