মেহ্জাবীনের সেঞ্চুরি ও ভক্তের অভিনব উপহার
এই ঈদ যেন দুর্দান্ত কেটেছে টিভি পর্দার তারকা অভিনেত্রী মেহ্জাবীন চৌধুরীর। কাজ, কাজের মান ও দর্শক সাড়ায় এবারের ঈদের সেরা অভিনেত্রী তিনিই। সেই আনন্দে উচ্ছ্বসিত এ অভিনেত্রীর সাফল্যের মুকুটে যোগ হলো আরও এক নতুন পালক।
বাংলা নাটকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ কোটি ভিউয়ের মাইলফলক ছুঁয়েছেন এ সুপারস্টার। তিনিই প্রথম অভিনেত্রী, যার ৩৩টি নাটক কোটি ভিউয়ের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। যা এখন পর্যন্ত কোন অভিনয়শিল্পীর জন্য সর্বোচ্চ। এবার সেই অর্জনের সাথে যোগ হলো নতুন অর্জন, তা হলো- এ অভিনেত্রী এরইমধ্যে ৫ মিলিয়ন ভিউয়ের সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। তার অভিনীত ১০০টি নাটক ৫ মিলিয়ন ভিউ পার করেছে।
এমন অর্জনে মেহ্জাবীন চৌধুরী বলেন, ‘সত্যি বলতে কোন নাটক কত ভিউ হলো বা কি রেকর্ড হলো আমি সেসবের কোন খোঁজ রাখি না। আমার যারা ভক্ত আছেন তারা প্রতিনিয়ত আমাকে এসব তথ্য ও খবরগুলো জানায়। আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি, আমার ভক্তদের মেসেজ এবং অনেক অনেক পোস্ট। সেখান থেকে এগুলো জানতে পারি। রেকর্ড বা ইতিহাস কি না জানিনা, তবে আমি এটা দেখে খুশি হয় যে দর্শকরা আমার কাজ দেখেন, প্রশংসা করেন এবং নানাভাবে উৎসাহিত করেন। এতে করে কাজের প্রতি দায়িত্ববোধটা বাড়ে। আমি চাই তারা আমার কাজ দেখুক।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু কথা বলতে চাই আমাকে যারা ভালোবাসেন সেই ভক্তদের জন্য। তারা সবসময় আমার এত বেশি খেয়াল রাখেন এবং খোঁজ খবর রাখেন; আমি সত্যি অবাক হই। আমার কাজ সম্পর্কে আমি নিজেও মনে হয় এতটা জানি না, তারা যতটা জানে। তারা সবকিছুর খোঁজ খবর রাখে। কতটা নাটক করেছি, কোথায় কোন চ্যানেলে কয়টা গেলো, কি কি কাজ করেছি, কোনটা কত ভিউ হলো সেসব খবর তারা রাখে। তাছাড়া কত সুন্দর সুন্দর উপহার দেয় আমাকে বিভিন্ন সময়ে, আমি চমকে যাই।
নুজহাত নামের এক মেয়ে আমার অভিনীত নাটকগুলো থেকে ১০০টি নাটকের নাম নিয়ে কবিতা আকারে একটি চিঠি লিখেছে। কি চমৎকার সে চিঠি। এটা দেখে চমকে গিয়েছি। আমি তো এসব জীবনেও পারবো না। অথচ তারা কত সুন্দরভাবে এগুলো করে আমাকে উপহার দেয়। এসব দেখলে নিজেকে সত্যি অনেক ভাগ্যবতী বলে মনে হয়। আর ক’জন এমন ভালোবাসা পায়, আমার জানা নেই।
আমি সবসময় একটা কথা বিশ্বাস করি যে, পৃথিবীতে প্রত্যেকটা মানুষের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে তার ‘সময়’। কেউ যখন সে সময়টাই আমাকে দেয় তার মানে সে তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটা আমাকে দিয়েছে। যারা আমার পেছনে এতটা সময় করেন এবং আমার ভক্ত যারা আমাকে এতোটা ভালোবাসা সিক্ত করছেন প্রতিটা মুহুর্তে; তাদের সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সবার জন্য আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে ভালোবাসা জানাই।’
মেহ্জাবীন অভিনীত ৪৩৮টি নাটকের মধ্যে ১০০টি নাটকের নাম দিয়ে কবিতা আকারে সেই চিঠিটি লিখেন তারই এক ভক্ত নুজহাত জাহান তন্বী। তার সেই চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হলো—
‘বড় ছেলে’টা ‘বেকার’ হয়েও সাহস করে সে ‘কাঠগোলাপ’ ‘উপহার’ দিয়ে বলেছিল, ‘হাতটা দাও না বাড়িয়ে’, কেবল তোমার ‘এ মন আমার’। ‘এ সুইট লাভ স্টোরি’র মতো ‘প্রিয় তুমি’ শব্দটাকে ‘কেয়ার’ করে ‘সুখে দুঃখে’ ‘পাশাপাশি’ থাকার ‘মনে প্রাণে’ ‘আস্থা’ দিয়েছিল। ‘নিঃশব্দে সুর’–এ তার ‘বুকের বাঁ পাশে’ দীর্ঘদিন পর ‘আবার ভালোবাসার সাধ জাগে’। ‘শুধু তুমি’ই ‘তুমি যদি বলো’, ‘মায়ার বাঁধন’-এ রাখব ‘মহব্বত’। ‘তোমার ভালোবাসার জন্য’ কতটা ‘তোমার অপেক্ষায়’ থাকি ‘যদি তুমি জানতে’। এই তো সেদিনটায়, ‘কত দিন পর হলো দেখা’, তৎক্ষণাৎ দিনটির ‘নামকরণ’ করেছিলাম ‘অপ্রত্যাশিত একদিন’।
‘কাঠ পেন্সিলের কাহিনী’ লিখতে গিয়েই মনে হলো ‘এই শহরে ভালোবাসা নেই’ কিংবা ‘সব প্রেমের গল্প এক নয়’, নতুবা কেউ ধরার বাইরে ‘অধরা’। কখনো ভাবি, ‘শোক হোক শক্তি’; এভাবেই ‘স্বার্থপর’–এর মতো ‘ভালো থেকো তুমিও’। ‘সিদ্ধান্ত’ পরিবর্তন হওয়ার আগেই ‘স্বপ্ন দেখি আবারও’। মনে পড়ে যায়, তুমি আমার জীবনের ‘ফার্স্ট লাভ’ অথবা এটা আমার জীবনের ‘একটি অনাকাঙ্ক্ষিত প্রেমের গল্প’। ‘২২ শে এপ্রিল’ প্রথম তোমাকে দেখেছি, সেদিনই ‘তোমার জন্য মন’–এ অনুভব হলো। একটা কথা কখনো বলতে পারিনি, ‘আমার হৃদয় তোমার’, ‘তুমি আমারই’! আমার ‘লালরঙ্গা স্বপ্ন’–এ ‘হঠাৎ একদিন’ ‘তোমায় নিয়ে’ ‘মেঘের বাড়ি যাব’।
‘শিল্পী’র ‘রংতুলি ও নীল ভালোবাসা’য় আমার ‘অপরূপা’র ‘ছায়াছবি’তে ‘নীরবতা’ ‘দৃষ্টি’তে বলতে চাই, ‘ভালোবাসি আজও’। ‘আহা প্রেম’, কখনো কখনো ‘মজনু’ হয়ে তোমাকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হয়, ‘লায়লা তুমি কি আমাকে মিস করো’? কিন্তু ‘নৈব নৈব চ’, আমার ‘অসমাপ্ত’ ‘ভালোবাসার গল্প’–এ ‘এখনো আঁধার’। এখনো তুমি আমাকে ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ ভাব, কিন্তু আমার কাছে তুমি ‘মায়াপুরের মায়া’ এবং ‘আমার সবুজ পরী’, আর হ্যাঁ, তোমার সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো ‘মেমোরিজ’ হয়ে থাকবে। ‘প্রিয়তমেষু’, ‘বর্ষার একদিন’ না হয় টং দোকানে চা খাব আর ‘অবশেষে বৃষ্টি’তে দুজনে ভিজব। তোমার জন্য একটা ‘ইচ্ছে খাম’ রেখে দেব, তুমি সেটা পড়বে আর ‘মুক্তা ঝরা হাসি’ দিয়ে ‘গজদন্তনী’র মতো হাসবে। তোমার হাসিটুকু ‘অপেক্ষার ফটোগ্রাফি’র মতো ক্যামেরাবন্দী করব। সেটাই হবে আমার জন্য ‘পাওয়ার অব লাভ’ কিংবা ‘ম্যাজিক অব লাভ’।
তোমার জন্য লেখা ‘সবুজ চিরকুট’টি ‘রঙিন খামে ধুলোয় পড়া চিঠি’তে পরিণত হয়েছে। ঠিক তেমনি ‘শেষ চিরকুট’–এর গল্পটাও পড়ে আছে, ‘যে গল্পটা বলা হয়নি’। ‘কতটা পথ পেরোলে’ তোমাকে পাব জানি না। তবে একটা কথা, ‘গল্পটা তোমারই’, এমনকি তুমিই আমার ‘ড্রিম গার্ল’। ‘মেঘে ঢাকা আকাশ’টা যেদিন ‘মেঘলা’ ছিল অর্থাৎ ‘২৩শে শ্রাবণ’, সে সময়টা আমি ‘অবশেষে অন্য কিছু’ ভাবছিলাম, ‘চেনা অচেনা’ শহরে ‘নেই তুমি’। ভেবেছিলাম, ‘আর কোনো অপেক্ষা নেই’। ঠিক তখনই ‘সে দাঁড়িয়ে দুয়ারে’ আমার ‘ইশারার অপেক্ষায়’। বলে উঠল, আমি তোমাকে ‘ভুলতে পারি না’।
যাক, অবশেষে তার ‘মন বদল’ হলো। ‘আমার টুকরো প্রেমের টান’–এ আমাদের ‘পরিচয়’টা ‘বন্ধুত্ব ভালোবাসা কিংবা অন্য কিছু’তে ‘পরিণতি’ হলো। কী ‘আজব প্রেম’। আজ বুঝলাম, ‘ভালোবাসা এমনো হয়’। সব ‘কল্পনা’র ‘পিছুটান’ শেষে ‘শেষ পৃষ্ঠার গল্প’–এ আমার ভালোবাসা পূর্ণতা পেল।
এভাবেই ‘চিরদিন বেঁচে থাকুক আমাদের ভালোবাসা’। শুধু ‘ফ্রেমেবন্দী ভালোবাসা’য় নয়, বরং জীবনের ফ্রেমে তাকে ‘ফটো ফ্রেম’–এর মতো করে বাঁধাই করে রাখব।
মেহ্জাবীন জানান, লকডাউন শেষ হলে কাজে ফিরবেন। তবে এখনও কোনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। যেহেতু ঈদে একটা বাড়তি কাজের চাপ ছিলো তাই একটু ধীরে সুস্থেই কাজে ফিরতে চান। কোনো তারাহুড়ো নেই তার।
সৌজনেঃ বাংলাদেশ জার্নাল
Related News
সৎ মেয়ের বিরুদ্ধে অভিনেত্রী রূপালী গাঙ্গুলির মামলা
সৎ মেয়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করলেন ভারতীয় অভিনেত্রী রূপালী গাঙ্গুলি। ক্ষতিপূরণ বাবদ সৎ মেয়ের কাছেRead More
খাদ্যে বিষক্রিয়া, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে অভিনেত্রী
কালীপুজার রাতে প্রসাদ খাওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওপার বাংলার অভিনেত্রী অঙ্গনা রায়। পরিস্থিতি বেগতিকRead More