বসুন্ধরার এমডি আনভীরকে মুনিয়া হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতির বিরুদ্ধে ৫১ নাগরিকের বিবৃতি

কলেজছাত্রী মুনিয়া আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে অব্যাহতি দিয়ে পুলিশ আদালতের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ায় উদ্বেগ ও ক্ষোভ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৫১ নাগরিক। বিবৃতিতে আনভীরের অব্যাহতির ঘটনায় পুনঃতদন্তের দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘মামলার পর পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার তো দূরে থাক, এমনকি থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এমন তথ্য আমাদের জানা নেই। বিপরীতে বিচার চেয়ে আয়োজিত একটি নাগরিক সমাবেশে বাধা দেয়া, মামলার পর আনভীরের অবাধ চলাচল, মুনিয়ার বিষয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য, কুৎসা ও অবিরাম অপপ্রচার চালানো, মামলার বাদির বিরুদ্ধে নানা হয়রানিমূলক ঘটনা তদন্তকে প্রভাবান্বিত করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।’
এ সব পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলায় সুষ্ঠু তদন্ত হয়েছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার যথেষ্ট অবকাশ আছে বলে জানান বিবৃতিদাতারা।
তারা বলেন, ‘আমরা এই মামলার সুষ্ঠুভাবে পুনঃতদন্ত করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি এবং পুলিশের কাছে থাকা মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামতগুলোর (যেমন- মৃতের ডায়েরি ইত্যাদি) যেন যথাযথ ও ন্যায়ানুগ বিশ্লেষণ হয় তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। মামলার বাদিকে কোনো চাপের মুখে পদ্মা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চাকরিচ্যুত করেছে কিনা সরকারকে তাও খতিয়ে দেখতে অনুরোধ করছি। একইসাথে মুনিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং মামলার বাদিকে হয়রানি বন্ধ এবং তাকে ও তার পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা মনে করি মুনিয়ার আত্মহত্যা বা হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও উপযুক্ত বিচার দেশের আইনের শাসনের প্রতি মানুষের আস্থা রক্ষার স্বার্থে খুবই জরুরি। নারীর বিরুদ্ধে সংহিসতা রোধে সরকারের যে ঘোষিত নীতি রয়েছে তার প্রতি সরকারের আন্তরিকতা এ ধরনের ঘটনায় ক্ষমতাশালী ও বিত্তশালী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমেই প্রমাণিত হতে পারে।’
অবিলম্বে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে না-রাজী দরখাস্ত দাখিল করে এ ঘটনার পুনরায় নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করেন বিবৃতিদাতারা।
বিবৃতিদাতারা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল, অর্থনীতিবিদ ও নির্বাহী সভাপতি পিপিআরসি ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবির, মানবাধিকার কর্মী ড. হামিদা হোসেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতিয়ারা নাসরীন, নারীপক্ষের সদস্য শিরিন প হক, সেন্ট্রাল উইমেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক পারভীন হাসান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, মানবাধিকার কর্মী ড. ফষ্টিনা পেরেরা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের নির্বাহী পরিচালক সঞ্জীব দ্রং, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন ক্লিনিক্যাল নিউরোসাইন্স সেন্টারের পরিচালক ড. নায়লা জেড খানসহ ৫১ নাগরিক।
সূত্র : প্রেস বিজ্ঞপ্তি
Related News

সাংগঠনিক দক্ষতা ও সমাজসেবায় অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ আকবর আলীকে সাউথ এশিয়ান এক্সিলেন্স এর অ্যাওয়ার্ড প্রদান
সাংগঠনিক দক্ষতা ও সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সিলেট সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃRead More

অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপরRead More