Main Menu

সকল ‘ষড়যন্ত্র’ রুখে দেওয়ার আহ্বান শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে

একাত্তরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তিসহ সকল ‘অন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র’ রুখে দেওয়ার ডাক দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

মঙ্গলবার সকালে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে জাতির সূর্য সন্তানদের স্মরণ করে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রান্তে নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা শুরু করে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা। সেই থেকে শ্রদ্ধা আর স্মরণে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়।

মিরপুরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগ নেতারা ইতিহাসের এই কালো অধ্যায়ের কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় নানামুখী ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেন।

দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে আমরা যখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক সেই সময় বাঙালির মেধা ও বিবেক হিসেবে খ্যাত বুদ্ধিজীবীদের, বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করে দিতে হত্যা করেছিল।

“সেদিন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী যেভাবে পরাজিত হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে, বাঙালির কাছে। তাদের আন্তর্জাতিক যে প্রভু রয়েছে তারাও সেদিন পরাজিত হয়েছিল।”

স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও একাত্তরের পরাজিত শক্তিগুলো ‘ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে’ মন্তব্য করে জানিয়ে সেসব উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশের পথ চলার অঙ্গীকার জানান তিনি।

“আজকেও যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সেই ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিয়ে এই বাঙালি জাতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে। এই হল বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রত্যয়।”

দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যা শুরু করে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা। এই সব বুদ্ধিজীবীদের চেতনাকে সর্বস্তরের দিতে হবে।”

বিজয়ের ঠিক আগে লেখক, সাংবাদিক, অধ্যাপক, চিকিৎসক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন পেশার শীর্ষস্থানীয়রা ছিল খুনিদের লক্ষ্য। গণহত্যা চালানোর পর অনেকের লাশ ফেলে দেওয়া হয় রায়েরবাজারের বধ্যভূমিতে।

স্বাধীনতা সংগ্রামের এই মর্মস্পর্শী সময়কে স্মরণ করে তথ্যমন্ত্রী ও সম্প্রচারমন্ত্রী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “শুধু ঢাকায় নয়, জেলায় জেলায় বুদ্ধিজীবীদের ধরে এনে হত্যা করা হয়েছিল।

“স্বাধীনতাবিরোধীদের সন্তানেরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছে, তারা আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আর যে সকল দেশে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার আসামিরা রয়েছে, সেসব দেশে বঙ্গবন্ধুর খুনিরাও রয়েছে।”

হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ‘ষড়যন্ত্রকারীরা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে’- এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছ।”

রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর পর ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস স্বাধীনতার বিপক্ষশক্তি রাজাকার, আল বদর, আল শামসসহ যুদ্ধাপরাধে জড়িত সকলের পূর্ণাঙ্গ বিচারের দাবি জানান।

তিনি বলেন, “প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি, সাম্প্রদায়িক শক্তি, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি, বিভিন্ন সময়ে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং তারা এখনও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
“সুতরাং পরিপূর্ণভাবে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করার মাধ্যমে এই বাংলাদেশ থেকে আমরা তাদেরকে পরিপূর্ণভাবে নির্মূল করতে পারব।”

প্রধান যুদ্ধাপরাধীদের রায় কার্যকর হওয়ার কথা তুলে ধরে মেয়র বলেন, “কিন্তু যারা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে সে সকল রাজাকার, আলবদর, আলশামস এখনও সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় লুকিয়ে আছে।

“সুতরাং এই বিচার কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গ সম্পন্ন হয়নি। যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনাটাই এখন জাতির দাবি।”

অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবু-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, শাহাবুদ্দিন ফরাজী, সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, আনিসুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় উপস্থিত ছিলেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *