Main Menu

পশ্চিম দর্শা গ্রামকে সুরমা নদীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষার দাবীতে পানিসম্পদ উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলীপি

সিলেট সদর উপজেলার ৮ নং কান্দিগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম দর্শা গ্রামকে সুরমা নদীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষার দাবীতে সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ এর মাধ্যমে পানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলীপি প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর ) দুপুর ১২ টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পশ্চিম দর্শা গ্রামবাসী জেলা প্রশাসকের হাতে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয় দির্ঘ দিন যাবৎ সুরমা নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে কৃষি জমি, কবরস্থান, মসজিদ চলাচলের রাস্তা— ঘাট ক্ষতিগ্রস্ত। বিগত বিএনপি জোট সরকারের আমলে অল্প কিছু অংশে ব্লক ফেলায় গ্রামের কেন্দ্রীয় মসজিদ ও মাদ্রাসা রক্ষা হয়েছিলো। কিন্তু বাকি অংশে ব্লক ফেলার কথা থাকলেও সে কাজ আর সম্পন্ন হয়নি। যার ফলে সে অংশে ভাঙ্গন আরোও বড় আকার ধারণ করে।
পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছর আমলে অনেক যোগাযোগের পরও নদী ভাঙ্গন রোধে কোন প্রদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তার কারণ ছিলো এই এলাকাটি বিএনপি, জামায়াত সমর্থীতো। ১৬ টি বছর উন্নয়ন বঞ্চিত এই এলাকা শুধু নদী ভাঙ্গন নয়, রাস্তাঘাট, স্কুল মাদ্রাসা সহ সকল বিষয়েই বঞ্চিত।
গত জুলাই, আগস্টের ছাত্র— জনতার বিপ্লবে দেশ যেহেতু রাহুমুক্ত হয়েছে এবং জাতি দেশ প্রেমিক একটি অন্তর্বতীকালীন সরকার পেয়েছে। সে কারনে এই সরকারের প্রতি বুকভরা আশা ভরশা নিয়ে বসে আছেন তারা। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস অন্ততপক্ষে নদী ভাঙ্গন বিষয়টির ব্যাপারে সু—দৃষ্টি পড়বে মাননীয় উপদেষ্টার।
পশিম দর্শা গ্রামের প্রায় ৩ শত পরিবার সুরমা নদীর পাড়ে বসবাস করছে। যারা প্রতিনিয়ত নদী ভাঙ্গনে আতঙ্কিত এদের মধ্যে কয়েকটি পরিবারের বাড়ির অংশ ইতো মধ্যে নদীগর্ভে চলে গেছে। তাদের যাতায়াতের রাস্তাটি পর্যন্ত এখন আর নেই। অন্যের বাড়ি হয়ে তারা যাতায়াত করছেন। বৈদ্যুতিক খুটি উপড়ে পড়েছে এবং জ্বালানি গ্যাস লাইন বেরিয়ে পড়েছে। যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। শুধু তাই নয় এখানে একটি মসজিদ— মক্তব, শতবছরের একটি পুরোন শাহী ঈদগাহ, হযরত শাহজালাল (রহ.) এর সফরসঙ্গি হযরত খন্দকার (রহ.) এর মাজার রয়েছে। পাশাপাশি কৃষি জমিও রয়েছে। এই এলাকাটি সাক— সবজি চাষাবাদে উর্বর, সরকারি ভাবে ১ কোটি টাকা ব্যায়ে সেচ প্রকল্প বসানো হয়েছে। নদী ভাঙ্গনের ফলে সেই প্রকল্পটিও হুমকিত মূখে।
সবকিছু মিলিয়ে গ্রামবাসী প্রতিনিয়ত একটি আতঙ্কের মধ্যে সময় পার করছেন। নদীর ভাঙ্গনের মূখে যে সকল ঘরবাড়ি রয়েছে তাদের রাত্রে ঘুম নেই আতঙ্কের কারনে।
বিগত দিনে নদী ভাঙ্গন এলাকাটি ২—৩ বার পরিদশর্ন করে এসেছেন সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। কিন্তু কোন প্রদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সর্বশেষ গত ৩০ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ এর সাথে দেখা করে নদী ভাঙ্গনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
এদিকে সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষন করে গত ১ লা নভেম্বর নদী ভাঙ্গন এলাকায় একটি মানব্বন্ধন করেন গ্রামবাসী, যে সংবাদটি স্যাটেলাইট টিভি ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তার পরও কোন উপায়ান্তর না দেখে মাননীয় উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপিটি প্রদান করেন গ্্রমবাসী। স্মারকলিপির অনুলিপি সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছেও দেওয়া হয়েছে। এলাকাবাসী আশা করছেন এবার একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন কান্দিগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল মনাফ, সমাজসেবী জসিম উদ্দিন, এলাকার মুরব্বী মো. সুরুজ আলী, আবু কালাম, সাংবাদিক এম রহমান ফারুক, কান্দিগাঁও ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর আব্দুস সামাদ, রহমত খান, আজাদ আহমদ, জসিম উদ্দিন, রাসেল আহমদ, রাজু আহমদ প্রমুখ।

 






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *