Main Menu

ধৈর্য্যটাই আমাকে আজকে এখানে নিয়ে এসেছে: সাফা কবির

বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা মডেল ও অভিনেত্রী সাফা কবির এখন দর্শকমহলে তুমুল জনপ্রিয়। সময়ের সঙ্গে নিজেকে বদলে যেন ছন্দে ফিরেছেন। সকল সমালোচনা পিছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছেন আপন মনে। এবার ঈদে অন্যান্য অনেক অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে নানামাত্রিক চরিত্রে হাজির হয়ে পাল্লা দিয়েছেন, হয়েছেন প্রশংসিত। ২৫টি নাটকের মধ্যে বেশিরভাগ নাটক থেকেই ভালো সাড়া পেয়েছেন। ঈদের পর কাজে ফিরেছেন ধারাবাহিক নাটক ‘হাউজ নং ৯৬’ দিয়ে। সম্প্রতি এক আড্ডায় কথা হয় তার সঙ্গে। সেই আলাপের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো…

এবার ঈদে খুব সম্ভবত ২৫টিরও বেশি কাজ গিয়েছে আপনার। কাজগুলো থেকে কেমন সাড়া পেয়েছেন? কোনগুলো থেকে বেশি সাড়া পেয়েছেন?

হ্যাঁ, এবার ঈদের আমার ২৫টির মতো কাজ প্রচারে এসেছে। শুনতে সংখ্যায় বেশি মনে হলেও আসলে কিন্তু সেরকম কিছু নয়। আর এখানের প্রায় ২১টি নাটকের কাজই আগে শেষ করা। ঈদের আগে মাত্র ৪টি কাজ করেছিলাম। অনেকগুলো কাজ থেকেই বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি। এরমধ্যে ঢাকাইয়া খানদান, সাত সতেরো, মিয়া বিবি রাজি, হয়তো তোমার জন্য; এই কাজগুলো থেকে অনেক বেশি সাড়া পেয়েছি আমি। আর বাকিগুলো এভারেজ। কারণ, এরমধ্যে এমন অনেক কাজ রয়েছে যেগুলো অনেক অনেক আগে করা। আমি খুব বেশি এক্সাইটেড চিরকাল, মনের মতো বাগান ও নাবিক নাটকগুলো নিয়ে। এরমধ্যে ‘মনের মতো বাগান’ প্রচারে এসেছে সম্প্রতি, বাকিগুলো আসেনি এখনও।

এত কাজের ভিড়ে কী মান ধরে রাখা সম্ভব হয়?

আমার মনে হয় সম্ভব। আবার কোনো শিল্পী যদি মাসের ত্রিশ দিনই শুটিং করেন তাহলে অনেক ক্ষেত্রে হয়তো সেটা সম্ভব হয়না। আমি এটাও বলবো যে, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক শিল্পী আছেন যারা তাদের সেরাটা দিয়ে কাজ করেন। আমার ক্ষেত্রে যদি বলি, আমি কখনোই টানা কাজ করতে পারিনা। একটু বিরতি নিয়ে কাজ করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এতে করে আমি গল্প এবং আমার চরিত্রগুলো নিয়ে একটু ডিটেলে ভাবতে পারি, নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারি। আর প্রতিদিন কাজ করে আমার পক্ষে কাজের মান ধরে রাখাটা সম্ভব না। বলতে পারে, এরজন্যই আমি একটু বিরতি নিয়ে কাজ করি।

নিজের কাজ ও অবস্থান নিয়ে কতটা তৃপ্ত?

এই জায়গাতে আমি বলবো, আমার কাজ নিয়ে আমি এখনো তৃপ্ত নই। কারণ, আমি এখনো প্রতিদিন আমার প্রত্যেকটা কাজ নিয়ে যুদ্ধ করছি। তারপর যখন সেই কাজটা দেখি সেখানে অনেক কিছুই ভুল খুঁজে পাই, তখন পরবর্তী কাজে সেই ভুলটা শুধরে নতুন কিছু করার চেষ্টা করি। আরও অনেক ভালো কিছু করার আছে, দেখি সামনে কি অপেক্ষা করছে আমার জন্য!

একটা বিতর্কিত সময় পার করে আবারও আপনমনে কাজ করে চলেছেন। এ সময়ের স্ট্রাগলটা সহজ ছিলো না নিশ্চয়। অভিজ্ঞতাটা জানতে চাই…

আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটা মানুষের জীবনেই উত্থান-পতন আসে, সেটা কাজের ক্ষেত্রে হোক কিংবা ব্যক্তিগত জীবনে। এটা সত্যি ইন্ডাস্ট্রিতে পড়ে গিয়ে উঠে দাঁড়ানো টা খুবই কঠিন। আমি অনেক ধৈর্য্যশীল ও ঠান্ডা মাথার মানুষ। এই গুণটা আমি আমার মায়ের কাছ থেকে পেয়েছি। আমি ছোটবেলা থেকেই আমার মাকে দেখেছি কীভাবে ধৈর্য্য ধারণ করে থাকতেন, ভালো কিছুর জন্য। আমি সেটাই করেছি। ধৈর্য্য ধারণ করেছি অনেক আর ভেবেছি আমি শুধু মনোযোগ দিয়ে আমার কাজটা করে যেতে চাই। নিজের কাজটা সৎভাবে আর মন দিয়ে করলে হয়তো অনেক ভালো কিছু জীবনে না আসলেও অন্তত খারাপ কিছু আসবে না। আমি বলবো আমার ধৈর্য্যটাই আমাকে আজকে এখানে নিয়ে এসেছে, হয়তো সামনে এগিয়ে যাবো। সামনে কি হবে জানিনা, তবে খারাপ কিছু না হোক অন্তত।

একটা স্ট্রাগল পিরিয়ড গিয়েছে আমার। এই দুঃসময়টা পার করা আমার জন্য খুবই কঠিন ছিলো। সেই সময়টাতে আমি মানুষ চিনতে পেরেছি, কারা আমার বন্ধু বা শুভাকাঙ্ক্ষী! আমার সেই বন্ধু এবং ভক্ত যারা আমাকে প্রতিটা মুহূর্তে সাপোর্ট করেছেন, তাদের প্রতি আমি অনেক বেশি কৃতজ্ঞ। আমার ভালো সময়ের পাশাপাপাশি খারাপ সময়টাতেও পাশে ছিলেন। তাদের জন্যই আমি আজকে এখানে আসতে পেরেছি, সাহস করে আবারো উঠে দাঁড়াতে পেরেছি। আমি চেষ্টা করবো আরও ভালো ভালো কাজ করার। যারা আমাকে বা আমার কাজ পছন্দ করেন না তাদের কাছে পছন্দের হয়ে উঠতে না পারি, এটলিস্ট অপছন্দের যেন না হই।

ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন কী কখনো?

শুরুর দিক থেকেই এই কথাটা আমি শুধু শুনেই এসেছি যে ইন্ডাস্ট্রিতে এমন কিছু হয়। সত্যি বলতে এই বিষয়ে আমার মেমোরি একদম ব্ল্যাঙ্ক, আমার এমন কোনো অভিজ্ঞতা নেই। কারও কাছ থেকে কখনো কোনো খারাপ কথা শুনিনি আমি।

ধারাবাহিক নাটক ‘হাউজ নং ৯৬’ এ যুক্ত হওয়া ও কাজটি সম্পর্কে জানতে চাই….

নাটকটি খুবই ভিন্নধর্মী গল্পে নির্মিত হচ্ছে এবং এখন বেশ দর্শকপ্রিয়। এটার বিষয়ে আমার সঙ্গে আগেই কথা হয়েছিলো পরিচালক হিমি ভাইয়ের সঙ্গে। উনি আমার ভীষণ প্রিয় একজন নির্মাতা। আর এই কাজটি করার পেছনে উদ্দেশ্য হচ্ছে, ফজলুর রহমান বাবু ভাইয়ের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করা। উনি আমারদের অনেক সিনিয়র এবং কিংবদন্তি অভিনয়শিল্পী। উনি আমাদের শিক্ষক, উনার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। সেই জায়গা থেকে কাজটির সঙ্গে যুক্ত হওয়া। আলহামদুলিল্লাহ শুটিংয়ে উনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। চমৎকার একজন মানুষ তিনি।

সমালোচনাকে কীভাবে দেখেন?

আমার কাছে মনে হয়, আপনি যদি কিছু হন তাহলে আপনাকে নিয়ে সমালোচনা হবেই। সমালোচনাকে আমি আসলে কোনোভাবেই দেখিনা। এখন ভালো বলবে, আবার খারাপ বলবে। খারাপটাকে ভুলে গিয়ে ভালোটাকে আঁকড়ে ধরে সামনে এগিয়ে যাওয়াটাকেই আমি বেটার মনে করি। বেঁচে থাকার উদ্দেশ্য কিন্তু একটাই, শান্তিপূর্ণভাবে থাকা। আমি খুবই পজেটিভ একটা মানুষ, শান্তিপূর্ণভাবে বেঁচে থাকতে চাই। তাই সবসময় পজেতিভ সাইডগুলোই দেখার চেষ্টা করি।

এখন সবাই ভিউয়ের প্রতি ঝুঁকছে। একটা প্রতিযোগিতা চলছে বলা যায়। কন্টেন্ট এর ক্ষেত্রে ভিউ কোনো ফ্যাক্ট বলে মনে করেন কি? এটার ব্যাখ্যা কীভাবে দিবেন…

এটাকে বলা যায় একটা নাম্বারিং। কার কত দর্শক বা ভিউ আছে, এখানে সেটা দেখা যায়। আমি বলবো, ইউটিউবটাই কিন্তু সব না। ঢাকার বাইরে অনেক জায়গা আছে যেখানে এখনো মানুষ শুধু টেলিভিশনই দেখেন। এখন হয়তো বা অনেকেই কাছেই স্মার্টফোন আছে, সেখানেই তারা নাটক দেখতে পারেন। কিন্তু এটার বাইরেও কিন্তু একটা বিশাল পরিমাণ দর্শক আছেন যেটা সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। তাদের কথাগুলো আমরা তখনই শুনতে পাই যখন আমরা গ্রামে গিয়ে শুটিং করি। এমন অনেক ভালো কাজ আছে যেগুলোর হয়তো তেমন ভালো ভিউজ নেই আবার এমনো অনেক কাজ যেগুলোর অনেক বেশি ভিউ সেগুলোর মান হয়তো এতোটা ভালো না। আমি আসলে ভিউ দিয়ে কাজের মান যাচাই করতে চাই না। এটা শুধুই একটা নাম্বার মাত্র।

বাংলাদেশ জার্নাল






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *