শেখ জাররাহতে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে জেরুসালেমে বিক্ষোভ
পূর্ব জেরুসালেমের শেখ জাররাহতে উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে সেখানে বিক্ষোভ করেছেন শত শত আরব ও ইহুদি জনগোষ্ঠী। নাহালাত শিমন কোম্পানির মাধ্যমে শেখ জাররাহ থেকে আরব পরিবারগুলোকে উচ্ছেদের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে তারা শুক্রবার এ বিক্ষোভ করেন।
নাহালাত শিমন কোম্পানি আরবদেরকে শেখ জাররাহ থেকে উচ্ছেদ করে ওইখানে ইহুদিদের জন্য বসতি নির্মাণ করতে চায়।
১৯৪৮ সালে ইসরাইলের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে শেখ জাররাহ যে ভূমির ওপর নির্মিত তা ছিল ইহুদিদের মালিকানাধীন। ইসরাইলের এ স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ২৮টি ফিলিস্তিনি আরব পরিবার ইহুদিদের সাথে তাদের বাড়ি পরিবর্তনের মাধ্যমে এ বাড়িগুলো লাভ করে। ওই পরিবারগুলো এখনো সেখানে বাস করে।
ইসরাইল ১৯৬৭ সালে ছয় দিনের যুদ্ধে জেরুসালেম শহরের পূর্ব অংশ দখল করে। ওই শহরের ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করছে দখলদার ইসরাইল। এই সুবাধে পাঁচ বছর পর দু’টি ইহুদি সংগঠন বদল করা চারটি বাড়ির ওপর নিজেদের মালিকানা দাবি করে। আর তাদের মালিকানা স্বত্ব দাবি করেছে নাহালাত শিমন কোম্পানি।
এ দিকে ইসরাইলের আইন ১৯৪৮ সালের আগের কোনো সম্পদের বা জমির ওপর ফিলিস্তিনিদের দাবিকে অগ্রাহ্য করে। এ কারণে ওই জমি নিয়ে একটি যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আর শেখ জাররাহ নিয়ে আন্দোলন কোনো নতুন বিষয় নয়। গণমাধ্যমে এ বিষয়টি প্রচারণা পাওয়ার অনেক অনেক আগে থেকেই এ নিয়ে আন্দোলন-বিক্ষোভ চলছিল।
টুইটারে কয়েক দিন ধরে হ্যাসট্যাগ সেভ শেখ জারারাহ বা শেখ জারারাহকে রক্ষা কর আন্দোলন চলছে। এ আন্দোলন গাজায় ইসরাইলি অভিযানের বিরুদ্ধে একসাথে চলছিল। এর ফলে ইসরাইলি ও আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে এ বিষয়টি আসে। মূলত, গাজার হামাস ও দখলদার ইসরাইল কর্তৃপক্ষের এবারের যুদ্ধেরও অন্যতম কারণ শেখ জারারাহ অঞ্চল।
গত দু’সপ্তাহ ধরে কয়েক দফায় শেখ জাররাহ নিয়ে ফিলিস্তিনি আরব ও ইহুদিরা একসাথে আন্দোলন করেছে। তারা পশ্চিম তীর ও ইসরাইলের বিভিন্ন জায়গায় শান্তি ও যুদ্ধ বন্ধের ডাক দিয়ে এ অন্দোলন চালিয়েছে। ইসরাইলের উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্য অংশেও এ আন্দোলন হয়েছে। এখন শেখ জাররাহতে এ বিক্ষোভ হচ্ছে।
প্রায় দু’ শ’ ইহুদি ও আরব বিক্ষোভকারী শেখ জাররাহতে আসে এ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশ নিতে। এ আন্দোলন ইসরাইলের বামপন্থী সংগঠনগুলোর ডাকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ইসরাইলি পুলিশের মুখপাত্র বলেন, আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে। তারা যে রাস্তা আটকিয়ে বিক্ষোভ করছিল তা আবার সচল করা হয়েছে। এ সময় আটজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে চারজন ফিলিস্তিনি আর চারজন ইসরাইলি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে তারা অবৈধভাবে সমবেত হয়েছেন। জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্ন করছেন আর ইসরাইলি সেনাদের দায়িত্ব পালনে বাধা দিয়েছেন।
ইহুদি ও আরবদের এ সঙ্ঘবদ্ধ আন্দোলনেকে বলা হয় স্বাধীনতার পদযাত্রা। এসব সঙ্ঘবদ্ধ আন্দোলনে ইহুদি, ইসরাইলি আরব ও ফিলিস্তিনিরা একসাথে শান্তির দাবি জানান। এ ছাড়া পূর্ব জেরুসালেম ও পশ্চিম তীর থেকে ইসরাইলি সেনাদের প্রত্যাহারের কথা বলে।
আন্দোলনকারীরা শেখ জাররাহতে বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন বহন করছিল। তারা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিল পরিবর্তনের জন্য। এ ধরনের একটি ব্যানারে লেখা ছিল ‘যুদ্ধ বন্ধ কর, অবরোধ ওঠাও, এখানে সমাধানের অন্যান্য পথও আছে’। এর মাধ্যমে তারা ২০০৭ সাল থেকে গাজায় চলমান অবরোধের অবসান চাচ্ছেন।
সূত্র : দ্য জেরুসালেম পোস্ট
Related News
মাস্ককে সরকারি দক্ষতা বিভাগের প্রধান পদে নিয়োগ দিলেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার গঠনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণRead More
পাকিস্তানে বরযাত্রীর গাড়ি নদীতে পড়ে নববধুসহ ১৪ জন নিহত
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের গিলগিট-বালতিস্তানের দিয়াম জেলায় বরযাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে গেলে নববধুসহ ১৪Read More