Main Menu

জাফলংয়ে পর্যটকদের প্রবেশ ফি বন্ধে জেলা প্রশাসককে মন্ত্রীর চিঠি

সিলেটের গোয়ানঘাট এলাকার জাফলং পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের কাছ থেকে প্রবেশ ফি আদায় সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন ওই এলাকার সাংসদ এবং প্রবাসীকল্যান ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।

মঙ্গলবার সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে এই চিঠিতে তিনি এই অনুরোধ জানান। একইসঙ্গে তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন- ‘জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটি কর্তৃক পর্যটনস্পট সমূহের প্রবেশ ফি নির্ধারণ, আদায় এবং আদায়কৃত অর্থ ব্যবহার সংক্রান্ত কোন আইনানুগ বিধান জারি হয়েছে কি না তা জানা প্রৃয়োজন’।

প্রবাসীকল্যান মন্ত্রীর চিঠি পেয়েছেন জানিয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, উনার একটি চিঠি আমি পেয়েছি। তার চিঠি পাওয়ার আগেই জাফলং থেকে প্রবেশ ফি আদায় বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির পরবর্তী বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত প্রবেশ ফি আদায় বন্ধ থাকবে।

পর্যটন উন্নয়ন কমিটির পরবর্তী বৈঠক কবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি এখনও নির্ধারণ হয়নি। তারিখ নির্ধারণ হলে আপনাদের জানানো হবে।

সিলেটের অন্যতম পর্যটন এলাকা গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং। জাফলংকে বলা হয় প্রকৃতি কন্যা। সবসময়ই জাফলংয়ে পর্যটককদের ভিড় লেগে থাকে। আগে এখানে বিনামূল্যে পর্যটকরা প্রবেশ করতে পারলেও গত বছর থেকে ১০ টাকা প্রবেশ ফি চালু করে উপজেলা প্রশাসন। একটি উন্মু নদী ও পাহাড় দেখার জন্য প্রবেশ আদায়ের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বিশেষত গত ৫ মে জাফলংয়ের টিকিট কাউন্টারের কর্মীরা পর্যটকদের মারধরের পর এনিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পর্যটন মন্ত্রণালয় নির্ধারিত কার্যপরিধির বাইরে গিয়ে সিলেটর গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে পর্যটক প্রবেশে ফি নির্ধারণ করে জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটি। মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের বাইরে গিয়ে এভাবে ফি নির্ধারনকে অবৈধ ও এখতিয়ার বর্হিভ’ত বলছেন আইনবিশেষজ্ঞরাও।

মঙ্গলবার সিলেট-৪ জৈন্তাপুর-গোয়াইনঘাট-কোম্পানীগঞ্জ) এলাকার সাংসদ এবং প্রবাসী কল্যান ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী সাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ এপ্রিল বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সিলেটের জাফলং এ প্রবেশ ফি আদায়কে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছোসেবক ও পর্যটকদের মধ্যে এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারির দৃশ্যের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যা সিলেটের পর্যটনস্পটগুলো সম্পর্কে ভ্রমণ পিপাসুদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এরফলে দেশে ও বিদেশে এলাকার ভাবমূর্তি ভীষণভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে, যা কখনোই কাম্য নয়। তাছাড়া জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটি কর্তৃক পর্যটনস্পট সমূহের প্রবেশ ফি নির্ধারণ, আদায় এবং আদায়কৃত অর্থ ব্যবহার সংক্রান্ত কোন আইনানুগ বিধান জারি হয়েছে কি না তা জানা প্রয়োজন।

চিঠিতে ইমরান আহমদ আরও উল্লেখ করেন, ‘জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটি কর্তৃক পর্যটনস্পট সমূহের প্রবেশ ফি নির্ধারণ, আদায় এবং আদায়কৃত অর্থ ব্যবহার সংক্রান্ত নীতিমালা/বিধিবিধান নিম্নসাক্ষরকারীকে জরুরী ভিত্তিতে অবহিত করতঃ আমার নির্বাচনী এলাকার পর্যটনস্পট সমূহের (রাতারগুল ব্যতীত) পর্যটক প্রবেশ ফি সাময়িকভাবে বন্ধ করণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি। পরবর্তীতে সংশ্লিস্ট সকল পক্ষের সাথে আলোচনা করে সময়োপোযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’

জানা যায়, ২০২০ সালের ৩নভেম্বরর তৎকালীন জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সিলেট জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির এক সভায় জাফলংয়ে ১০ টাকা হারে প্রবেশ ফি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়।

তবে এরপরের বছর ২০২১ সালে ৮ নভেম্বর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ের উপ সচিব শ্যামলী নবী সাক্ষরিত এ প্রজ্ঞাপনে দেশের জেলাভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন কমিটি পুণর্গঠন করা হয়। পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ওই প্রজ্ঞাপনে পর্যটন উন্নয়ন কমিটির জন্য ১৩ টি কার্যপরিধি নির্ধারণ করে দিয়েছে। এই কার্য পরিধির কোথাও প্রবেশ ফি আদায়ের কথা উল্লেখ নেই। তারপরও গতবছর থেকে জাফলংয়ে পর্যটকদের কাছ থেকে প্রবেশ ফি আদায় শুরু হয়।

 






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *