অনির্দিষ্টকালের জন্য মানুষের আয়-রোজগারের পথ বন্ধ করে রাখা সম্ভব নয়: প্রধানমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্কঃ করোনাভাইরাস মহামারিকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী স্থবির হয়ে পড়া অর্থনীতির চাকা দ্রুত সচল করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, অনির্দিষ্টকাল জনগণের আয়ের পথ বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। জীবন-জীবিকার স্বার্থে চালু করতে হবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে আজ রবিবার (২৪ মে) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত হয়। সব বেসরকারি বেতার, টেলিভিশন ও স্যোশাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে এ ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে করোনাভাইরাসের এই মহামারি সহসা দূর হবে না। কিন্তু জীবন তো থেমে থাকবে না। যতদিন না কোনও প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার হচ্ছে, ততদিন করোনাভাইরাসকে সঙ্গী করেই হয়তো আমাদের বাঁচতে হবে। জীবন-জীবিকার স্বার্থে চালু করতে হবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
এ সময় ‘লকডাউন’ শিথিলের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় সকল দেশই ইতোমধ্যে লকডাউন শিথিল করতে বাধ্য হয়েছে। কারণ অনির্দিষ্টকালের জন্য মানুষের আয়-রোজগারের পথ বন্ধ করে রাখা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে তো নয়ই।’
তবে কবে থেকে সরকার কী কী পদ্ধতিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সে সম্পর্কে ভাষণে কিছু বলেননি তিনি।
বাংলাদেশে অবশ্য সরকারিভাবে ‘লকডাউন’ শব্দটি কখনও ব্যবহার করা হয়নি। তবে এর বিকল্প হিসেবে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে দেশবাীকে ঘরে থাকার ও জরুরি প্রয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরের বাইরে আসার কথা বলা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস মহামারির প্রাদুর্ভাবকে ঘিরে প্রাথমিকভাবে ২৬ মার্চ ১০ দিনের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এ ছুটি পেয়ে বেশ কিছু মানুষ রাজধানী ও আশেপাশের জেলাগুলো থেকে নিজ নিজ এলাকার ফেরার পর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিতে থাকে একের পর পর এলাকায়। কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে তা দফায় দফায় বাড়িয়ে ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়েছে।
এদিকে সরকারিভাবে লকডাউন শিথিল করার জন্য প্রাথমিকভাবে ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় গত ২৬ এপ্রিল থেকে কিছু পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার অনুমতি দেয় সরকার।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সূত্রে জানা যায়, ৭ হাজার ২শ’কারখানার মধ্যে প্রায় ৪ হাজার কারখানা খুলে দেওয়ায় ঢাকার মতো বিভিন্ন শিল্প বেল্টে উৎপাদন শুরু হয়েছে। এরপর আশুলিয়া, সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সারাদেশে বিভিন্ন রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) খুলে দেওয়া হয়। এরপর ধীরে ধীরে খুলে যায় প্রায় সব তৈরি পোশাক কারখানা।
এরপর ঈদ উপলক্ষে ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে গত ১০ মে থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সময় নির্দেশ করে দিয়ে খুলে দেওয়া হয় বাজার ও শপিংমল। তবে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় অনেক এলাকায় তা বন্ধও করে দেওয়া হয়েছে।
তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউন শিথিল করলেও এ সমস্যা মোটামুটিভাবে দূর না হওয়া পর্যন্ত দরিদ্র, দুস্থ ও অসহায় মানুষদের পাশে থাকার অঙ্গীকার এ ভাষণে পুর্নব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ঘোষণা করেন, কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে জনগণের সহায়তায় সরকার যে সব কর্মসূচি চালু করেছে, তা বর্তমান সঙ্কট না যাওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে, ততদিন এসব কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’ বাসস
Related News
সমন্বয়কদের বৈঠক শেষে হাসনাত: উপদেষ্টা নিয়োগে অবশ্যই ছাত্রদের মতামত নিতে হবে
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহবায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের ফসল হলো অন্তর্বর্তী সরকার। তাইRead More
পৃথিবীর সুরক্ষায় ‘জিরো কার্বন’ ভিত্তিক জীবনধারার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূুসের
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ পৃথিবীকে জলবায়ু বিপর্যয় থেকে রক্ষা করার জন্য ‘শূন্যRead More