Main Menu

সিলেট অঞ্চলের নদী খননে বাজেটে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি

বছর বছর অকাল বন্যায় ফসলহানি থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি চায় হাওরের মানুষ। প্রতি বছর শতকোটি টাকার অবৈজ্ঞানিক হাওর রক্ষা বাঁধের প্রকল্প না নিয়ে নদী খননের মেগা প্রকল্প নিতে হবে। এজন্য আমরা আসন্ন বাজেটে বরাদ্দ চাই।

‘হাওরবাসীর বাজেট প্রত্যাশা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠানে এমনটি বলেছেন হাওরপাড়ের বাসিন্দারা।

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় সিলেটের জিন্দাবাজারের ইমজা মিলনায়তনে পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেটে হাওরের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুনতাহা রাকিব এবং পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা। তারা প্রস্তাবিত বাজেটে হাওরের জন্য আলাদা একটি অধ্যায় সন্নিবেশন করারও দাবি জানান।

লিখিত প্রতিবেদনে তারা উল্লেখ করেন -দু’দফা বন্যায় এ বছর হাওরাঞ্চলে অন্তত ৫০ হাজার পরিবার ফসলহানির শিকার হয়েছে। এসব পরিবারের মানুষ সারা বছরের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন এই বোরো ফসল হারিয়ে আজ দিশেহারা। হাওরের ফসল হারানো পরিবারগুলোকে ২০১৭ সালে বছরজুড়ে প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল ও ৫০০ টাকা করে প্রদান করা হয়। এ বছরও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে বড় ধরনের সহযোগিতা করা প্রয়োজন। একই সাথে আগামী মৌসুমের জন্য এদের বিনামুল্যে সার ও বীজ প্রদান করতে হবে। এজন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ থাকতে হবে।

তারা হাওর এলাকার নদীগুলো এবং কিছু বিল খননের জন্য ৫ বছর মেয়াদী ২০ হাজার কোটি টাকার একটি মেগা প্রকল্প প্রণয়নের দাবি জানিয়ে বলেন, এখাতে আগামী বাজেটে অন্তত ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন।

লিখিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, হাওর এলাকার উন্নয়নে সরকারের বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্প পরিকল্পনাধীন আছে। কিন্তু এসব প্রকল্পের অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এরমধ্যে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ থেকে ধর্মপাশার পথে হাওরে উড়াল সেতু প্রকল্প, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প, সুনামগঞ্জে সীমান্ত সড়ক প্রকল্প, স্থায়ী ক্লোজার নির্মাণ প্রকল্প উল্লেখযোগ্য। এসব প্রকল্পের জন্য এবারের বাজেটে বরাদ্দ প্রয়োজন।

তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে ছিল- দুর্যোগ প্রবণ হাওর এলাকার কৃষকদের জন্য শষ্য বীমা চালু করা, ধান চাল সংরক্ষণের জন্য হাওরে পর্যাপ্ত পরিমানে গোডাউন নির্মাণ, পরিকল্পিত ডেইরি ফার্ম ও হাস পালনের উপর জোর দেওয়া, হাওরের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষায় অধিক হারে বৃক্ষ রোপন, বজ্রপাতে মৃত্যুর হার কমাতে বজ্র নিরোধক দন্ড বসানো, গভীর হাওরে আশ্রয় গৃহ তৈরী, হাওর এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ানো এবং ছাত্রছাত্রীদের চলাচলের জন্য আলাদা নৌকার ব্যবস্থা করা।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার পক্ষ থেকে বিলগুলোর লিজ মানি কমিয়ে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বিল দখলে রাখার ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়। একই সাথে জেলেদের স্বল্প সুদে বা বিনা সুদে ঋণ প্রদানের দাবি জানানো হয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জলবায়ু ফান্ডে হাওরের ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী চলমান অস্থিরতায় সরকার স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে কৃষির উপর জোর দিয়েছে। হাওরে উৎপাদিত ধান ও মাছ বিদেশে রপ্তানী করে আমরা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বাড়াতে পারি। একই সাথে মজবুত করতে পারি আমাদের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির ভিত্তি। তাই এবারের বাজেটে হাওরের জন্য জুতসই পরিকল্পনা ও বরাদ্দ প্রয়োজন।’

এ অনুষ্ঠানে পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পিযুষ পুরকায়স্ত টিটুউপস্থিত ছিলেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *