Main Menu

সিলেট প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন: বিয়ানীবাজার ট্রাস্ট নিয়ে ‘অসত্য’ বক্তব্য প্রত্যাহারের আহবান

বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকে’র বিরুদ্ধে দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ট্রাস্টের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন। মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, এনামুল হক চৌধুরী বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকে’র একজন সাধারণ সদস্য মাত্র। এনামুল হক লিখিত বক্তব্যে বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকে’র বিরুদ্ধে নানা মিথ্যাচার, মনগড়া তথ্য দিয়ে একটি অসত্য বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। এসব বক্তব্যকে মানহানিকর, অসৌজন্যমূলক, শিষ্টাচারবহির্ভূত ও অসত্য উল্ল্যেখ করে তা প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছেন দেলোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকে ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১১ সালে সংগঠনটি চ্যারেটি কমিশন ও কোম্পানি হাউসের রেজিস্ট্রেশন লাভ করে। এরপর ২০১১-১৩ এবং ২০১৩-১৫ সালে ট্রাস্টের পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরপর অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল না থাকায় মুহিব-দেলোয়ার-মামুন পরিষদ নির্বাচত হয়। ২০১৬ সালে ট্রাস্টের নির্বাচন আয়োজন করা হয়। ২০১৬-১৮ সালের পরিচালনা পরিষদের জন্য দেলোয়ার-মাহবুব-দিলওয়ার পরিষদের একটি প্যানেল জমা পড়ে। গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, চ্যারেটি কমিশন ও কোম্পানি হাউসের সকল নিয়ম অনুসরণ করে এ কমিটি দায়িত্বভার গ্রহণ করে। দেলোয়ার হোসেন বলেন, ট্রাস্টের ফ্রিডম ফাইটার প্রজেক্ট সম্পর্কে অভিযোগকারীরা ট্রাস্ট বাংলাদেশে জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে এরকম মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ দায়ের করে বৃটিশ চ্যারেটি কমিশনকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালায়। ফ্রিডম ফাইটার প্রজেক্টের বিষয়টি আমরা চ্যারেটি কমিশনকে ব্যাখ্য করি। এই প্রজেক্টের মাধ্যমে ট্রাস্ট বিয়ানীবাজার উপজেলার দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে শীতের কম্বল, রিক্সা ও হুইলচেয়ার বিতরণসহ বিভিন্ন সময়ে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। চ্যারেটি কমিশন আমাদের ব্যাখ্যায় আশ্বস্ত হয়।
তিনি বলেন, এরপরও অভিযোগকারীরা ক্ষান্ত হননি। একের পর এক সলিসিটর নোটিশের মাধ্যমে বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের বর্তমান পরিচালনা পরিষদকে হয়রানি করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সময় আমাদের সলিসিটর ফার্মের মাধ্যমে যথাসময়ে তাদের সলিসিটর নোটিশের সকল জবাব দেয়া হয়েছে। বারবার সলিসিটর ফার্মের মাধ্যমে পরপর কয়েকটি নোটিশ দিয়েছেন। তাদের এ অপতৎপরতার জন্য ট্রাস্টকে আইনগত বিষয়টি মোকাবেলা করতে বিরাট আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এছাড়াও ট্রাস্টের সাধারণ সদস্য এনামুল হক চৌধুরী আদালতে একটি স্বত্ব মামলা করেছেন। মামলায় ট্রাস্টের ৬ জন পরিচালককে বিবাদী করেন। সেখানে তিনি ট্রাস্টের নামে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে পরবর্তী নির্বাচিত বৈধ কার্যনির্বাহী সংসদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত পরিচালকরা যাতে কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারেন সে জন্য অন্তর্বতী আদেশ ও নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন। আদালত ৬ পরিচালক ও ব্যাংক ম্যানেজারকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ট্রাস্টের পক্ষ থেকে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট উপস্থাপন করে কারণ দর্শানোর যথাযথ জবাব দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালেও ট্রাস্টের অপর সদস্য আব্দুল করিম নাজিম বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের নামে ন্যাশনাল ব্যাংকের একাউন্টটি ফ্রিজ করার চেষ্টা করেছিলেন। তখনও আমাদের সলিসিটর ফার্ম ন্যাশনাল ব্যাংক, বিয়ানীবাজার শাখার ম্যানেজারকে আইনগত ব্যাখ্যা দিয়ে একটি পত্র প্রদান করে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত হয়। এরজন্য একাউন্ট ফ্রিজ করতে ব্যর্থ হন।
এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, এনাম চৌধুরী ট্রাস্টের দু’টি ফান্ড রাইজিং সম্পর্কে মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য প্রদান করেছেন। তিনি এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত আলমগীর হোসেনের জন্য ট্রাস্টের উদ্যোগে উত্তোলিত ৪ লাখ ২৩ হাজার ২৯২ টাকা আলমগীর চিকিৎসা তহবিলের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া রোকনুজ্জামান খান এর চিকিৎসা বাবদ খরচের হিসেবের সকল প্রমাণপত্র তাদের কাছে আছে বলেও দাবি করেন। তিনি বলেন এনাম চৌধুরীর আনা এসব তথ্য সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
তিনি বলেন, অসহায় ও গৃহহীন মানুষের মধ্যে গৃহ নির্মান করে দেওয়ার একটি প্রকল্প বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের আছে। ২০১৩-১৫ সালের কমিটির উদ্যোগে বিয়ানীবাজার উপজেলার গৃহ নির্মান প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১০টি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য ঠিকাদার হিসেবে এনাম চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান বৃটিশ বাংলা কনসোর্টিয়ামকে আমরা দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তিনি স্বত:প্রণোদিত হয়ে এ ঠিকাদারী নেয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি সঠিকভাবে ও যথাসময়ে কাজগুলো সম্পাদন করতে পারেননি। বিভিন্ন অনিয়ম করেন। পরবর্তীতে আমরা নতুন ঠিকাদার দ্বারা এ কাজগুলো সম্পন্ন করতে হয়েছে। এজন্য ট্রাস্টকে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। এ বিষয়ে লন্ডনে সালিশ বৈঠকে সব দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চান।
এছাড়া লন্ডনে বাংলাদেশিদের গর্ব ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেন্টার সম্পর্কে এনাম চৌধুরীরর আপত্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, এনাম চৌধুরী বলেছেন, ‘এই দুর্বৃত্ত চক্র বাংলাদেশ সেন্টার দখল করে নিয়েছে’। আমি দু’মেয়াদ ধরে বাংলাদেশ সেন্টারের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছি। এটি কোন চর নয়। এটি দখল করার কোন বিষয় নয়। আমি নির্বাচনের মাধ্যমে এ দায়িত্ব পেয়েছি। তার জানার কথা বৃটেনে চর দখল করার মতো কোন প্রতিষ্ঠান দখল করা যায় না। এরকম প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পেতে হলে সাংগঠনিক দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রয়োজন।
করোনাভাইরাস ও বৈশ্বিক মহামারি এবং প্রায় দীর্ঘ ১০ মাস ধরে লকডাউনের জন্য ২০২০ সালের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন বাতিল করতে হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অচিরেই দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন আয়োজন করা হবে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *