দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারেই ভঙ্গুর : মির্জা ফখরুল
দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারেই ভঙ্গুর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সদ্য মরহুম সভাপতি শফিউল বারী বাবুর বাসায় পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা জানানোর পর সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, বাবুর (শফিউল বারী বাবু) এভাবে মৃত্যু- এটা আরেকটা সত্য উৎঘাটিত করেছে যে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারেই ভঙ্গুর। এখানের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি যে মানুষ আস্থা রাখতে পারে না- বাবুর অসুস্থতা, তার চলে যাওয়া এটাই প্রমাণ করে। অনেকে অভিযোগ করে যে, বাংলাদেশের মানুষেরা বাইরে চিকিৎসা করতে যায় কেন? এজন্য যায় যে, এখানে আপনার ডায়োগনেসিস করা সম্ভব হয় না, ডায়োগনেসিসে সমস্যা হয়, বিভিন্নভাবে এখানকার..। সমস্ত ব্যবস্থাটা ইট সেলফ রোগীদের জন্য একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
শফিউল বারী বাবুকে ‘মেধাবী’ নেতা হিসেবে অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাবুর মতো একজন জনপ্রিয়, সচেতন রাজনৈতিক নেতা এভাবে চলে যাবে এটা আমরা কল্পনাই করতে পারিনি। তার অল্প সময়ের জীবনের ক্যারিয়ার বর্ণাঢ্য। তাকে শুধু বিএনপির জন্য নয়, তাকে দেশের জন্য, মানুষের জন্য প্রয়োজন ছিল। হি হেভ অল দ্যা কোয়ালিটিজ, তার সম্ভাবনা ছিলো। তিনি এদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে একটা ব্যতিক্রম। আমি কিছুক্ষণ আগে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছিলাম- দুইটা বাচ্চা রেখে গেছে। মাথা গুজার ঠাঁইটুকু নাই। এখনো ভাড়া বাসায় থাকেন। তার স্ত্রীও কাজ করছিলো একেবারে। এখন তাকে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। আমার একটাই অনুরোধ থাকবে সকলের কাছে- তার পরিবার, স্ত্রী-সন্তানদের আমাদের নিজেদের মানুষ মনে করে আমরা যেন এগিয়ে আসি এবং সহযোগিতার হাত বাড়াই।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাকে বলেছেন যে, আমরা তার (বাবুর) সঙ্গে আছি, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও বলেছেন যে, আমি আছি তার সঙ্গে। আমরা সবাই তার সঙ্গে আছি, এই লড়াই শুধু তার স্ত্রী একা লড়বে না, তার সাথে আমরাও লড়বো। আল্লাহ তায়ালা বাবুকে বেহেশত নসিব করুক। তার স্ত্রী ও সন্তানদেরকে এই শোক সহ্য করবার ক্ষমতা দিক, বাবু চলে যাওয়ায় আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা যেভাবে ভেঙ্গে পড়েছে আল্লাহ তাদেরকে শোক সহ্য করবার শক্তি দিক।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে নিউ ইস্কাটনে শাইনপুকুর এপার্টমেন্টে মরহুম শফিউল বারী বাবুর বাসায় গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বাবুর স্ত্রী বিথীকা বিনতে হোসাইনের সাথে কথা বলে সমবেদনা জানান। বাবুর ছোট দুই ছেলে মেয়ে ফাতেমা বারী তুহিন ও আয়হান বারী সাঈদকে কাছে নিয়ে আদর করেন মির্জা ফখরুল। এসময় বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতন, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, গোলাম সারোয়ার, ইয়াসীন আলী, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় নয়া পল্টন কার্যালয়ের নিচ তলায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে পরলোকগত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর স্মরণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আাবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, এবিএম মোশাররফ হোসেন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, ওমর ফারুক সাফিন, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সহ-সভাপতি গোলাম সরোয়ার, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াছিন আলী, যুগ্ম সম্পাদক সাদরেজ জামান, যুবদলের মোরতাজুল করীম বাদরু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখারুজ্জামান শিমুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের মো: হারুন-অর-রশিদ, মোর্শেদ আলম, সরদার নুরুজ্জামান, এবিএম মুকুল, ফয়সাল আহমেদ, ছাত্রদলের হাফিজুর রহমান হাফিজ, ইকবাল হোসেন শ্যামল, স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
রুহুল কবির রিজভী সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বাবুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, এখন চারিদিকে যে দুর্দিন চলছে, এই দুর্দিনে শফিউল বারী বাবুও সামনের কাতারে থাকতো। দুর্দিনের একজন বলিষ্ঠ সিপাহসালারকে আন্দোলনের কাফেলা থেকে আমরা হারালাম। আমাদের চলমান এই আন্দোলন, এখনো গণতন্ত্র ফিরে আসেনি, এখনো কর্তৃত্ববাদী শাসন, এখনো গুমের আতঙ্ক, এখনো মিথ্যা মামলার আতঙ্ক, এখনো যেকোনো সময়ে ক্রসফায়ারের আতঙ্ক। এই আতঙ্কের মধ্যে যে সমস্ত নির্ভিক তরুণ, উদ্দিপ্ত তরুণ মিছিলের সামনে থাকতো তার মধ্যে বাবু (শফিউল বারী বাবু) একজন। আমাদের মাঝে সেই বাবু নেই তবে আমরা সবসময় তাকে স্মরণ করবো।
পরে বাবুর রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন ক্বারী রফিকুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জুলাই শফিউল বারী বাবু ফুসফুস জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে এভার গ্রীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫১ বছর।
সূত্রঃ নয়া দিগন্ত
Related News
জালালাবাদ ইউনিয়নে জনসভা: দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে
বিএনপি চেয়ারপারসন উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেছেন, জাতীয়তাবাদী শক্তিকে গণতন্ত্রের পথচলাকে অবারিত এবং জাতীয় স্বাধীনতাRead More
আন্দোলনে ৯ হত্যা মামলায় যুবলীগ সভাপতি গ্রেফতার
উপজেলা সদরের যাত্রাপাশা গ্রামের কুণ্ডুরপাড় এলাকা থেকে শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে বানিয়াচং থানা পুলিশ তাকেRead More