Main Menu

জালালপুরে দেয়াল নির্মাণ করে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

দক্ষিণ সুরমার জালালপুর ইউনিয়নের সব্দলপুর গ্রামের দক্ষিণ মহল্লাবাসীর চলাচলের দুই শ বছরের পুরনো রাস্তা দেয়াল নির্মাণ করে বন্ধ করে দিয়েছে একটি স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। সেনাবাহিনী ও আইনশৃক্সক্ষলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্মাণাধীন দেয়াল ভেঙ্গে ফেলার কথা বললেও ওই মহল কথা শুনেনি। শনিবার (৩১ আগস্ট) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেছেন সব্দলপুর গ্রামের বাসিন্দা হাজী মো. ইউনুছ আহমদ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সুযোগে সব্দলপুর গ্রামের মরহুম মসকন্দর ্আলীর ছেলে এনামুল কবির, আশরাফুল ও তাদের সহযোগীরা গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটির মাঝামাঝি দেয়াল নির্মাণ করে বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্বিসহ জীবন পার করছেন গ্রামের লোকজন। খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেয়াল অপসারণের কথা বললেও তারা কর্ণপাত করেনি। তিনি বলেন, সব্দলপুর মৌজার স্থিত ১ নং খতিয়ানের ৪০৯৪ ও ৪০৯৫ নং দাগের রাস্তা এবং ৪০৮৭ নং দাগের ভূমি রাস্তা হিসেবে সব্দলপুর দক্ষিণ মহল্লার লোকজন অনাদিকাল থেকেই ব্যবহার করে আসছেন। দক্ষিণ মহল্লার অন্তত অর্ধশত পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি। রাস্তাটি গ্রামের মরহুম মসকন্দর আলীর বাড়ি ঘেষে মূল রাস্তার সাথে মিলেছে। সব্দলপুর গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়, জামে মসজিদ এবং ডি.কে মাদ্রাসায় যাথায়াতের একমাত্র মাধ্যম হলো এই রাস্তা। এছাড়া গ্রামের উত্তর থেকে দক্ষিণ মহল্লার মানুষের যাথায়াতের রাস্তা এটি। দক্ষিণ মহল্লার শতশত মানুষ ও ছাত্রছাত্রীরা দীর্ঘদিন যাবত এই রাস্তা দিয়েই যাথায়াত করে আসছিলেন। কিন্তু বাড়ি ঘেষে রাস্তাটির অবস্থান হওয়ার কারণে মরহুম মসকন্দর আলীর ছেলে এনামুল কবির ও আশরাফ আলী গংরা অতীতে অনেকবার প্রকিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে।
ইউনুছ আহমদ বলেন, এলাকার মানুষের প্রতিবাদের কারণে সে সময়ে তারা সফল হতে পারেনি। এছাড়া তাদের জোরপূর্বক কর্মকান্ডের কারণে আমার ছেলে আশফাক জামান চৌধুরী রাজবীর একাধিকবার আদালতে মামলা দায়ের করেছে। এসব মামলার পুলিশ প্রতিবেদনে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে এনামুল গংরা জোরপূর্বক মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে। অতীতে বারবার চেষ্টা করেও সফল হতে না পেরে এনামুল ও আশরাফুল গংরা গত ৫ আগষ্টের ছাত্রজনতা ও সাধারণ মানুষের বিজয় পরবর্তী রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গত ১২ আগষ্ট ভোরবেলা সকলের অজান্তে বিপুল সংখ্যক হেলমেট পরিহিত ও অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত সন্ত্রাসী বাহিনীকে দিয়ে ফিল্মি স্টাইলে বিশাল অর্থের বিনিময়ে রাস্তার উপর দেয়াল নির্মাণ করে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। এক্ষেত্রে তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন এবং কলকাটি নেড়েছেন একটি রাজনৈতিক দলের সিলেটের প্রভাবশালী শীর্ষ দু’এক জন নেতা। যারা পট পরিবর্তনের পর ইতিমধ্যে নানাভাবে সমালোচিত হয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে ইউনুছ আহমদ আরো বলেন, আমাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১২ আগষ্ট বিকেলে একদল সেনা সদস ঘটনাস্থলে এসে রাস্তা বন্ধ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং আগামীকালকের মধ্যেই দেয়ালটি অপসারণ করে নেয়ার নির্দেশ দেন। এসময় এনামুল কবির গংরা দেয়ালটি ভেঙ্গে ফেলবে বলে সেনাবাহিনীকে নিশ্চয়তা দেয়। কিন্তু ঘটনার প্রায় ২০ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেই আদেশ মানেনি। উল্টো ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এখন রাস্তার ওপর আরেকটি ঘর নির্মাণ করে ফেলেছে তারা। ফলে প্রায় অর্ধশত পরিবারের কয়েক‘শ মানুষ প্রায় দুই কিলোমিটার ঘুরে মসজিদে যাথায়াত করতে হচ্ছে। শিশুদের স্কুল-মাদ্রাসায় যাথায়াত বন্ধ রয়েছে। সালিশ বিচার না পেয়ে অবশেষে গত ২৯ আগষ্ট আমার ছেলে আশফাক জামান রাজবীর বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আদালতে মামলা দায়ের করেছে। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবদেন দেয়ার জন্য মোগলাবাজার থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। অনুরুপভাবে এর আগে তারা রাস্তা বন্ধের পায়তারা করলে রাজবীর বাদী হয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আরো দুটি মামলা দায়ের করেছিল। এসব মামলায় বিবাদীদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং স্থিতাদেশ দেন আদালত। কিন্তু এনামুল গংরা আদালতের আদেশ অমান্য করে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে জোরপূর্বক রাস্তা বন্ধ করে দেয়। সংবাদ সম্মেলনে ইউনুছ আহমদ এসব দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের নেতৃবৃন্দসহ সচেতন সিলেটবাসীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে গ্রামের মুরব্বিয়ানরা উপস্থিত ছিলেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *