অপরাধ জগতের রানি শংকু

পেশায় কলেজের প্রভাষক। কিন্তু ছাড়তে পারেননি লোভ আর ধান্দার পথ। আইনি সহায়তা প্রদানের কথা বলে একের পর এক প্রতারণা করে নিরীহ ও সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়াই যেন তার নেশা।
শংকু রানী সরকার লিলি। সিলেটের বিশ্বনাথ ডিগ্রি কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিষয়ের প্রভাষক তিনি। তার পেশা মহান শিক্ষকতা হলেও তিনি ছাড়তে পারেননি ধান্দা ও অসৎ পথ। প্রতারণার অভিযোগে এর আগে জেলও খেটেছেন লিলি। তবু ফিরে আসেননি সৎ পথে। বিবাহিত জীবনে দুই সন্তানের জননী লিলি। তবে স্বামীর সঙ্গে বনিবনা নেই। দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন সিলেট শহরতলির মেজরটিলার এন আর টাওয়ারে ৩৫/২ নং বাসায়। সেখানে থেকেই লিলি বিস্তার করে চলেছেন তার প্রতারণা ও ধান্দার জাল।
তবে আরেকবার (বুধবার- ২১ এপ্রিল) ধরা খেতে হয়েছে সিলেটের আদালতপাড়ায়। এক গৃহকর্মীর কাছ থেকে তার ছেলেকে জামিন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় অর্ধ লাখ টাকা। লিলি ছিলেন ট্যাক্স বারের সদস্য বা কর পেশাজীবী ( ইনকাম ট্যাক্স প্র্যাক্টিশনার- আইটিপি)। কিন্তু নানা অপরাধে ট্যাক্স বারের সদস্য পদ থেকে লিলিকে ২০১৩ সালে বহিষ্কার করা হয়। তারপরও তিনি নিজেকে আয়কর আইনজীবী পরিচয় দিয়ে মানুষকে আইনি সহায়তা দেয়ার নামে হাতিয়ে নিতে থাকেন টাকা-পয়সা।
ঠিক এভাবে এক মাস আগে সিলেটের মিরাবাজারের গৃহকর্মী শিল্পী বেগমের ছেলে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া প্রাইভেটকার চালক মিরাজকে জামিন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে চুক্তি মোতাবেক ধাপে ধাপে ৪৫ হাজার টাকা নেন। কিন্তু লিলি মামলার শুনানির তারিখগুলো নানা টালবাহানায় পার করতে থাকেন।
বুধবার (২১ এপ্রিল) ছিলো শিল্পী বেগমের ছেলের মামলার আরেকটি শুনানির তারিখ। বুধবার তার ছেলেকে জামিন পাইয়ে দেয়ার কথা চূড়ান্ত করেন প্রতারক লিলি। কিন্তু বুধবারও ছেলের জামিন না হওয়ায় সিলেট বার হল নং-২ এর সামনে লিলির কাছে ৪৫ হাজার টাকা ফেরত চান শিল্পী বেগম। এতে লিলি ক্ষিপ্ত হয়ে শিল্পী বেগমকে মারধর শুরু করেন। এসময় ঘটনাস্থলে আইনজীবী ও লোকজন জড়ো হলে শিল্পী বেগম বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলেন। তখন আইনজীবী ও জনতা প্রতারক লিলিকে আটক করেন।
আটকের পর লিলি উত্তেজিত হয়ে নিজেকে একাধারে আয়কর আইনজীবী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও বিশ্বনাথ কলেজের প্রভাষক হিসেবে পরিচয় দেন। এসময় তার গলায় ‘ইন্টারন্যাশনাল হিউমেন রাইটস’ মানবাধিকার সংস্থার একটি পরিচয়পত্র ঝুলতে দেখা যায়। এটি সবাইকে দেখিয়ে লিলি নিজেকে ওই সংস্থা সম্পাদিত পত্রিকার ক্রাইম রিপোর্টার পরিচয় দেন। এছাড়াও তিনি বেসামাল হয়ে এসময় বলেন, ‘বাঁশ দিবো। আমি ক্রাইম রিপোর্টার। সব সাংবাদিকদের বাঁশ দিবো। একটা নয়, ৯ টা, ৬ টা বাঁশ দিবো।’ পরে তাকে পুলিশের ভয় দেখালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিজের ভুল শিকার করেন এবং ওই ভুক্তভোগী গৃহকর্মীর টাকা ফিরিয়ে দেয়ার শর্তে ২৫ হাজার একটি চেক দিয়ে মুক্তি পান।
Related News

মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর : আইন উপদেষ্টা
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুতRead More

ওসির বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ, দক্ষিণ সুরমায় জুলাই যোদ্ধার পরিবারকে হত্যার হুমকি আওয়ামী লীগ নেতার
দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাওঁ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জবরুল ইসলাম জগলুর বিরুদ্ধে জুলাই যোদ্ধা পরিবারকেRead More