Main Menu

চোরাচালানে বাঁধা দেয়ায় গোয়াইনঘাটে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা

বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ, চোরাচালানে বাঁধা ও লিজ বহির্ভুত এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় সিলেটের গোয়াইনঘাটে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও মামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও উপজেলার লেঙ্গুড়া ইউনিয়নের লেঙ্গুড়া গ্রামের ফয়সল আহমদের পুত্র আজমল হোসেন।
লিখিত বক্তভ্যে আজমল হোসেন বলেন, জুলাইয়ের ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলনের সময় সারা দেশের ন্যায় গোয়াইনঘাট উপজেলায়ও আমরা গণ আন্দোলন গড়ে তুলি। স্বৈরাচারী সরকারের পতনের দাবিতে একদফা আন্দোলনে আমরা গোয়াইনঘাটসহ শাবিপ্রবি এবং সিলেট শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থীদের সাথে অংশ নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করি। বিশেষ করে আমার নেতৃত্বে গোয়াইনঘাটের শিক্ষার্থীরা বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশ নেন। আর এটাই আজ আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বৈরাচারী সরকারের দুষরদের সাথে মিলে কতিপয় দুষ্কৃতিকারী আজ আমিসহ শিক্ষার্থীদের মিথ্যা মামলা, হামলা আর নির্যাতন করছে। আমাদের বিরুদ্ধে ভূয়া, মনগড়া খবর প্রচার করছে। নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে তারা নানা ফন্দি আটছে। বিশেষ করে গণ আন্দোলনে গত ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা এবং তার দোসররা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর গোয়াইনঘাটে কিছু দুষ্কৃতিকারী আবার নতুন করে অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। তারা সীমান্ত দিয়ে মাদক, চিনি, গরুসহ নানা অবৈধ পণ্য প্রতিনিয়ত দেশে নিয়ে আসছে। একইভাবে এই চক্র অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। বিশেষকরে ইজারা বহির্ভূত এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ টাকা ছিনিয়ে নিচ্ছে এই চক্র। গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজীব ও তার সহযোগীরা এই চক্রের মূল হোতা। রাজীব ৫ আগষ্টের পর পালিয়ে বিেেদশ চলে গেলে তার সহযোগীরা এখন এই অপকর্মের সাথে লিপ্ত রয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আজমল আরো বলেন, আমাদের এমন তৎপরতার কারনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে সেনাবাহিণীসহ অন্যান্য আইণশৃঙাখলা বাহিণীকে সাথে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিযান চালিয়ে গত ২৩ আগষ্ট অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে কয়েকটি নৌকা আটক করেন এবং বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেন। এরপর থেকেই এই দুষ্টু চক্র আমাদের উপর ক্ষেপে যায়। কারণ তারা রাজনৈতিক পরিচয় ভুলে বর্তমানে মিলেমিশে বালু উত্তোলন করছিল। এমনকি ঐ দিন অভিযানের পর শক্তিশালী এই চক্রের সদস্য রাসেল আহমদ, সরওয়ার আহমদ,সজিব আহমদ, পাবেল আহমদ, মাহমদ, কুদরত উল্লাহ ও সাহেদ আহমদ গংরা আমার উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। আমাকে পানিতে চুবিয়ে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আমি কোনমতে প্রাণ রক্ষা পাই।  এ ঘটনায় আমি তাদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। রহস্যজনক কারনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারও এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা এখনো গ্রহণ করেননি। এই ঘটনার পর দিন গত ২৪ আগষ্ট এই বাহিণীর মদদপুষ্ট আরো কিছু বহিরাগত লোক গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের ভেতর ডুকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্লাস থেকে বের করে হামলা চালায়। তাদের হামলায় অনেক ছাত্রছাত্রী আহত হন। সন্ত্রাসী হামলার এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। হামলাকারীরা হলো সুমন আহমদ, আহাদ আহমদ, সুজন আহমদ, আমিরুল আহমদ, রানা আহমদ, তানজিল আহমদ, রাজু আহমদ, বাবর আহমদ ও শাকিল আহমদ প্রমুখ। এদের অমানবিক হামলায় আমাদের বেশ কিছু ছাত্রী বোনেরা শ্লীলতাহানীরও শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাও এখনো এফআইআর করেনি পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে আজমল দাবী করেন তিনি কখনো নিজেকে সমন্বয়ক দাবী করেননি। অপরাধীরা তাদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারেি লপ্ত রয়েছে। তাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তিনি বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, সমন্বয়কবৃন্দ এবং সিলেটের আইণশৃঙ্খলা বাহিণীসহ সচেতন সিলেটবাসীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রতিষ্টানের শতাধিক শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক ও এলাকার মুরব্বীয়ানরা উপস্থিত ছিলেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *