Main Menu

সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান মাহবুব আম্বরখানায় পশুর চামড়া ডাম্পিং নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন সিসিক মেয়র

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নে জবাইকৃত কোরবানির পশুর চামড়া সিলেট নগরীর আম্বরখানা এলাকায় ফেলে যাওয়ার নিয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ‘বিভ্রান্তি’ ছড়াচ্ছেন বলে দাবি করেছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক শেরীন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক পদেও রয়েছেন।
বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি তার মালিকানাধীন জায়গায় স্তুপ করে রাখা পশু চামড়া অপসারণ নিয়ে সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর আচরণের নিন্দাও করেছেন। এসব চামড়া মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার দাবি করে তিনি এ ঘটনায় বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি আম্বরখানায় পরিত্যক্ত প্লটে চামড়া রাখার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সিটি মেয়র বলেছেন জগন্নাথপুর থেকে হাজার হাজার চামড়া সিলেটে এনে ডাম্পিং করছেন চেয়ারম্যান। এই প্রসঙ্গে আমি আপনাদেরকে জানাচ্ছি মেয়র মহোদয়ের ওই বক্তব্য অসত্য। ঈদ উপলক্ষে কোরবানি দেয়া পশুর চামড়া যাতে নষ্ট না হয়, সরকারের এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমাকে মানসিক ও সামাজিকভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। এছাড়া একটি অঞ্চলের প্রতি মাননীয় মেয়র সাহেব যে আচরণ দেখিয়েছেন তা অবশ্যই ঘৃণিত।’
তিনি বলেন, মিরপুর ইউনিয়নটি প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। এই এলাকার শতশত মুসলমান এইদিন পশু কোরবানি দিয়েছেন। যার অধিকাংশ কোরবানি সম্পন্ন হয়েছে প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থে। এবারের ঈদে সরকারের নির্দেশনা ছিল কোরবানি দেয়া পশুর চামড়া কোনোভাবে নষ্ট করতে দেয়া যাবে না। কোনো অবস্থাতেই কোরবানির চামড়া মাটিতে পুতে ফেলা যাবে না। ভাসিয়ে দেয়া যাবে না নদীতে। জনপ্রতিনিধিরা ওই বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। আমি এ পদক্ষেপ নিয়েছি মাত্র।’
তিনি বলেন, ঈদের দিনে কোরবানির পশুর চামড়া সাধারণত মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানায় দান করা হয়। স্বাভাবিক নিয়মে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ, এতিমখানা কর্তৃপক্ষ ও মসজিদ কর্তৃপক্ষ পৃথকভাবে ডিলারদের সাথে যোগাযোগ করেন। কয়েকজন ডিলার চামড়া ক্রয় করার আশ্বাস দেন। কিন্তু দুপুরে ডিলাররা জানিয়ে দেন তারা চামড়া ক্রয় করবেন না। ওই অবস্থায় পশুর চামড়া বিক্রেতারা বিপাকে পড়েন। তারা আমার সাথে যোগাযোগ করেন। আমি সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ডিলারদের সাথে যোগাযোগ করি। কিন্তু কোনো ডিলারই চামড়া ক্রয়ে আগ্রহ না দেখানোয় তিনি নিজস্ব অর্থায়নে চারটি ট্রাকযোগে ৬৩০টি চামড়া সিলেটে বিক্রির জন্য নিয়ে যান।’
তিনি বলেন, সিলেটে চামড়াগুলো আনার পর রাত ১২ টা পর্যন্ত চামড়া বোঝাই ট্রাক সিলেট নগরীর প্রতিটি ডিলারের দোকানে গেলেও কেউ চামড়া ক্রয় করেননি। এমতাবস্থায় রাত ১২ টার দিকে ওইসব চামড়া আম্বরখানার একটি প্লটে নিয়ে রাখা হয়। খালি ওই প্লটের মালিক আবাসন এসোসিয়েট প্রাইভেট লিমিটেড। এই কোম্পানির চেয়ারম্যান আমি। রাতেই সিদ্ধান্ত নিতে হয় চামড়াগুলো প্রক্রিয়াজাত করার জন্যে। এজন্যে লবন সংগ্রহ করা হয় ৫ বস্তা। রাতে আর কোনো লবন পাওয়া যায়নি। তবে রোববার সকালে আরো ৩৫ বস্তা লবন ও শ্রমিক সংগ্রহ করি। কিন্তু লবন ও শ্রমিক আসার আগেই চামড়াগুলো জব্দ করে অপসারণ করেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
তিনি দাবি করেন, ২ আগস্ট রোববার বেলা ১ টা ২৪ মিনিটে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী তাকে ফোন করে চামড়ার বিষয়ে জানতে চান। এসময় তিনি মেয়রকে জানান, চামড়াগুলো মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার। এগুলো বিক্রি করতে না পারায় প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। কিন্তু মেয়র চামড়াগুলো জব্দ করে নেন। এসময় তিনি আমার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান।
তিনি বলেন, মেয়রকে পুরো বিষয়টি বলার পরও চামড়াগুলো ডাম্পিং ইয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন। এর আগে তিনি আবাসন কোম্পানীর গেইট ভেঙ্গে ফেলেন বুলডোজার দিয়ে। মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার ওই চামড়া নিয়ে এখন আমি বিব্রতকর অবস্থায় আছি। এছাড়া তিনি মানসিকভাবেও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *