Main Menu

সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন সুনামগঞ্জে প্রভাবশালী কর্তৃক জালিয়াতির মাধ্যমে ভূমি আত্মসাতের অভিযোগ

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠইর মৌজায় উত্তরাধীকার সূত্রে পাওয়া সুধাংশু শেখর দাস, রাজেন্দ্র দাস ও ধীরেন্দ্র কুমার দাসের জমি জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন প্রভাবশালীরা। তারা প্রকৃত মালিক হওয়ার পরেও ভ‚মিহীন হয়ে যাযাবরের মতো জীবন কাটাচ্ছেন। পাশাপাশি আদালতে দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলা করার কারণে তাদের প্রাণনাশের হুমকিসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে, ফলে তারা নিরাপত্তাহীনতায়ও রয়েছেন।
সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব বিষয় জানিয়েছেন এ তিনজনের নিযুক্ত আমমোক্তার সিলেট নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ডের সৈয়দানীবাগের বাসিন্দা মো. আলমগীর হোসেন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ভ‚মি থেকে জাল-জালিয়াতি দলিলের মাধ্যমে আত্মসাত করার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনাও করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সুনামগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার মদনপুর গ্রামের মৃত সুখময় দাসের পুত্র সুধাংশু শেখর দাস, মৃত বিহারী লাল দাসের পুত্র রাজেন্দ্র দাস ও মৃত তরনী কান্ত দাসের পুত্র ধীরেন্দ্র কুমার দাস কর্তৃক নিয়োজিত আমমোক্তার তিনি। ১৯৫৬ সালের ভ‚মি জরিপ অনুযায়ী সুনামগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার কাঠইর মৌজায় জেএলনং ১৫৬, এস এ খতিয়ান নং ৫৮৩, ৭০৬, ১৮০ এর ভ‚মির মালিক ছিলেন বিহারী লাল দাস। তিনি খতিয়ানভুক্ত ভ‚মির স্বত্ববান ও দখলকার থাকাবস্থায় মারা গেলে তার পুত্র রাজেন্দ্র দাস উত্তরাধিকারীসূত্রে সমুদয় ভ‚মির স্বত্ববান হন। ১৮০ নং খতিয়ানের ভ‚মি বিহারী লাল দাসের ভাই সুখময় দাসের নামে রেকর্ডভুক্ত হয় এবং তিনি মালিক দখলকার থাকাবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তার পুত্র সুধাংশু শেখর দাস উত্তরাধিকারী সূত্রে ভ‚মির স্বত্ববান হন। এস এ ৫৭৮ ও ৫৪০ নং খতিয়ানের ভ‚মিতে তরনী কান্ত দাস, পিতা তারা চন্দ্র দাস রেকর্ডিয় মালিক দখলকার থাকাবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তার পুত্র ধীরেন্দ্র কুমার দাস উত্তরাধিকারী সূত্রে ভ‚মির স্বত্ববান হন। তাদের স্বত্বদখলীয় মোট ভ‚মির পরিমাণ ৩৩.০৪ একর।’
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে পাকবাহিনীর নির্যাতনের ভয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকে বাড়িঘর ফেলে আত্মগোপনে চলে যায়। তখন এলাকার সুযোগ সন্ধানী প্রভাবশালী মদনপুর গ্রামের কলমদর আলীর পিতা কাছম আলী, সোনাহর আলীর পিতা জফর আলী গং তাদের উপর অমানসিক নির্যাতন চালিয়ে সহায় সম্পত্তি থেকে তাদের উচ্ছেদ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের সহায় সম্পত্তি তারা দখল করে নেয়। পরবর্তীতে তারা ভ‚মির জাল দলিল সৃষ্টি করে নিজেদের নামে নামজারী করে খতিয়ানভুক্ত করে। এ সময়ে তারা ব্রজনাথ দাসের ছেলে বিহারী লাল দাস, সুখময় দাস, তারা চন্দ্র দাসের ছেলে তরনী কান্ত দাস, উদয় চন্দ্র দাসের ছেলে উমেশ চন্দ্র দাসের নামেও বেশ কয়েকটি জাল দলিল সৃষ্টি করে। অথচ সুনামগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের রেকর্ড রুমের ভলিয়মে এসব দলিলের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।’
তিনি বলেন, জালিয়াতচক্র জাল দলিলের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা ভ‚মি অফিস ও সদর ইউনিয়ন ভ‚মি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারির প্রত্যক্ষ মদদ, অবৈধ সুযোগ সুবিধার বিনিময়ে জালিয়াতচক্রের নামে ভ‚মি নামজারী করে নতুন খতিয়ান নং ৮৫২, ৮৬১, ৮৫৫, ৮৫৪, ৮৪২, ৮৭৮, ৮৫০ চালু করে। অপরদিকে ভ‚মি আত্মসাতকারীরা নতুন ভ‚মি জরিপে জরিপকারী কর্মকর্তাদের অর্থের বিনিময়ে ও বিভিন্নভাবে প্রভাব প্রতিপত্তি খাটিয়ে জাল দলিলের মাধ্যমে বর্ণিত সম্পত্তি নিজেদের নামে রেকর্ড করে নেয়। এ বিষয়ে সুনামগঞ্জের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতে সুধাংশু দাস, রাজন্দ্র দাস ও ধীরেন্দ্র কুমার দাস বাদী হয়ে হবিব উল্লাহ গংকে বিবাদী করে স্¦ত্ব মামলা এবং সুনামগঞ্জ দায়রা জজ আদালতে প্রনতিবালা দাস ও সুমতি বালা দাস বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে আলমগীর হোসেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা ভ‚মি অফিসে নামজারী এবং ভ‚মি রেকর্ড করার সাথে জড়িত জালিয়াতচক্রের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্টি কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দলিত বঞ্চিত অধিকার আন্দোলন সিলেট জেলার উপদেষ্টা মো. লুৎফুর রহমান মোল্লা, সুশীল চন্দ্র কর, হাফিজ ইব্রাহীম আহমদ প্রমুখ।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *