Main Menu

মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ নগরবাসী ময়লা-আবর্জনা যথাস্থানে ফেলার আহবান

সিন্টু রঞ্জন চন্দ: শরৎ ও বর্ষা মৌসুমে মশার উৎপাত থাকলেও এবার হেমন্তের মাঝা-মাঝিতেই সিলেট নগরীতে বেড়েছে মশার উপদ্রব। নগরীর প্রায় সবকটি ওয়ার্ডেই বেড়েছে মশার এই উৎপাত। মশার যন্ত্রণায় দিনের বেলায় দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখতে হচ্ছে নগরবাসীকে। দিনের শেষে সন্ধ্যার পর পরই মশার উপদ্রব দিগুণ বেড়ে যায়। এবছর আবহাওয়া ব্যতিক্রম হওয়ায় শীতের শুরুতে গরম অনুভ‚ত হওয়ায় মশার উপদ্রব আরো ব্যাপক হারে দেখা দিয়েছে।
ফুটপাত থেকে শুরু করে বাসাবাড়িÑমহানগরীর সব জায়গায় এখন মশার উপদ্রব। ঘরে কয়েল জ্বালিয়ে ও মশা মারার ওষুধ স্প্রে করেও রেহাই মিলছে না। শিক্ষার্থীরা মশার যন্ত্রণায় ঠিকমতো পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারছে না।
বিষজ্ঞদের মতে, মশা একটি ক্ষুদ্র প্রাণী হলেও এটি ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ বেশ কয়েকটি মারাত্মক রোগের জীবাণু বহন করে। ডেঙ্গুতে আমাদের দেশে প্রতিবছর বহু মানুষের মৃত্যু হয়। মশা নিধন না করার ফলে সিলেট নগরীর বাসিন্দাদের মধ্যে এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নগরবাসীকে মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা করতে সিলেট সিটি করপোরেশনকে তাড়াতাড়ি তৎপর হতে হবে।
সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, বাসা-বাড়ির আঙ্গিনাসহ বাড়ীর আশেপাশে বর্জ্য স্ত‚প করে জমা রাখা, আবর্জনা ও নালা-নর্দমাগুলো পরিস্কার-পরিছিন্নতার অসচেতনায় নগরীতে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে। মশার ওষুধ না থাকায় এত দিন অভিযান বন্ধ ছিল। চলতি মাসের ২০ তারিখের পর মশার ওষুধ কেনা হবে। শিগগির অভিযান শুরু হবে।
এদিকে নগরবাসীর অভিযোগ, সিসিকের মশক নিধন শাখার অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে মশক নিধন কার্যক্রমের কোনো সুফল আসে না। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে যারা মশার ওষুধ ছিটান তারা বেশিরভাগই অদক্ষ এবং কমবয়সী। যার ফলে কর্মীরা বাসার পিছনের ড্রেনে স্প্রে না করে বাসা বাড়ির সামনে ওষুধ ছিটিয়ে চলে আসেন। বেশির ভাগ এলাকায় সড়ক সংলগ্ন বাসাগুলোতেই মশার স্প্রে করা হয়। এলাকার ভিতরের বাসাগুলোতে স্প্রে করতে যান না সিসিকের কর্মীরা।
দক্ষিণ সুরমা শিববাড়ী বাজারে রাস্তার পাশে ঝুপড়ি চায়ের দোকানে প্রতিদিন চা খেতে আসেন মুন্না মিয়া। তিনি বলেন- গত কয়েকদিন যাবত দেখছি এখানে মশার উপদ্রব অনেক বেড়ে গেছে। পাশে ড্রেন রয়েছে। সেখানে ময়লা-আবর্জনা আটকে মশার বংশবৃদ্ধি হয়ে মশার উপদ্রব দেখা দিয়েছে। ফলে চায়ের দোকানের সামনেও দাঁড়ানো যায় না মশার যন্ত্রণায়। নগরীর বাসিন্দা ফারিদা বেগম বলেন, বেশ কিছুদিন থেকেই মশার উৎপাত বেড়েছে। এসব মশায় কামড়ালে শরীরে ছুলকানো শুরু হয়। তার উপর আমাদের বাসার পাশেই বড় ড্রেন। এই কয়দিন যাবত দিনের বেলায়ও মশারি টানিয়ে বাচ্চাদেরকে ঘুম পাড়িয়েছি। ছোট বাচ্চাদের জন্য আরও বেশি চিন্তা। এই মশার কামড়ে না আবার ডেঙ্গু হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলমের সাথে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি বলেন, যথা সময়ে মশা নিধনের ঔষধ কিনতে না পারায় ঔষধ প্রয়োগ করতে পারি নাই। এ মাসের ২০ তারিখের পর মশা নিধনের ঔষধ ক্রয় করে ওয়ার্ড ভিত্তিক মশা নিধনের কার্যক্রম শুরু হবে। তিনি বলেন, অসময়ে বৃষ্টির কারণে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। নগরীর জনগণের মধ্যে পরিস্কার পরিছন্নতার অভাব রয়েছে। যথা স্থানে ময়লা-আবর্জনা না ফেলে অনেকেই ছড়া-নালা বা ড্রেনে অপরিকল্পীতভাবে ফেলে রাখেন। ফলে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সিসিক তার অবস্থান থেকে যথাযত ভাবে মশার ঔষধ প্রয়োগ করবে। ছড়া-ড্রেন ও নালা নিয়মিত ভাবে পরিস্কার রাখবে সম্মানিত নাগরিকগণ। নিজের আঙ্গিনা ও তার আশপাশ পরিস্কার রাখবে এবং যথাস্থানে ময়লা আবর্জনা ফেলতে হবে। নগরীতে প্রচুর খালি প্লট, খালি জায়গা ও জঙ্গল-ঝোঁপ-ঝাঁড় রয়েছে সেই জায়গাতে আশপাশের বাড়ি-ঘর থেকে নিয়ম বহিভ‚তভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়। এ ব্যাপারে সবাইকে অধিক সচেতনতার আহবান জানিয়ে
ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম আরো বলেন, মশার উপদ্রব বৃদ্ধির কারণে জরুরী ভিত্তিতে আমরা লকাল কিছু ঔষধ ক্রয় করে মশা নিধন কার্যক্রম চালানো হবে বলে আমরা আশাবাদী।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *