Main Menu

জমকালো আয়োজনে সিলেটে ৭ ভাষাসৈনিককে সম্মাননা

ভাষার মাসে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্মাননা জানানো সিলেটের হলো ৭ ভাষাসৈনিককে। ১৯৫২ তে বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে যারা নেমে এসেছিলেন রাজপথে তাদের মধ্য থেকে এ অঞ্চলের ৭ জনকে সম্মাননা জানানো হয়।

রোববার সন্ধ্যায় সিলেট সিটি করপোরেশন ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর যৌথ উদ্যোগে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়। নগরীর দরগা গেইট এলাকার একটি হোটেলের বলরুমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ভাষাসৈনিক হিসেবে সম্মাননা গ্রহণ করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

পর্যায়ক্রমে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদ (মরণোত্তর), সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান (মরণোত্তর), শিক্ষাবিদ ড. ছদরুদ্দিন আহমদ চৌধুরী (মরণোত্তর), অ্যাডভোকেট মনির উদ্দিন আহমদ (মরণোত্তর), কমরেড আসদ্দর আলী (মরণোত্তর) ও ডা. মো. হারিছ উদ্দিন (মরণোত্তর)-কে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

এই ছয়জনের পক্ষে তাদের পরিবারের সদস্যরা সম্মাননা গ্রহণ করেন। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের পক্ষে তার পুত্র আজিজুস সামাদ ডন, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের পরিবারের পক্ষে অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান, শিক্ষাবিদ ড. ছদরুদ্দিন আহমদ চৌধুরীর পক্ষে তার মেয়ে অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মনির উদ্দিন আহমদের পক্ষে আবু সালেহ মো. নাইম, কমরেড আসদ্দর আলীর পক্ষে পরিবারের সদস্য নাফিজা খানম আশা এবং ডা. মো. হারিছ উদ্দিনের পক্ষে তার পুত্র ডা. গালেহ আহমদ আলমগীর সম্মাননা গ্রহণ করেন।

জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী ও সাবেক রাষ্ট্রদূত, কবি মোফাজ্জল করিমকে সাথে নিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী, সিলেটটুডে’র প্রধান সম্পাদক কবির য়াহমদ ও সম্পাদক আব্দুল আলিম শাহ ভাষাসৈনিক ও তাদের পরিবারের হাতে ক্রেস্ট সম্মাননা স্কারক ও উপহারসামগ্রী তুলে দেন।

সম্মাননা গ্রহণের পর প্রতিক্রিয়ায় আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আমরা সবকিছুতেই দলবাজি করি। কিন্তু ভাষাসৈনিক সম্মাননার এই অনুষ্ঠানে এটা মোটেও লক্ষণীয় ছিল না। সম্মাননা প্রাপ্তদের মধ্যে আমিই একমাত্র জীবিত। তবে মরণোত্তর সম্মাননা প্রাপ্ত বাকি ছয়জনকে ভাল করে চিনতাম। তাদের সাথে এই সম্মাননা পেয়ে আমি গর্বিত।

অনুষ্ঠানের আলোচক জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, আমাদের ভাষা আন্দোলনে যারা সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন, ওই সময় জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, তাদের সম্মাননা জানানো আমাদের দায়িত্ব। তাই আয়োজক সিলেট সিটি করপোরেশন ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ধন্যবাদ।

আরেক আলোচক কবি মোফাজ্জল করিম বলেন, ভাষা আন্দোলন পরিপূর্ণতার দিকে যখন যাচ্ছিল তখন এর পেছনে একটি জেলার নাম খুবই প্রকট ভাবে শোনা যাচ্ছিল। সেই জেলার নাম সিলেট। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার এই আন্দোলন ছিল মূলত বাংলাকে স্বীকৃতির জন্য। আমাদের এত অর্জনের সূচনা হয়েছিল ৫২ তেই।

তিনি বলেন, দেশ এখন অনেক দিক থেকেই এগিয়ে গেছে কিন্তু জাতীয় অনেক বিষয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারি না।

এর আগে সন্ধ্যায় ওস্তাদ মধু খানের সেতার পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান। এরপর আয়োজকদের পক্ষে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সিলেটটুডে’র প্রধান সম্পাদক কবির য়াহমদ ও সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী। শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর সম্মাননা স্মারকগ্রন্থ ‘শব্দগান রক্তমিতা’র মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।

সবশেষে আয়োজকদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনে অংশ নেওয়া সিলেটের ৭জনকে আজ আমরা সম্মানিত করেছি। এ আয়োজন আমরা নিয়মিত করবো। আমরা ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ ও ৫২র ভাষা আন্দোলনে অংশ নেওয়াদের আমরা সম্মানিত করার এই প্রক্রিয়া ধারাবাহিক রাখবো।

এসময় মেয়র আরও বলেন, সিলেটে যার যার রাজনৈতিক আদর্শ ভিন্ন হলেও সিলেটের প্রশ্নে আমরা সবাই এক এবং অভিন্ন। অনুষ্ঠানে সিলেটের রাজনীতি, শিল্পসাহিত্য, ব্যাবসা-বাণিজ্য, শিক্ষাসহ বিভিন্ন অঙ্গনের ছয়শতাধিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *