Main Menu

এশিয়া কাপ: পাকিস্তান মানেই অনিশ্চয়তা আর ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প

আগামী শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে এশিয়া কাপ ক্রিকেট। টুর্নামেন্টে ফেবারিট দল পাকিস্তান। বিশ্লেষকরা বলেন, কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের থাকা মানেই চমক ও অঘটন থাকবেই। থাকবে অনিশ্চয়তা আর ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প।

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটটাও এমনই যে পাকিস্তানের খেলার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সাথে মানিয়ে গেছে।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আসার পর প্রথম দুই বিশ্বকাপেই সেরা দলগুলোর একটি ছিল পাকিস্তান, প্রথম দুই আসরে একটায় রানার আপ একটায় চ্যাম্পিয়ন।

পরিসংখ্যান পাকিস্তানের পক্ষে
মাঝে ১২ বছর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খুব একটা ভালো করেনি দলটি। তবে ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই পাকিস্তান আছে দারুণ ফর্মে।

এই সময়ের মধ্যে পাকিস্তানই সবচেয়ে সফল টি-২০ দল।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরে তিনটি সিরিজের দুটিতেই জয় পেয়েছে।

১৩ ম্যাচ খেলে ১১টিতে জয় পেয়েছে গত বছরের অক্টোবর থেকে।

এই সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শীর্ষ কোনও দলেরই জয়ের অনুপাত এর চেয়ে বেশি না।

পাকিস্তান এখন টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ের তৃতীয় দল।

পাকিস্তানের শক্তি ও দুর্বলতা ‘টপ অর্ডার’

চলতি টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ে সবার ওপরে আছেন বাবর আজম ।

গত বছরের অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে বাবর ১৩ ম্যাচে ৪৮২ রান তুলেছেন, ১২৪ স্ট্রাইক রেটে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে বাবর আজম ছিলেন টপ পারফর্মার।

তিনি পাকিস্তানের বিশ্বকাপ ক্রিকেট ইতিহাসে ভারতের বিপক্ষে প্রথম জয় এনে দেন।

উদ্বোধনী জুটিতে বাবরের সাথে আছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান, এই সময়ে রিজওয়ানের গড় আর স্ট্রাইক রেট বাবর আজমের চেয়েও ভালো।

তিনি ১৩ ম্যাচে ৫৯৭ রান তুলেছেন, ৫৪ গড় ও ১২৮ স্ট্রাইক রেটে।

এই দু’জনই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাকিস্তানের হয়ে ওপেন করেন।

তবে পাকিস্তান দলের ব্যাটিংয়ের মূল শক্তি যেমন টপ অর্ডার, ঠিক তেমনি এই টপ অর্ডারই দলটিকে বড় টুর্নামেন্টে বড় ম্যাচেই ভুগিয়েছে।

রানের গতি একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে
বাবর ও রিজওয়ান যে গতিতে রান করেন শুরুতে, এই দু’জন উইকেটে সেট হয়ে আউট হয়ে গেলে পরের ব্যাটসম্যান যারা আসেন তারা একটা চাপে পড়েন।

যেমন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ১০ ওভার টিকেছিল ।

ইনিংসের মাঝপথে বাবর আজম আউট হয়ে যান, বাবরের ব্যাটে রান তখন ৩৪ বলে ৩৯, পাকিস্তানের স্কোরকার্ডে ১০ ওভারে ৭১।

শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান পুরো ২০ ওভার ব্যাট করে ১৭৬ রান তোলে।

কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তা শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট ছিল না, এক ওভার হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া।

তবে পাকিস্তানের মিডল অর্ডার বেশ শক্তিশালী, ফখর জামান, আসিফ আলি, শাদাব খান- এরা সবাই ১৩০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে বল পেটান।

এখানেই পার্থক্যটা তৈরি হয়ে যায়, বাবর আজম ও রিজওয়ান- দু’জনেরই স্ট্রাইক রেট ১৩০ এর কম।

ক্রিকেট পরিসংখ্যানবিদ মাজহার আরশাদ মনে করেন, ‘টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে অনেক সময়ই ৪০ বলে ৫০ এর চেয়ে ১ বলে ০ করে আউট হয়ে যাওয়া ভালো।’

বাবর আজমের দলও এবারে ভুগেছে পাকিস্তান সুপার লিগে, ১০ ম্যাচের মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে করাচি কিংস।

এখানেও বাবর আজমের পরিসংখ্যান একই রকম, টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি রানের মালিক, সবচেয়ে ভালো এভারেজ, কিন্তু স্ট্রাইক রেট ১২১।

২০২২ সালের সংস্করণে ছিল আরো কম, ১১৮।

পাকিস্তানের মূল শক্তি হবে বোলিং
ব্যাটিংয়ের যত দুর্বলতা সেটা কাটিয়ে ওঠার মতো শক্তি আছে পাকিস্তানের বোলিং লাইন আপে। ছন্দে থাকা পাকিস্তানের বোলিং লাইন আপ যে কোনো দলের টপ অর্ডার ছেঁটে ফেলতে পারে।

বরাবরের মতোই পাকিস্তানের পেস বোলিংই হবে মূল শক্তি। কিন্তু টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে দলটির মূল ফাস্ট বোলার শাহীন শাহ আফ্রিদির ইনজুরি।

পাকিস্তান ক্রিকেটের আদি হোক কিংবা আধুনিক সবসময়ই পেস বোলিং নির্ভর আক্রমণ সাজিয়ে এসেছে।

শাহনাওয়াজ দাহানি, যিনি ইয়র্কার স্পেশালিস্ট এবং নাসিম শাহ, তরুণ এই পেসার গতির ঝড় তুলতে পারেন।

হারিস রউফও আছেন স্কোয়াডে।

পাকিস্তানের এই দলটির বোলিংয়ে বৈচিত্র্যও আছে দারুণ- শাদাব খানের লেগ স্পিন, মোহাম্মদ নাওয়াজের বাঁহাতি স্পিন এখানে কাজে দেবে বলে মনে করেন মাজহার আরশাদ।

তবুও পাকিস্তান এশিয়া কাপে ফেভারিট
এশিয়া কাপে ভারত ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে কম জিতলেও এখানে টপ ফেভারিট দলগুলোর একটি পাকিস্তান।

একইসাথে এবারে খেলা হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে, বিশ্বের এই অঞ্চলে পাকিস্তানের সমর্থকও থাকবে অনেক।

মাঝে নিরাপত্তা ইস্যুতে দীর্ঘদিন এই মাঠগুলোতেই পাকিস্তান ঘরের মাটির ম্যাচগুলো খেলেছে, আবহাওয়া ও অন্যান্য আনুসঙ্গিক দিকেও পাকিস্তান এই মাঠে খেলে অভ্যস্ত।

পাকিস্তানের বোলারদের দুর্দান্ত ফর্ম এবং ভারতের রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির ফর্মের ঘাটতি দেখে এখনো পর্যন্ত মনে হচ্ছে পাকিস্তান ভারতের বিপক্ষে বিগম্যাচে জয় দিয়েই শুরু করতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতোই।

খেলাও হবে একই মাঠে, দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।

সূত্র : বিবিসি






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *