শেখঘাটে জমি দখলের উদ্দেশ্যে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ
সিলেট নগরের শেখঘাটে মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের পরিবারের মৌরসী ও ক্রয়কৃত জমি দখলের উদ্দেশ্যে নানা মানহানী ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করছেন তারই আপন চাচাতো ভাই শওকত আলী বেলাল। একই সাথে তাদের ওপর হামলা ও মামলা দিয়েও নানাভাবে ঘরবাড়ি ছাড়া করার চেষ্টাও করছেন তিনি। এমতাবস্থায় তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন, অব্যাহত হুমকি ধমকির কারণে তারা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সিলেট সদরের শেখঘাটের ১৭৯ নম্বর বাসায় তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। সম্প্রতি তার চাচাতো ভাই শওকত গংরা তার মৌরসী ও ক্রয়কৃত জমি দখল করতে উঠেপড়ে লেগেছে। সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে তার চাচাতো ভাই শওকত আলী বেলাল গংদের করা অপপ্রচার মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেন দেলোয়ার।
লিখিত বক্তব্যে দেলোয়ার হোসেন বলেন, সদর উপজেলার মিউনিসিপ্যালিটি মৌজায় ২২ শতক পুকুর রকম জমির ভাগ ভাটোয়ারা করার জন্য ক্রয়সূত্রে উক্ত জমির অংশীদার শেখঘাট পঞ্চায়েত কমিটির সদস্য সাহেদ আহমদের উদ্যোগে সার্ভেয়ার এনে ভাগ করা হয়। এরপর ২০১৭ সালের ১৮ নভেম্বর তিনি মৌরসী ও উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্য জমির অংশিদার আব্দুল মন্নানের নিকট থেকে ১৯৮৭ খ্রি. ক্রয়সূত্রে ও বিবাদী শওকত আলী বেলাল গংদের নিকট থেকে ২০০৯ সনে ক্রয়কৃত জমির হিস্যা বুঝে পান। এরপর জমির অন্যান্য অংশিদারের মতো তিনিও তার প্রাপ্য অংশে মাটি ভরাট করে টিনের বেড়া দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন। কিন্তু জায়গা ভরাট করে সীমানা প্রাচীর দেওয়ার সময়ই শওকত গংরা বাধা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এর জের ধরে ২০১৯ সালের ২৭ আগস্ট শওকত আলী বেলাল, হুমায়ুন কবির ও বাবলু আহমদসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জন সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে তাকে ভয়-ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দিলে ওইদিনই তিনি কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি ডায়েরি করেন। এছাড়া শেখঘাট পঞ্চায়েত কমিটি ও কাউন্সিলর সিকন্দর আলীকেও বিষয়টি অবগত করে রাখেন। এদিন রাতে লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই ফুরকান আহমদ এসে বিবাদীদের সীমানা প্রাচীর ভাঙ্গার কারণে মৌখিকভাবে ভৎসর্না করেন এবং পঞ্চায়েত কমিটির সহায়তা নিতে মৌখিক পরামর্শ দেন। এ ঘটনার প্রায় সাতদিন পর শওকত আলী থানায় তার এবং তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে পাল্টা একটি ডায়েরি করেন। আর তাতে উল্লেখ করেন তারা ৩০ আগস্ট জমি জবর দখল ও হুমকি প্রদান করেছেন। অথচ এ দিন তিনি (দেলোয়ার) তার সাবেক কর্মস্থল সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে কর্মরত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের ২৬ আগস্ট রাতে কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে শওকত আলী বেলাল নিজে একটি সালিশনামা প্রস্তুত করে তাকে স্বাক্ষরের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। সালিসনামায় তিনি কোতোয়ালি মডেল থানা হতে জিডি প্রত্যাহার করা এবং ভ‚মির মাপযোগে সীমানা নির্ধারণের ব্যাপারে কোন আপত্তি থাকলে বিজ্ঞ আদালতের ধারস্থ হওয়া যাবে না এরূপ শর্ত দেওয়ায় তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে জানান তিনি।
লিখিত বক্তব্যে দেলোয়ার বলেন, সবশেষ গত ২৪ জানুয়ারি দুপুরে শওকত গংরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাকে মারতে আসেন। এ সময় তাকে বাঁচাতে তার বৃদ্ধা মা এবং মানসিক প্রতিবন্ধি বোন এগিয়ে এলে তারা তাদেরও মারধর এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় তার কাছে থাকা ৯০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়ার পাশাপাশি ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আর চাঁদা না দিলে তার ১০ বছর বয়সী ছেলেকে অপহরণ এবং পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি প্রদর্শন করে। এ ঘটনার পর তিনি জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করলে পুলিশ তার বাড়িতে এসে তাকে হাসপাতালে পাঠায়। এরপরই তিনি সুস্থ হয়ে ৩ ফেব্রæয়ারি মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এ মামলায় শওকত আলী কারাভোগের পর জামিনে বের হয়ে গত ১৯ এপ্রিল বিকেলে করোনাকালীন সরকারি বিধি নিষেধ ও রমজানের পবিত্রতা উপেক্ষা করে ১৫/২০টি মোটরসাইকেল যোগে ৩০/৩৫জন লোক নিয়ে আমার বসত বাড়ীর সংলগ্ন রাস্তাসহ এলাকায় শোডাউন করে। এতে আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে ও ঘটনা চলাকালীন সময়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়। বিষয়টি আমি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মোবাইল ফোনে অবহিত করি।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এর আগে ২২ ফেব্রæয়ারি শওকতে ভাই হুমায়ুন বাদী হয়ে তার ও তার ভাই ফজলুল করিমের নামে মামলা দায়ের করে। আর মামলায় উল্লেখ করে, একমাস আগে ২৪ জানুয়ারি তাদের বসত ঘরের পাশে হামলার সময় উল্লেখ করা হয়। কার্যত তা মিথ্যা এবং বানোয়াট। কেননা ওইদিনের শওকত গংরা তাদের ওপর হামলা করেছিল। আর এদিন তার ভাই ফজলুল করিম বাড়িতেও ছিলেন না। এছাড়া তাদের দায়েরকৃত মামলার অভিযোগপত্রে যেসব তথ্য প্রদান করেছে তাও মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করেছেন তিনি। তিনি বলেন, থানায় অভিযোগ করে কাবু করতে না পেরে শওকত পরবর্তীতে আদালতে তার ভাইকে দিয়ে মামলা দায়ের করে তাদের হয়রানী করছেন। তিনি বসত বাড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে থাকতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সহযোগিতা কামনা করেছেন।
Related News
স্থানীয় স্কাউট নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা: জুলাই- আগস্টে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমাদেরকে কাজ করতে হবে, আমিনুল ইসলাম
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সদস্য (১) ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই- আগস্টে যারা জীবনRead More
কোম্পানীগঞ্জে ব্যবসায়ীর জমি দখল, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেওয়া ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ব্যবসায়ীর জমি দখল, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেওয়া ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সিলেটRead More