Main Menu

সিলেটের ২০ হাজার প্রবাসীর মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়া ‘অনিশ্চিত’

করোনা মহামারির ধকল কাটিয়ে যখন বিদেশে বাংলাদেশের কর্মী যাওয়া শুরু করেছেন, তখনই তাদের দ্বিগুণ বিমানভাড়া গুনতে হচ্ছে।

নভেম্বর পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বিমানের টিকিটের দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। এখন তা ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকায় পৌঁছেছে।

আবার বেশি দাম দিয়েও বিমানের টিকিট মিলছে না। অস্বাভাবিকভাবে ভাড়া বৃদ্ধি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। এ অবস্থায় সিলেট বিভাগের অন্তত ২০ হাজার প্রবাসী মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন।

এদিকে টিকিটের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এয়ারলাইন্সগুলোর বিরুদ্ধে। অপরদিকে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্সি অব বাংলাদেশের (অ্যাটাব) অভিযোগ, ভাড়া বাড়ানোর জন্য এয়ারলাইনসগুলোই দায়ি।

জনশক্তি রফতানিকারকদের অভিযোগ, বিমান পরিবহন সংস্থা ও অ্যাটাব সিন্ডিকেট করেই বিমান ভাড়া বাড়িয়েছে।

জানা গেছে, যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাদের অনেকে দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণ দামে টিকিট কিনে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। এই সুযোগে একটি সিন্ডিকেট বাড়িয়ে দিচ্ছে টিকিটের দাম। এদের সাথে বিমানের মার্কেটিং বিভাগের একটি অসাদু চক্র জড়িত। কোনো যাত্রী টিকিটের জন্য বিমানের অফিস গেলে তাকে বলা হচ্ছে টিকিট নেই। একই সাথে তারা জানিয়ে দিচ্ছে কোনো এজেন্সির কাছে কোনো এয়ারলাইন্সের টিকিট পাওয়া যাবে। এ অবস্থায় অনেক যাত্রী বাধ্য হয়ে ওইসব স্থানে গিয়ে চড়া দামে টিকিট কিনছেন।

বিভিন্ন এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্বাভাবিকের তুলনায় ফ্লাইট সংখ্যা এখন অনেক কম। কিন্তু টিকিটের চাহিদা অনেক বেশি। এতে বিপাকে প্রবাসীরা। কাঠখড় পুড়িয়েও মিলছে না টিকিট। এই সুযোগে দুই থেকে তিনগুণ টিকিটের বাড়তি দাম রাখছে বিমান সংস্থাগুলো।

নভেম্বরে বাংলাদেশ থেকে দুবাই ও আবুধাবি রুটে আগে ভাড়া ছিলো ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। বর্তমানে এয়ারলাইনসগুলো ভাড়া বাড়িয়ে ৮৭ হাজার টাকা করেছে। ঢাকা থেকে ওমানের মাস্কাটের ভাড়া ৭২ হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে, যা ছিল ৩৫ হাজার টাকা। সৌদি আরবের ভাড়া নভেম্বরে ৪২ হাজার থাকলেও ডিসেম্বরে এসে তা দাঁড়িয়েছে ৭৫ হাজার টাকায়।

সৌদি আরবের জেদ্দায় যাবেন বিয়ানীবাজারের দুবাগের সৌদি আরব প্রবাসী আশফাক আহমদ।

তিনি জানান, আগে যেখানে ভাড়া ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা ছিল, এখন প্রায় ৮০ হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কাটতে হয়েছে। ছুটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে বাড়তি মূল্যে টিকিট কিনতে হয়েছে।

এদিকে সৌদি আরবের এয়ারটিকিটের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবাসী ছাড়াও বিপাকে পড়েছেন ওমরাহ পালনকারী যাত্রীরাও। অনেকে ওমরাহ পালনের জন্য প্রস্তুতি নিলেও এয়ারটিকিটের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় সৌদি আরব যেতে পারছেন না।

আটাব নেতারা জানান, বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রায় পাঁচ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। কিন্তু বর্তমানে এয়ারলাইনসগুলো প্রতিদিন তিন হাজারের বেশি যাত্রী বহন করতে পারছেন না। ফলে দুই হাজার যাত্রীর টিকিটের সংকট লেগেই আছে। এই অবস্থায় টিকিট সংকট নিরসনে সম্প্রতি আটাবের পক্ষ থেকে চারটি প্রস্তাব দিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্সি অব বাংলাদেশের (আটাব) সিলেট জোনের সভাপতি মোতাহার হোসেন বাবুল নয়া দিগন্তকে বলেন, নভেম্বর মাস থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন রুটে এয়ারলাইনসের ভাড়া অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর অন্যতম কারণ এয়ারলাইনসগুলোর সিন্ডিকেট।

তিনি আরো বলেন, অনেক সময় বেশি টাকা দিয়েও সিট পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশ বিমান তো নিচ্ছেই না, অন্যান্য এয়ারলাইন্সগুলো সিট দিচ্ছে না। তাহলে এখন আমাদের যেসব প্রবাসী ছুটিতে বা আটকে আছেন কিংবা ভিসার সময় বাড়িয়েছে, এ মানুষগুলো যেতে না পারলে তাদের পরিবারসহ দেশের বিশাল ক্ষতি হবে। এজন্য সরকারকে তা চিন্তা করতে হবে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *