Main Menu

তৃতীয় দফা বন্যায় তাহিরপুরে জনদুর্ভোগ

তৃতীয় দফা বন্যায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের লোকজন মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন। গত তিন দিন ধরে ভারী বর্ষণে ফলে নদী ও হাওরের পানি দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ার নিন্মাঞ্চলের প্রায় ৭০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে বানবাসি লোকজনের আগমন বৃদ্ধি পেয়েছে। দু দফায় বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে থাকা পরিবারগুলো যখন তাদের ঘরবাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল তৃতীয় দফা বন্যা দেখা দেয়ায় আবার তাদের সেখানেই থাকতে হচ্ছে।

গ্রামীণ অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে নতুন করে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

এদিকে, তাহিরপুর উপজেলায় টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে জাদুকাটা নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী এমরান হোসেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী সুব্রত দাস জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১টা পর্যন্ত ১৫০টি পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছে। এছাড়াও উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ১৮ হাজার ২৭০টি পরিবার বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে।

তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের আনোয়ারপুর সেতুর পূর্বাংশের অ্যাপ্রোচ নির্মানাধীন সড়ক ৪ ফুট পানির নিচে। ফলে জেলা শহরের সাথে সব ধরনের যানবাহন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক, তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, আনোয়ারপুর বাজার, উপজেলা সদরের তাহিরপুর বাজার থেকে ঠাকুরহাটি আখঞ্জি বাড়ি পর্যন্ত সড়ক, তাহিরপুর থানার সামনে থেকে রায়পাড়া সড়ক, যাদুকাটা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোর বসতবাড়ি ও তাহিরপুর লামা বাজার, শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের নতুন বাজার ও শ্রীপুর বাজারসহ ৩০টি বাজার তিন ফুট পানির নিচে রয়েছে।

এছাড়াও তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের জামালগড়, চিকসা, গোবিন্দশ্রী, গাজীপুর, টাকাটুকিয়া, দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের মারালা, সুলেমানপুর, নায়ানগর, রাজধরপুর, পৈন্ডপ, নোয়াগাঁও, সন্তোষপুর, ভবানীপুর, ইকরামপুর, পাঠাবুকা, লামাগাঁও, দুমাল, ভবানীপুর, বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগড়া, ঘাগটিয়া, পাঠানপাড়া, গড়কাটি, বালিজুড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণকূল, আনোয়ারপুর, পাতারি, তিওর জালাল, লোহাচুরা, বড়খলা, মাহতাবপুর, উত্তর বড়দল ইউনিয়নের রজনীলাইন, রাজাই,শান্তিপুর, চানপুর, দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের পুরান খালাস, সাদেরখলা, চতুর্ভজ,কাউকান্দি, জামলাবাজ, শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের, বাগলী, দুদের আউটা, ইন্দ্রপুর, মন্দিয়াতাসহ ৬০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।

বালিজুড়ি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য দক্ষিণকূল গ্রামের বাসিন্দা বাবুল মিয়া জানান, যাদুকাটা নদী উপচে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাজারের গলিটি দুই ফুট পানির নিচে পড়েছে। আর পাহাড়ী ঢলের পানির থোরে দক্ষিণকূল গ্রামের সকল রাস্তাঘাট ভেঙ্গে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। গ্রামের সকল পরিবারেই রান্নাবান্নার কাজ করতে পারছে না। বাধ্য হয়েই সকাল ও দুপুরে চিড়া আর গুড় খেয়ে খাবারের চাহিদা মিটিয়েছে।

শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের মানিকখিলা গ্রামের খোকন মিয়া হোসেন বলেন, গ্রামের প্রতিটি উঠান ও বসতঘরে পানি উঠার কারণে গোয়াল ঘরের গরু রাত-দিন পানির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। এতে করে গবাদিপশু মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ বলেন, উপজেলা দুর্যোগ কমিটির জরুরি সভা করেছি। বন্যা আক্রান্ত পরিবারগুলো ও আশ্রয় কেন্দ্রে বিশেষ নজরদারী রয়েছে। পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার নিন্মাঞ্চলের মানুষের বসতবাড়িতে পানি উঠছে, গ্রামীণ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শুকনো খাবারের প্যাকেট প্রস্তুত চলছে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *