Main Menu

সমকাল সুহৃদ ও আল-খায়ের ফাউন্ডেশনের পক্ষথেকে চা বাগানের ৩শ’ শ্রমিক পেলেন শীতবস্ত্র

সমকাল সুহৃদ সমাবেশ ও আল-খায়ের ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘শীতার্তদের জন্য ভালোবাসার কম্বল ও চাদর পেয়েছেন সিলেট সদর উপজেলার বুরজান চা বাগানের ৩০০ দুস্থ ও অসহায় মানুষ। সোমবার বুরজান চা বাগানের খেলার মাঠে শীতবস্ত্র গ্রহন করতে বাগানের সব বয়সী শ্রমিকরা হাজির হন।
শীতবস্ত্র নিতে আসা সুদয় গোয়ালা বললেন, প্রথমবারের মত কেউ আমাদের শীতের কাপড় দিলো। খুব আনন্দ লাগছে। বয়স হয়েছে। তাই শীতও বেশি লাগে। কিন্তু গরম কাপড় কেনার শক্তি নাই। সাবিনা বেগম বলেন, মাঘের শীতের রাতে খুব কষ্ট হয়। এই কম্বল আর চাদর আমাদের জীবনের জন্য আর্শীবাদ।
শীতে জবুথবু হয়ে চেয়ারে বসেছিলেন বয়োবৃদ্ধ নরেশ নায়েক। বয়স জানতে চাইলে বললেন, পচানব্বইয়ের কম হবে না। এখানে না থেমে বলতে লাগলেন, ‘জীবনে কোনোদিন কেউ মায়া করে ইলান শৈলে চাদ্দর দেয়নাই (এভাবে শরীরে চাদর দেয়নি)। আজকে খুব খুশি লাগছে। আরামে ঘুমাইতে পারমু।’ গায়ে নতুন চাদর জড়িয়ে দিতেই চোখের কোনে আনন্দাশ্রæ চিকচিক করে উঠলো। কুলের উপর কম্বল রাখতেই দু’য়েক ফোঁটা অশ্রæ গড়িয়ে পড়লো গাল বেয়ে।
জীবন সায়াহ্নে তীব্র শীতে উষ্ণতার অবলম্বন পেয়ে নরেশ নায়েকের মত কুঞ্জলতাও আপ্লুত। মাঘের হাড় কাঁপানো শীতের দিনে নতুন কম্বল ও চাদর পেয়ে মায়া রানী দাস, হামিদা বেগম, অমলা নায়েকের সকলেই আবেগ সম্বরন করতে পারেননি। তারা বলেছেন, চা বাগানের শ্রমিকদের কথা কেউ ভাবে না। এদিন তাদের জীবনে ঈদ বা পূজোর আনন্দের অনুভূত নিয়ে এসেছে। হামিদা বেগম বলেন, শীতের জন্য রাতভর কুকড়ে থাকতে হয়। এবারে একটু আরামে ঘুমাতে পারব।
বুরজান চা বাগানের শ্রমিক মায়া রানী বলেন, নতুন কম্বল আর চাদর পেয়ে আমাদের খুব উপহার হলো। কম্বলের মানও খুব ভালো। আশপাশের বস্তিতে অনেকে কম্বল পেয়েছে। তবে এত ভালো কম্বল কেউ দেয়নি। চাদরটাও খুব ভালো। সুবল বলেন, চা বাগানের শ্রমিকদের জীবন আলাদা। আর বুরজান চা বাগান একটু ভেতরে হওয়ায় কেউ সাধারণত আসতে চায় না। আপনারা এতদূর কষ্ট করে এসে শীতের কাপড় দিয়েছেন। জীবনে প্রথমবার কম্বর ও চাদর দেওয়ায় ধন্যবাদ।
বুরজান চা বাগানের খেলার মাঠে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আল-খায়ের ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর তারেক মাহমুদ সজীব, সমকাল’র সিলেট ব্যুরো প্রধান চয়ন চৌধুরী, স্টাফ ফটো সাংবাদিক ইউসুফ আলী, সমকাল সুহৃদ সমাবেশ সিলেট জেলার সভাপতি সুব্রত বসু, সাধারণ সম্পাদক সজীব চৌধুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রহর দাস, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবীর দাস, দপ্তর সম্পাদক শহীদ আহমদ সাকিব প্রমুখ।
সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন বুরজান চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. কামরুজ্জামান ও জ্যেষ্ঠ সহ-ব্যবস্থাপক অচিন্ত্য অমিতসহ বাগানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বুরজান চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. কামরুজ্জামান বলেন, সমকাল সুহৃদ সমাবেশ ও আল খায়ের ফাউন্ডেশনের যৌথভাবে চা বাগানের শ্রমিকদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম প্রশংসনীয় উদ্যোগ। সমাজের অনেকে অসহায় ও হতদরিদ্রদের সহায়তায় এগিয়ে আসলেও চা শ্রমিকদের কথা অনেকে ভুলে যান।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *