Main Menu

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

আবহমান বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য ও লোকজ সংস্কৃতির অংশ পুতুল নাচ ও লাঠিখেলার আয়োজনে মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) উদযাপিত হয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বাঙালিয়ানার শিকড় অনুসন্ধানে এই দেশের মানুষের জীবনে লোকসংস্কৃতির প্রভাব সুদূরপ্রসারী। কিন্তু আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের ধারক-বাহক অনেক কিছুই আজ বিলুপ্তপ্রায়। সময়ের কাটা ঘুরে অনেক ঐতিহ্য কালের গর্ভে হারালেও বাংলা সংস্কৃতির অন্যতম নিদর্শন পুতুল নাচ ও লোকজ লাঠিখেলার এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন করা হয় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টায় বেলুন ও সাদা পায়রা উড়িয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ মতিয়ার রহমান হাওলাদার। সকাল ১১ টায় প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গন হতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। সিলেট শহরের টিলাগড় চত্বর প্রদক্ষিণ করে ক্যা¤পাসে এসে শোভাযাত্রাটি শেষ হয়।বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা শেষে বৈশাখী চত্বরে শুরু হয় লোকজ লাঠিখেলা। হারাতে শুরু করা লোকজ সংস্কৃতির এই অমূল্য নিদর্শন উপভোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সিলেটের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত দর্শকবৃন্দ। লাঠিখেলার পর প্রদর্শিত হয় বাংলার ঐতিহ্যবাহী পুতুলনাচ। কখনো সংলাপ, কখনও সংগীত আর কখনও বাদ্যযন্ত্রের তালে পুতুল নাচ দেখে বিমোহিত হন আগত দর্শকবৃন্দ।
কৃষিই কৃষ্টি, কৃষিই সমৃদ্ধি শ্লোগানকে সামনে রেখে ২০০৬ সালের ২ নভেম্বর তৎকালীন সিলেট ভেটেরিনারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। টিলাঘেরা সবুজ ক্যা¤পাসে বর্তমানে ৬ টি অনুষদ ও ৪৭ টি বিভাগের অধীনে প্রতিনিয়ত চলছে কৃষি শিক্ষা ও গবেষণার কাজ। সিলেট ও সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে আগাম ধান চাষের মাধ্যমে প্রান্তিক কৃষকদের জীবনমান উন্নয়ন, বছরব্যপী উৎপাদনশীল শিমের জাত উদ্ভাবন, কৃষি আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট তথ্য সরবারহ, গ্রীষ্মকালীন শিম ও টমেটোর জাত উদ্ভাবন, চায়ের গ্রেড নির্ণয়ের প্রযুক্তি উদ্ভাবন, সয়ংক্রিয় সেচযন্ত্র উদ্ভাবন, উলম্ব ভাসমান খামারে একক স্থানে অধিক শষ্য উৎপাদন, মাছের মড়করোধে ভ্যাক্সিন আবিষ্কার, রাতারগুল জলাবন ও হাওরাঞ্চলে দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় অভয়াশ্রম গড়ে তোলা, মৎস্যজীবীদের জীবনমান উন্নয়ন, মাৎস্যচাষে সয়াগ্রোথ বোস্টার নামক প্রোটিন পরিপূরক আবিষ্কার, স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সামুদ্রিক কুয়াশা নির্ধারণ ও স্থানান্তর কৌশলের মাধ্যমে সামুদ্রিক দূর্ঘটনা রোধ সহ কৃষির আরও অন্যান্য খাতে সফলতা পেয়েছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকবৃন্দ। বৈশ্বিক মহামারীর সময়েও আন্তর্জাতিক সূচক স্কোপাসে সূচিত বিভিন্ন জার্নালে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকবৃন্দের ১০০ এর অধিক গবেষণাপ্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ মতিয়ার রহমান হাওলাদার জানিয়েছেন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ২০ বছরের একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। সবার সহযোগিতা পেলে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অব এক্সসিলেন্স হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ কারণে করোনাকালীন সময়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কার্যক্রম ও অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় যাতে এগিয়ে যেতে পারে এ কারণে সবাই মিলে কাজ করে যাচ্ছেন। ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *