Main Menu

ব্যাংককের উদ্দেশে সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের দেশ ত্যাগ

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থেকে বুধবার মধ্য রাতে দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগের দুই মেয়াদের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। বুধরাত মধ্য রাতে ইমিগ্রেশনে প্রয়োজনীয় যাচাইবাছাই শেষে দেশ ছাড়ার সবুজ সঙ্কেত পেয়ে ব্যাংককের উদ্দেশে তিনি রাজধানী ঢাকা ত্যাগ করেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া ছাত্র নেতারা। তারা নিজেদের ফেসবুক পোস্টে ওই প্রতিক্রিয়া জানান।

এ বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বৃহস্পতিবার ফেরিফায়েড ফেসবুকের এক পোস্টে বলেন, ‘খুনিকে দেশ থেকে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, পুলিশ আসামি ধরলেও আদালত থেকে জামিন দেওয়া হয়। শিরীন শারমিনকে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে বাসায় গিয়ে পাসপোর্ট করে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল জানুয়ারিতে হওয়ার কথা থাকলেও মে মাসে এসেও শুরু হয়নি। আর আপনারা বলছেন আওয়ামী লীগের বিচার করবেন? তা ইন্টেরিম,এখন পর্যন্ত কী কী বিচার ও সংস্কার করেছেন?’

একইদিন আরেক পোস্টে তিনি বলেন, ‘শুধু এই মাসেই ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ও হাইকমিশন বাংলাদেশের সরকারি বেসরকারি ও সামরিক পর্যায়ে অন্তত তেইশটা মিটিং করেছে।’

এ সময় আওয়ামী লীগের বিষয়ে ভবিষ্যতবাণী করে বলেন, ‘লিখে রাখেন আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের সুযোগ করে দিতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিচারের নামে কালেক্ষপণ করা হচ্ছে। একটা পর্যায় গিয়ে বলা হবে এক সময়ের জন সমর্থিত রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা আমাদের কাজ নয়।’

এ সময় ইন্টেরিম থেকে দায়মুক্তি ঘোষণা করে তিনি বলেন, ‘যার এজেন্ডায় গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার নাই, যার এজেন্ডায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা নাই, তার সাথে আমরা নাই।’

আব্দুল হামিদের দেশত্যাগে আরো কঠোর প্রতিক্রিয়া জানান আরেক জুলাইযোদ্ধা আব্দুল হান্নান মাসুদ। তিনি ভেরিফায়েড ফেসবুকের এক পোস্টে অভিযোগ করে বলেন, ‘আব্দুল হামিদকে বিমানবন্দরে আটকানো হলো, তারপর নাকি চুপ্পুর অফিস থেকে ফোন কল পেয়ে ছেড়ে দেয়া হলো। এরপরও কি ইন্টেরিমকে জুলাই বিপ্লবীরা সাপোর্ট করে যাবে!!!’

এ সময় তিনি রাষ্ট্রপতি ও আওয়ামী লীগকে ব্যান করার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘সরি, হয় চুপ্পুকে সরান-লীগকে ব্যান করেন, আর না হয় নিজেরা সরে যান।’

জুলাইযোদ্ধা রিফাত রশিদ বলেন, ‘আব্দুল হামিদকে ইউনুস সরকার সেইফ এক্সিট কেনো দিলো? আমাদের সাথে, শহীদের রক্তের সাথে এই সরকার বেঈমানী করতেছে কেনো?’

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আরেক পোস্টে বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান যদি ব্যর্থ হয় তাইলে আমি মরে যাওয়ার আগে এটলিস্ট ওই অল্প কিছু কালপ্রিটের বেঈমানীর ইতিহাস লিখে যেতে চাই (অন্তত ওই একজনের) যারা ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য জুলাইকে কুক্ষিগত করার নেশায় জুলাইকেই বিক্রি করে দিয়েছে।’

জুলাইযোদ্ধা আশরাফ মাহদি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবীতে গণআন্দোলন গড়ে তোলার আর কোন বিকল্প পথ আমাদের সামনে নেই। প্রথমে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে। এরপর চূড়ান্তভাবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধের ঘোষণা আসতে হবে।

এ সময় রাজপথে নামার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আদালত থেকে কোন সিদ্ধান্ত আসার আগ পর্যন্ত গণঅবস্থান বা এরচেয়েও কঠোর কর্মসূচীর নিয়ে আমরা রাজপথে নামতে চাই।’

জুলাইয়ের অন্যতম যোদ্ধা শরীফ ওসমান হাদি এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘হামিদরেও বিদেশে পার কইরা দেয়া হইছে! বাকিরাও কয়দিন পর জেল থেকে বের হয়ে নির্বাচন করবে! যদি কাফনের কাপড় পরে জীবন বাজি রেখে সচিবালয় ঘেরাওয়ের চূড়ান্ত ডাক দেই আমরা, কে কে আসবেন? যারা নিশ্চিত করবেন, তাদের নামের তালিকা করে আমরা রাজপথে নামবো। এভাবে আর চলে না! আমরা বাঁইচা রইছি শহীদ হওয়ার জন্যই!’

তিনি আরেকটি পোস্টে বলেন, ‘ছাত্র-উপদেষ্টা স্যারেরা, হামিদকে ছেড়ে দেয়ার দায়ে আপনারা তিনদিনের মধ্যে পদত্যাগ করুন। এরপর আমরা ইন্টেরিমের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবো। হয় গণহত্যার বিচার ও ফ্যাসিস্ট লীগ নিষিদ্ধ হবে, নয়তো ইন্টেরিম বিদায় নেবে। এই দায় থেকে বাঁচার জন্য আপনাদেরকে আমরা সময় দিলাম। যদি সুযোগ গ্রহণ করে আমাদের কাতারে আসেন, তাইলে সম্মান পাবেন। আর যদি চেয়ার ছেড়ে দিতে কান্না পায়, তাইলে এরপর থেকে আপনাদেরকে ‘তুই’ বলা শুরু হবে! সাথে বঙ্গীয় গাইল।’

*নয়া দিগন্ত






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *