Main Menu

শেষ ওভারে রোমাঞ্চ ছড়িয়ে জিতলো বাংলাদেশ

ম্যাচ একেবারেই হাতে ছিল জিম্বাবুয়ের। রোডেশীয়দের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৯ বলে ১৯ রান। জিম্বাবুয়ের সামনে হাতছানি দিচ্ছিল আরও একটি জয়। সাকিব আল হাসানের সেই ওভারে বল হালকা ঠেলে দিয়ে সিঙ্গেলের জন্য দৌড় দেন শন উইলিয়ামস। বোলিং প্রান্ত থেকে দৌড়ে গিয়ে বল ধরে সেকেন্ড বিলম্ব না করে স্ট্যাম্পে থ্রো করেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার।

সেই থ্রোতেই রান আউট হন উইলিয়ামস। আর তাতেই ঘুরে যাওয়ার কথা ছিল ম্যাচের মোড়, কিন্তু রেফারি নো কল করায় ফ্রি হিট পায় জিম্বাবুয়ে। দলটির সামনে জয়ের জন্য দরকার ছিল এক বলে চার রান। শেষ বলের সে রোমাঞ্চে জিম্বাবুয়ে ১ করায় ৩ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

ম্যাচের শুরুতে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশি দলনেতা সাকিব আল হাসান। কিন্তু অধিনায়কের সিদ্ধান্তের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি সৌম্য লিটন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে কোনো রান না তুলেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার সৌম্য সরকার। আর পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ১৪ রানে আউট হন লিটন দাস।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে ইতিবাচক ব্যাট করতে থাকেন ওপেনার শান্ত ও দলনেতা সাকিব। এ সময় দুজনের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৩ বলে ৫৪ রান। এরপর শেন উইলিয়ামসের করা বলে মুজারাবারি হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব।

এদিকে ওপেনিংয়ে খেলতে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি। বাঁ-হাতি এই ব্যাটারের ইনিংস থেমেছে ৭১ রানে। সিকান্দার রাজার করা বলে ক্রেইগ আরভিনের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ৫৫ বলে খেলা তার এই ইনিংসটি সাতটি চার ও একটি ছয়ে সাজানো। ১০ বলে ৭ রানে ফেরেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

এদিকে আফিফ হোসেন ধ্রুব খেলে যান শেষ পর্যন্ত। একটি চার ও একটি ছয়ে ২০ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন আফিফ হোসেন। আর ১ রানে মাঠ ছাড়েন নুরুল হাসান সোহান।

রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশি পেসারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি জিম্বাবুয়ের টপঅর্ডার ব্যাটাররা। পাওয়ার প্লেতেই হারিয়েছে চারটি উইকেট। ইনিংসের প্রথম ওভারে তাসকিনের আহমেদের করা বলে ক্যাচ আউট হন ওয়েসলে ম্যাধেভেরে। নিজের করা পরে ওভারে জিম্বাবুইয়ান দলনেতা ক্রেইগ আরভিনকে ফেরান তাসকিন। ৪ রানে ম্যাধেভেরে ও ৮ রানে আরভিন আউট হন।

এদিকে নিজের করা প্রথম ওভারেই জোড়া উইকেট তুলে নেন কাটার মাস্টার খ্যাত মোস্তাফিজুর রহমান। ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে সুম্বা ও পঞ্চম বলে আউট হন সিকান্দার রাজা। আউট হওয়া আগে সুম্বা ৮ রান করলেও রানের খাতায় খুলতে পারেননি রাজা। এছাড়া ১৫ রানে আউট হন চাকাভা।

৬৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলের হাল ধরেন শেন উইলিয়ামস ও রায়ান বার্ল। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দুজন মিলে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখান। গড়েন ৬৩ রানের জুটি। ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূর্ণ করেন উইলিয়ামস। সাকিব আল হাসানের করা ১৯তম ওভারে ব্যক্তিগত ৬৪ রানে রান আউট হন তিনি।

২০ তম ওভারের প্রথম বলে লেগ বাই থেকে আসে এক রান। স্ট্রাইকে যাওয়া ব্র্যাড ইভান্স ছক্কার চেষ্টায় ধরা পড়েন স্কয়ার লেগ বাউন্ডারিতে আফিফ হোসেনের হাতে। পরের বলে বাই থেকে উইকেটের পেছন দিয়ে ৪ চার পেয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। শেষ তিন বলে যখন ১১ রান চাই জিম্বাবুয়ের, মোসাদ্দেককে ফাইন লেগ দিয়ে ছক্কায় ওড়ান রিচার্ড এনগাভারা। টি-টোয়েন্টিতে যা তার প্রথম ছয়।

পরের বলে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে ছক্কার চেষ্টায় স্টাম্পড হয়ে যান এনগারাভা। শেষ বলে জমে সবচেয়ে বড় নাটকীয়তা। ব্লেসিং মুজারাবানিও উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় হয়ে যান স্টাম্পড। জয়ের উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ। দুই দল মাঠ ছেড়েও চলে যান। পরে রিপ্লেতে দেখা যায় স্টাম্পের আগে বল ধরেছেন কিপার নুরুল হাসান সোহান। ‘নো’ বল!

তাতে আবার দুই দলকে নামতে হয়ে মাঠে। কিন্তু শেষ বলে ৪ চারের সমীকরণ আর মেলাতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। মোসাদ্দেকের করা ফ্রি হিট বলটি ব্যাটেই লাগাতে পারেননি মুজারাবানি। শেষ বলের সে রোমাঞ্চে জিম্বাবুয়ে ১ করায় ৩ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান দুটি ও মোসাদ্দেক হোসেন একটি করে উইকেট নেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *