Main Menu

সিলেট নগরীর চৌহাট্টায় সংঘর্ষ : আহত ৮

সিলেট নগরীর চৌহাট্টাস্থ এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে ফুটপাত দখল করে গড়ে তুলা হয় অবৈধ স্ট্যান্ড। সিসিক ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার স্ট্যান্ড সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেয়া হলেও পরিবহন শ্রমিক নেতারা স্ট্যান্ড সরিয়ে নিতে অনিহা। এমনকি সিসিকের কাছে স্ট্যান্ডের জন্য তারা জায়গা দেয়ার দাবি জানালে সিসিক এতে সম্মতি দেয়। জায়গাও খোঁজতে শুরু করে সিসিক। শ্রমিকনেতারা আশ্বাস দেন সিসিকের কাজ শুরু হলেই তারা স্ট্যান্ড ছাড়বেন। সিসিক তাদের কথামত কাজ শুরু করে।

বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সিসিক যখন কাজ শুরু করে তখন কয়েকজন পরিবহন শ্রমিক যানবাহন সরিয়ে নিলেও এক শ্রমিক নেতার নির্দেশে তারা পূনরায় স্ট্যান্ডে গাড়ি রাখেন। প্রশাসন ও সিসিকের কাউন্সিলর তাদেরকে বুঝিয়েও স্ট্যান্ড ছাড়াতে পারেননি। একপর্যায়ে পরিবহন শ্রমিকরা হামলা চালায়। এসময় পুলিশের কয়েকজন সদস্য ও সিসিকের কয়েকজন কর্মী আহতহন।

আহতদের মধ্যে সিসিকের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, লাইসেন্স শাখার ফখরুল ইসলাম, পরিচ্ছন্ন শাখার সুপারভাইজর মিনহাজ আহমদ, ফয়েজ আহমদ, বিদ্যুৎ শাখার হেলপার নাজিম, পরিচ্ছন্ন শাখার লায়েস, শ্রমিক আতাবুর, ইভান প্রমুখ।

এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে পরিবহন শ্রমিক ফরসল আহমদ ফরহাদ গুলি করার প্রস্তুতি নিলে পুলিশ তাকে হাতেনাতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার করে। এসময় পুলিশ তার কাছ থেকে একনলা একটি বন্দুক উদ্ধার করে।

এদিকে সংঘর্ষের পর পরই ট্রাফিক পুলিশ অভিযান শুরু করে চৌহাট্টা এলাকায়। বুধবার দুপুর দেড়টা থেকে ট্রাফিক পুলিশ সংঘর্ষে ভাংচুরকৃত যানবাহন রেকার করা শুরু করে। রেকারকৃত যানবাহন পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়।

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, চৌহাট্টায় সিসিকের উন্নয়ন কাজ শুরু করার পূর্বে ফুটপাত দখল করে যারা স্ট্যান্ড করেছেন তাদের সাথে একাধিকবার বৈঠক হয়। তারা উন্নয়ন কাজের স্বার্থে স্ট্যান্ড ছাড়ার কথা দিয়ে ৩দিনের সময় নেয়। কিন্তু এই সময়ে মধ্যে তারা স্ট্যান্ড সরিয়ে নেয়নি। বরং শ্রমিকদের কাজ না করতে উল্টো হুমকি দেয়া হয়। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিসিকের কর্মীরা কাজ শুরু করতে গেলে পরিবহন শ্রমিকদের কয়েকজন তাদের যানবাহন সরিয়ে নিলে কাজ শুরু করে সিসিক। এরপর পরিবহন শ্রমিকদের একজন নেতা পূনরায় গাড়িগুলো স্ট্যান্ডে নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দিলে শ্রমিকরা গাড়ি নিয়ে আসে। সাথে সাথে বিষয়টি আমি পুলিশসহ প্রশাসনের উধর্বতন কর্মকর্তাদেরকে জানালে তারা ঘটনাস্থলে এসে পরিবহণ শ্রমিকদেরকে অবৈধ স্ট্যান্ড সম্পর্কে বুঝাতে শুরু করেন। খবর পেয়ে সিসিকের কয়েকজন কাউন্সিলর ঘটনাস্থলে গেলে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা শুরু করে। এসময় সিসিকের কয়েকজন শ্রমিক আহত হন।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। সংঘর্ষে পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও আগ্নেয়াস্ত্রসহ এক শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধঃ

সিলেট নগরীর চৌহাট্টায় সড়কের পাশের অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ নিয়ে সংঘর্ষের জের ধরে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ২ ঘন্টা অবরোধ করে রাখে মাইক্রোবাস শ্রমিকরা। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টার দিকে দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন চত্বর ও চন্ডিপুলে সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে তারা। এতে চরমে দুর্ভোগে পড়েন মানুষ।

তবে বিকাল ৪টার দিকে প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নেন শ্রমিকরা।

এর আগে বেলা ২টার দিকে শ্রমিকরা সিলেটের প্রবেশদ্বার চন্ডিপুল, হুমায়ুন রশিদ চত্বরসহ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। এতে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পণ্যবাহী, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ও বাসসহ আটকা পড়ে সব ধরনের যানবাহন।

বিক্ষোভকারী শ্রমিকদের দাবি, চৌহাট্টায় সিলেট সিটি করপোরেশনের শ্রমিকরা তাদের উপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এ ভাঙচুরের ক্ষতিপূরণ ও নির্দিষ্ট স্থানে তাদের স্ট্যান্ড করে দেওয়ার জন্যে এ আন্দোলন।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, নগরীর চৌহাট্টার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হুমায়ুন রশীদ চত্বর ও চন্ডিপুল এলাকায় মাইক্রোবাসের শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছেন। তবে শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে আমরা পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি। এখন গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *