Main Menu

শ্রমিক-ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের সংবাদ সম্মেলন: লোভাছড়া পাথর কোয়ারিতে শ্রমিক স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটাতে নীল নকশা বাস্তবায়ন হচ্ছে

কানাইঘাটের লোভাছড়া পাথর কোয়ারিতে শ্রমিক স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটাতে নীল নকশা বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রশাসন থেকে কোন উদ্যোগ না থাকায় শ্রমিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন এবং রাজস্ব খাতে চলছে হরিলুট। বিশেষ করে কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এম তমিজ উদ্দীনের সন্ত্রাসী বাহিনীর কারণে সাধারণ শ্রমিকরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেছেন লোভাছড়া লোড—আনলোড শ্রমিক—ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সমিতির সভাপতি মো. আখতার হোসাইন বলেন, সরকারের শ্রম অধিদপ্তর সিলেট আঞ্চলিক শাখা থেকে শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিষ্টেশন লাভ করে শ্রমিকদের স্বার্থে কাজ কররেছ এ সংগঠন। তিনি লোভাছড়া পাথর কোয়ারির শ্রমিকদের স্বার্থে ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে শ্রম আদালত থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, শ্রমিকের কর্মের সুযোগ প্রযুক্তির কারণে ছিনতাই করায় ৭০ লক্ষ ঘনফুট পাথর অপসারনের ৪ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা শ্রমিকের কল্যাণ তহবিলে ফেরত প্রদান, শ্রমের হিসাব থেকে ১ ইঞ্চি করে আত্মসাৎ করা ২৯ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ফেরত প্রদান, অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে জব্দকৃত নৌকা ফেরত দিতে হবে, উপকমিটির নির্বাহী সদস্য ইউএনও, এসিল্যান্ড ও তহসিলদারকে প্রত্যাহার করা, কর্মস্থলে সকল শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায়ে শ্রমনীতি বাস্তবায়নে প্রশাসনের সহযোগিতা থাকা, কোয়ারি এলাকা থেকে ফেলুটার এক্সেবেটর স্থায়ীভাবে বন্ধ করা ও প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে আত্মসাৎকৃত শ্রমমূল্য ৭ কোটি টাকা উদ্ধারে আাইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অবিলম্বে নদী তীরবর্তী পাথর পরিমাপ করে নিলামের জন্য পরবতীর্ দরপত্র আহবান করা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, দীর্ঘদিন থেকে কানাইঘাট উপজেলার লোভাছড়া পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় উপজেলার প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক বেকারত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুরছে। লোভাছড়া পাথর কোয়ারির নদী তীরবর্তী সরকার কর্তৃক জব্দকৃত পাথরগুলো ইতিমধ্যে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করায় কর্মসংস্থানের সুযোগে শ্রমিক জনগোষ্ঠি আনন্দিত হয়। গত ২৫ মে পাথর অপসারনের কার্যক্রম শুরু হলেও শ্রমিকের শ্রম অপরিহার্য থাকা সত্ত্বেও তাদের মর্যাদার কোন আনুষ্ঠানিকতা পায়নি। গত ৩ জুন স্থানীয় মুলাগুল নয়াবাজারে শ্রমিকদের কাজ না দেওয়া, ন্যায্য মজুরি না দেওয়া, বারকি নৌকা থেকে অবৈধভাবে রয়েলিটি আদায়ের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে। প্রায় ৪০ হাজার ঘনফুট পাথর থেকে প্রতিফুটে ২০ টাকা হারে ৮ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করে পিয়াস এন্টার প্রাইজ। পাথর অপসারণে সরকার কতৃর্ক ৪৫ দিন ধার্য থাকায় শ্রমিকের কাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাথর অপসারণে কর্মস্থলে শ্রমিকদের অনিরাপদ কর্ম পরিবেশ, ন্যায্য মজুরিসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে আলোচনার জন্য শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ী সমিতি বরাবর গত ১৫ জুন চিঠি প্রদান করা হয়। চিঠির প্রেক্ষিতে ২৫ জুন মূলাগুল ব্যবসায়ী সমিতি অফিসে আলোচনায় বসার সময় নির্ধারণ হলেও এর দু’দিন আগেই কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ—এম তমিজ উদ্দীন আহমেদের সন্ত্রাসী বাহিনী শ্রমিক—ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দকে ভয় দেখিয়ে পরিকল্পনা নষ্ট করে দেয়। শ্রমিকের ন্যায্য স্বার্থরক্ষায় কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন করলেও কোন প্রতিকার মিলেনি।
শ্রমিক নেতৃবৃন্দ আরো জানান, এই সংকট নিরসনে গত ৮ জুলাই সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা, কল—কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, আঞ্চলিক শ্রম অধিদপ্তরে দরখাস্তের প্রেক্ষিতে ১৮ জুন আবারও দুই ব্যবসায়ী সমিতির সাথে বৈঠকের সময় ধার্য হয়। কিন্তু পূর্বের ন্যায় তমিজ বাহিনীর সদস্য শাহাব উদ্দিনসহ ১২/১৩ জন সন্ত্রাসী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে হুমকি দেয়। এরই প্রেক্ষিতে ১৭ জুলাই কানাইঘাট থানায় আখতার হোসেন বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। বিষয়টির কোন প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ করেন। গত ৩১ জুলাই ভালুকমারা ঘাট এলাকায় জনৈক সাইফুল আলমের পাথরবাহী বলগেটে হামলা চালায় তমিজ উদ্দিনের নেতৃত্বে ১২০ থেকে ১৩০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী। সন্ত্রাসীরা শ্রমিক সুলতান, শহীদ ও সালমানকে বাগানের বাজারে রয়েলটি ঘাটের খুটির সাথে বেধে মারধর করে। এমন নির্মম ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে জানান শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ও সদস্য সালমান আহমদ উপস্থিত ছিলেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *