Main Menu

রাত ১০টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণের আশা সেনাবাহিনীর

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনারে ডিপোতে লাগা আগুন রোববার রাত ১০টার মধ্যে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সেনাবাহিনী। বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, কনটেইনারগুলো সরানো হচ্ছে। হয়তো কিচ্ছুক্ষণের মধ্যে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসবে। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের যে সক্ষমতা রয়েছে তা দিয়ে রাত ১০টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হবে বলে আশা করছি।

মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন আরও বলেন, অন্ধকার হয়ে গেলে এখানে লাইটার দিয়ে আলোকিত করা হবে। আশা করছি এখান থেকে আর কোনো আহত বা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটবে না।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা কনটেইনার ডিপোর আশপাশে থাকা খাল, ড্রেনে বাঁধ দিয়েছেন। রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়া পানি আর বঙ্গোপসাগরে পড়ার সম্ভাবনা নেই।

সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে থেকে সেবা করে জানিয়ে সেনাবাহিনীর তিনি আরও বলেন, দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে সব সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে পাশে পাবেন। আমরা সারারাত প্রস্তুত ছিলাম, ডিসি-এসপি সকালে বলার সঙ্গে সঙ্গে আমরা এখানে চলে আসি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।

এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, এখনও জ্বলছে কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন। কনটেইনারগুলোলোতে পানি দিচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। কিছু কিছু স্থানে আগুন, আর কিছু স্থানে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেছে। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি রোভার স্কাউট এবং রেড ক্রিসেন্টসহ স্থানীয় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করছে।

বিস্ফোরণের ঘটনায় সবশেষ ৪৯ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আগুন নেভাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৯ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী। এছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চার শতাধিক। তাদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও রয়েছেন।

নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে: বাঁশখালী উপজেলার ফরিদুল আলমের ছেলে মুমিনুল হক (২৪), মাহমুদুর রহমানের ছেলে মহিউদ্দিন (৩৪), দক্ষিণ বালিয়াপাড়ার সিহাবউদ্দিনের ছেলে হাবিুর রহমান (২৩), চালিয়াপাড়ার আব্দুল আজিজের ছেলে রবিউল আলম (১৯), হাসান আলীর ছেলে তোফায়েল আহমেদ (২৩), আব্দুল রশিদের ছেলে আলাউদ্দিন (৩৫), নিজাম উদ্দিনের ছেলে আলাউদ্দিন (৩৫), নিজাম উদ্দিনের ছেলে সুমন (২৪), আবুল কাশেমের ছেলে ইব্রাহিম (২৭), মো. আসিফের ছেলে নয়ন (২২), দক্ষিণ হালিশহর এলাকার আব্দুল ছবুরের ছেলে হারুনুর রশিদ (৩৫), সামসুল হকের ছেলে মনিরুজ্জামান (৩২), সাত্তারের ছেলে ফারুক জমাদার (৫৫), আমিন উল্লাহ’র ছেলে শাহাদাত উল্লাহ (৩০), শাহ আলমের ছেলে শাহাদাত হোসেন (২৯), সোহরাব মিয়ার ছেলে তৌহিদুল হাসান (৪১), জাফর আহমদের ছেলে রিদুয়ান (২৪), আব্দুল সত্তার তরফদারের ছেলে শাকিল তরফদার (২২), চিত্তরঞ্জন চাকমার ছেলে নিপন চাকমা (৪৫), কামরুল মিয়ার ছেলে রানা মিয়া (২২), সোলাইমান মিয়ার ছেলে আফজাল (২০) ও আবু ইউসুফের ছেলে সালাউদ্দিন কাদের (৫০)।

অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিমকে। এতে সদস্য সচিব হিসেবে আছেন অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো. আনিসুর রহমান।

উল্লেখ্য, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এছাড়া নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ করছেন। ডিপোতে আমদানি-রপ্তানির বিভিন্ন মালামালবাহী কনটেইনার ছিল। ডিপোর কনটেইনারে রাসায়নিক ছিল, বিকট শব্দে সেগুলোতেও বিস্ফোরণ ঘটে। দ্রুত চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় হতাহত হয়েছে বেশি।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *