নারীশিক্ষা বাড়লে কমবে জন্মহার, দাবি হাঙ্গেরির
উচ্চশিক্ষিত নারীরা বিয়ে করতে ও বেশি সংখ্যক সন্তানধারণে অনিচ্ছুক। তাই কমে যাচ্ছে দেশের জনসংখ্যা। পাশাপাশি, উচ্চশিক্ষায় নারীর সংখ্যা বেড়ে গেলে বৈষম্যের শিকার হবেন পুরুষরা। আর তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতি। সাম্প্রতিক একটি রিপোর্টে এমনটাই দাবি করল হাঙ্গেরি প্রশাসন।
শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি ও আনন্দবাজার।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন সম্প্রতি শিক্ষা ও সামাজিক অবস্থা নিয়ে সমীক্ষা চালায় একটি বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করে। তবে এত দিন গোপনেই ছিল সেই রিপোর্ট। বৃহস্পতিবার হাঙ্গেরির নেপজাভা সংবাদপত্রে ফাঁস হয়ে যায় সেটি।
সেখানেই বলা হয়েছে, দেশের উচ্চ শিক্ষায় ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে নারীদের সংখ্যা। শিক্ষাব্যবস্থায় নারীর সংখ্যাবৃদ্ধিকে কটাক্ষ করা হয়েছে ‘গোলাপি শিক্ষাব্যবস্থা’ বলেও। বিতর্কিত ওই রিপোর্টে এ কথাও বলা হয়েছে, নারী শিক্ষায়নের ফলে ‘মেয়েলি’ ভাবনাচিন্তার প্রভাব বেড়ে যেতে পারে সমাজে।
সমীক্ষা অনুসারে, উচ্চ শিক্ষিত মহিলারা তাদের জীবনসঙ্গীর শিক্ষাগত অবস্থা সম্পর্কে পুরুষদের তুলনায় বেশি পছন্দ করেন।
গবেষকরা লিখেছেন, যেখানে বিবাহিত দম্পতির শিক্ষাগত অর্জনে পার্থক্য রয়েছে, সেখানে কনে সাধারণত বরের চেয়ে বেশি শিক্ষিত হয়। যদি এই প্রবণতা চলতে থাকে, তাহলে উচ্চশিক্ষায় বৈষম্যের কারণে নারীদের বিয়ে করা এবং সন্তান ধারণের সম্ভাবনা কমে যাওয়ার কারণে জন্মের হার কমে যেতে পারে। অনেক ইউরোপীয় দেশের মতো, হাঙ্গেরিও কম জন্মহারে ভুগছে, যা দেশের ভবিষ্যত হুমকিস্বরূপ।
যদিও রিপোর্টে দেখা গেছে যে ছেলেরা মেয়েদের তুলনায় পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কম। পড়াশোনার বিপরীতে তারা অনান্য ক্রিয়াকলাপে নিজেদের ফোকাস করে।
বুদাপেস্ট ইউনিভার্সিটি অফ ইকোনমিক্সের বিট্রিক্স ফুজির নেতৃত্বে গবেষকদের মতে, পুরুষের বৈশিষ্ট্য এবং দক্ষতার অপর্যাপ্ত বিকাশের ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় এবং তা দেশের প্রতিযোগিতার জন্য ক্ষতিকর। তারা সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন এবং উদ্যোক্তা মনোভাবকে ‘পুরুষ বৈশিষ্ট্য’ হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে। গবেষণায় অন্য কোথাও লিঙ্গ বৈষম্যের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গির জন্য এর আগেও ইউরোপের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের তোপের মুখে পড়েছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। সমালোচনার মুখেও অবশ্য নিজের অবস্থানে অনড় এই নেতা। উল্টে ঘোষণা করেন, হাঙ্গেরিকে ‘অনুদার গণতন্ত্র’ হিসাবে গড়ে তুলতে চান তিনি। ২০১০ সালে ক্ষমতায় আসার পরই দেশের সংবিধানে একাধিক পরিবর্তন এনেছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, ধর্মের নামে হরেক রকমের নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিচ্ছেন অরবান। পুরুষতান্ত্রিকতার কট্টর সমর্থক বলেও সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে।
পরিসংখ্যান বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে নারী রাজনীতিবিদের সংখ্যার নিরিখে হাঙ্গেরি নীচের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। অরবানের ১৫-সদস্যের মন্ত্রিসভায় মাত্র একজন নারী রয়েছেন এবং হাঙ্গেরির আইন প্রণেতাদের প্রায় ১৩ শতাংশ নারী রয়েছে।
Related News
মাস্ককে সরকারি দক্ষতা বিভাগের প্রধান পদে নিয়োগ দিলেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার গঠনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণRead More
পাকিস্তানে বরযাত্রীর গাড়ি নদীতে পড়ে নববধুসহ ১৪ জন নিহত
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের গিলগিট-বালতিস্তানের দিয়াম জেলায় বরযাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে গেলে নববধুসহ ১৪Read More